প্রেমের সম্পর্কে মায়ের মিথ্যা ধর্ষণ মামলা


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:১৮ পূর্বাহ্ন, ১১ই অক্টোবর ২০২২


প্রেমের সম্পর্কে মায়ের মিথ্যা ধর্ষণ মামলা
ছবি: জনবাণী

প্রেমের সম্পর্ক বিষাধে পরিনত করতে মেয়ের প্রেমিকের বিরুদ্বে মিথ্যা সাজানো ধর্ষণ মামলা করেছে প্রেমিকার মা। মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের বাঘিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর ছাত্র সিয়াম ভুইয়া ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী রোখছানা ছদ্দ নামের সাথে প্রেমের সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। এরা দুজন প্রায় ১বছর ধরে দুজন দুজকে পছন্দ করে মন দেয়া নেয়া করে। 


দুজনের মধ্যে গত ১ বছরে প্রেমের সম্পর্ক গভীর হতে থাকে। দুজনের মধ্যে কথা হতে থাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারে। এরা দুজন মনের আনন্দে ঘুরে বেড়িয়েছে একাধিক স্থানে। এভাবেই চলছিল দুজনের প্রেমের সম্পর্ক। হঠাৎ এই প্রেমের সম্পর্ক বিষাধে পরিনত করেন প্রেমিকার মা।


জানা যায়,চলতি বছরের ১৬ই জুলাই বিকেল বেলা প্রেমিকা ( রোখছানা ছদ্দ নাম ) তার ব্যবহারকৃত  ফেসবুক আইডির ম্যাসেঞ্জার থেকে প্রেমিক সিয়াম ভুইয়ার ম্যাসেঞ্জারে ম্যাসেজ দিয়ে প্রেমিকার বাড়ির পূর্বপাশে দেখা করতে বলে। ওইদিন দুজনে দেখা করে বাড়ি ফেরার পর তাদের দুজনের প্রেমের সম্পর্ক জেনে যায় প্রেমিকার মা। এরপর প্রেমিকার মা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ১৬ই জুলাই বিকেলের প্রেমিক প্রেমিকার দেখা করার ঘটনাকে ধর্ষণ মামলায় পরিণত করেন। ১৬ই জুলাই প্রেমিকার ডাকে দেখা করার এক সপ্তাহ পরে ২২ জুলাই প্রেমিক সিয়াম ভুইয়াসহ ৩ জনকে আসামী করে মানিকগঞ্জ সদর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় মামলা করেন প্রেমিকার মা সাফিয়া বেগম।


মামলার এজাহারে উল্যেক্ষ করা হয়েছে ১৬ই জুলাই প্রেমিকা রোকছানা (ছদ্দ নাম) বিকেল বেলা তার বাড়ির পূর্বপাশে বান্দবী সুমাইয়ার বাড়িতে যায়। বান্দবী সুমাইয়ার বাড়ি থেকে ফেরার পথে আসামী সিয়াম তাকে পিছন থেকে মুখ চাপিয়ে ধরে মামলার ৩ নং আসমাী আকাশের বাড়ির উত্তর ভিটার পশ্চিমমুখী বসত ঘরের বারান্দায় বাদীর মেয়েকে ধর্ষণ করে সিয়াম। মামলার জব্দ তালিকায় দেখা যায়, বাদী সাফিয়া বেগম ও তার স্বামী সিরাজুল ইসলামের উপস্থাপনায় ঘটনার ১ সপ্তাহ পরে ঘটনাস্থল থেকে একটি পুরাতন লাল রঙের সালোয়ার জব্দ করা হয়েছে। ওই জব্দকৃত সালোয়ার ভিকটিমের পরনে ছিল বলে উল্যেক্ষ করা হয়।


সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মামলার বাদীর বাড়ির  পূর্বপাশে ৩ জন সুমাইয়া নামের লোক রয়েছে এবং ১৬ জুলাই ভিকটিম ৩ জন সুমাইয়া এদের একজনের বাড়িতে ওইদিন ভিকটিম যাননি। ভিকটিম নিজেই তার ফেসবুক আইডি থেকে সিয়ামের সাথে ম্যাসেঞ্জারে চ্যাটিং করে আসামী সিয়ামকে তার বাড়ির পূর্বপাশে দেখা করতে বলে। ভিকটিমের কথা অনুযায়ী আসামী সিয়াম তার সাথে দেখা করতে যায়। শুধু ওইদিন নয় ভিকটিম এবং আসামী পূর্বে থেকেই একে অপরের সাথে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়িয়েছে এবং তাদের মধ্যে মধুর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। তাদের একে অপরের সাথে রয়েছে রোমান্টিক প্রেমের ফটো। তাদের সাথে প্রতিনিয়তই কথা হতো ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারে। হঠাৎ এদের দুজনের প্রেমের পথে কাল হয়ে দাড়িয়েছে


মিথ্যা ধর্ষণ মামলা। অপরাধী না হয়েও জেল খেটেছে মামলার ২নং ও ৩নং আসামী। আর প্রেম করার দায়ে মিথ্যা ধর্ষণ মামলার মুল আসামী হিসেবে বাড়ি ছাড়া রয়েছে সিয়াম নামের স্কুল পড়–য়া ছাত্র।


অভিযুক্ত সিয়াম ভুইয়া জানান, বাদীনির মেয়ের সাথে ১ বছরের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। সেই সুবাদে ঘটনার ওইদিন তার প্রেমিকা রোকছানা (ছদ্দ নাম) তার নিজস্ব ফেসবুক আইডি থেকে সিয়ামকে জরুরী কথা বলার জন্য মামলার বাদীর বাড়ির পূর্বপাশে দেখা করতে বলে। প্রেমিকার কথা অনুযায়ী তিনি তার সাথে দেখা করতে যায়। 


এবিষয়ে মামলার বাদী সাফিয়া বেগম বেগম ( ৪৫) জানান, আমার মেয়ের সাথে আসামী সিয়ামের কোন সম্পর্ক ছিলো না। আসামী সিয়াম জোর করে তার মেয়েকে ধর্ষণ করেছে। আমি গরীব মানুষ আমি এর সঠিক উপযুক্ত বিচার চাই।


এব্যাপারে মানিকগঞ্জ সদর থানার উপ পরিদর্শক মামলা তদন্ত কর্মকর্তা মো: বাবুল মিয়া বলেন, মামলা তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। খুব শ্রীগ্রই মামলা ফাইনাল প্রতিবেদন আদালতে প্রেরণ করা হবে। 


আরএক্স/