করোনা মহামারিতে শিক্ষার্থীদের শিখণ ঘাটতি পূরণে করণীয়
জনবাণী ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬:৩৬ পূর্বাহ্ন, ১৫ই অক্টোবর ২০২২
মাহবুবা শিরীন: করোনার ভয়াবহতা গত দুই বছরে (২০২০-২১) সারা বিশ্ব বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে ক্ষতির সম্মুক্ষীন হয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থা। বিশ্বেও বিভিন্ন দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যায়ে সব ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটি চলমান থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে শিক্ষার্থীদের শিখণ-ঘাটতির সম্মুক্ষীন হতে হচ্ছে।
তবে কোভিড-১৯ আপাতত চলে যাবার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো খুলে দেয়া হয়েছে। শিক্ষাবিদরা বুঝতে পারছেন যে, গোটা বিশ্বেও শিক্ষা ব্যবস্থা যেন ধ্বংসস্তুুপের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসছে। আমাদেরও বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। শিক্ষার এই ক্ষতি প্রকৃতপক্ষেই সর্বগ্রাসী হয়ে পড়েছে। বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পঙ্গু হয়ে বন্ধ হয়েছে, অসংখ্য শিক্ষক নানাবিধ পেশায় যুক্ত হয়েছেন। সেই সাথে ঝরে পড়েছে অসংখ্য শিক্ষার্থী। প্রাথমিকে প্রায় সাড়ে ১৪ লক্ষ শিক্ষার্থী কমেছে বলে জানা যায় (প্রথম আলো: ১৬ মে ২০২২)। তারা হয়তো আর কোনো দিন শিক্ষাঙ্গনে ফিরতে পারবে না। এদের অনেকেই সংসারে হাল ধরার জন্য মা বাবার সাথে আয় রোজগারের কাজে নেমে পড়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে মেয়ে শিক্ষার্থীরা। অসংখ্য শিক্ষার্থী বাল্য বিবাহের শিকার হয়েছে। এমনকি আত্মহননের ঘটনাও ঘটিয়েছে বহু শিক্ষার্থী।
তবে বর্তমান শিক্ষার্থীদের জীবন আবার স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। কিন্তু তাদের শিখণে অপূরণীয় ঘাটতি দেখা দিচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত। এই চিত্র খুবই পরিষ্কার। যে শিক্ষার্থী ২০২০ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত ১ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিলো সে মোটামুটি জাম্প করেই বর্তমানে ৩য় শ্রেণিতে উঠে পড়েছে। এরকম প্রতিটি শ্রেণির শিক্ষার্থীর অবস্থা।
এ কলামে করোনায় শিক্ষার্থীদের কী কী শিখণ ঘাটতি দেখা দিচ্ছে তার একটি তালিকা তুলে ধরার পাশাপাশি সেসব ঘাটতি পূরণের জন্য কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
১. সর্বপ্রথম যে ঘাটতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে তা হলো-দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদেরও পঠন-শিখণ বা পড়ালেখায় অনীহা সৃষ্টি হয়েছে: এতো ভয়াবহ মহামারি পরিস্থিতিতে এমনটি হতেই পারে। কিন্তু এর থেকে পরিত্রাণের জন্য রিমেডিয়াল পরিকল্পনা করা অপরিহার্য। শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে পাঠের অনুশীলনীগুলো করতে হবে। শ্রেণিকক্ষ কেন্দ্রিক পাঠদানের এবং বাড়িতে অভিভাবকদের সহায়তায় শিক্ষার্থীর কাজের পরিকল্পনা থাকবে। এক্ষেত্রে বিদ্যালয় ও বাড়িতে শেখার বিষয়সমুহ নির্ধারণ করা এবং সেই অনুযায়ী সুনির্দ্দিষ্ট পরিকল্পনা জরুরি ভিত্তিতে প্রণয়ন প্রয়োজন।
২. বাংলা বিষয় পাঠর ক্ষেত্রে ভাষা দক্ষতাকে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। প্রাপ্ত সময়ের ভিত্তিতে নির্বাচিত পাঠের বাইরে থাকা অত্যাবশ্যকীয় ভাষা দক্ষতা গুলো (যেমন: যুক্তবর্ণ, ব্যাকরণ উত্যাদি) সমন্ময় করে একটি রিমেডিয়াল পরিকল্পনা প্রণয়নে গুরুত্ব প্রদান।
৩. শিক্ষার্থীদের বয়স অনুপাতে বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নয়নে অসামঞ্জস্য দেখা দিচ্ছে: এ ক্ষতিটা হয়েছে বিশেষ করে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক পর্যায়ের শিশুদের। কারণ এ সময়টাতেই শিশুদের শিখণ ক্ষমতা সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় বিষয়ভিত্তিক মৌলিক পাঠগুলো বিশেষ করে আগের বা পিছনের দুই শ্রেণির ইংরেজী, গণিত মৌলিক বিষয়ে ধারণা দিতে পারলে এই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে। করোনা প্রকোপ পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীদের মনোসামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে বিদ্যালয়ের পাঠকে আনন্দদায়ক করতে শিশুতোষ পঠন কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহনের ব্যবস্থা রাখা।
৪. শিক্ষার্থীদের মাঝে পরীক্ষাভীতির সৃষ্টি হয়েছে:দীর্ঘদিন পরীক্ষা না দিয়ে বা অনলাইনের পরীক্ষায় অভ্যস্ত হওয়ায় শারীরিকভাবে উপস্থিত থেকে পরীক্ষা প্রদানের প্রতি একটি ভীতি জন্মেছে। এর প্রতিকারের জন্য প্রাথমিকভাবে শ্রেণিকক্ষে সংক্ষিপ্ত ও স্মার্ট সিলেবাস দিয়ে তা ভালোভাবে আয়ত্ত করানোর পর পরীক্ষা এবং অধ্যায় শেষে পরীক্ষা গ্রহণ করলে এই পরীক্ষাভীতি অনেকটাই দূর হয়ে যাবে।
৫. শিক্ষার্থীদের শেণিকক্ষে নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিদ্যালয়মূখী করতে প্রচারণা চালানো। অভিবাবক সমাবেশ, মা সমাবেশ, হোম ভিজিট, মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ ইত্যাদি কার্যক্রমের মাধ্যমে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের পূণরায় বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ গ্রহন করা। ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনার জন্য জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করা।
৬. করোনাকালে অ্যাসাইনমেন্ট করা বা অনলাইনে হোমওয়ার্ক করায় শিক্ষার্থীদের মাঝে দেখে দেখে লেখার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই দূর্বলতা দূরীকরণে ছোট ছোট প্যারাগ্রাফ, নচনা, ভাবসম্প্রসারণ ইত্যাদি বিষয় প্রতিযোগিতামূলকভাবে শ্রেণিকক্ষে অনুশীলন করালে এই কপি করার প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে।
৭. অপেক্ষাকৃত জটিল বিষয় বুঝতে ভীতির সৃষ্টি হয়েছে: এ জন্য শিখণের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে শিক্ষার্থীদের প্রথমে সহজ ও পরে অপেক্ষাকৃত কঠিন বিষয়ে পাঠ দান করলে তাদের মাঝে কঠিন বিষয় বুঝার ব্যাপারে আস্থা ফিরে আসবে। এছাড়া কোনো বিষয় বুঝতে না পারলে তিরষ্কার না করে বরং কোমলতার সাথে আদর-স্নেহ করে বুঝাতে হবে প্রতিটি ক্ষেত্রে। আর পাঠ্য অধ্যায় শুরুর আগে শিক্ষার্থীদের বিষয়জ্ঞান যাচাই করে তাদের পূর্ব ধারণা পরিষ্কার করে নিতে হবে।
৮. দীর্ঘদিন পড়াশুনায় অনভ্যস্ত হয়ে পড়ার কারণে শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রয়োজনীয় পাঠ আয়ত্ত করার অনীহা সৃষ্টি হয়েছে। গাঠনিক মূল্যায়নের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীকে প্রদত্ত কাজ সম্পাদনে উৎসাহ প্রদান এবং যথাযথ ফিডব্যাক প্রদানের মাধ্যমে প্রত্যাশিত শিখণফল অর্জনে সহায়তা করতে সচেষ্ট থাকা। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য শিক্ষার্থীদের ছোট ছোট প্রশ্নোত্তর মুখস্থ করিয়ে তাদের মাঝে প্রতিযোগিতা এবং পুরষ্কার ও প্রশংসার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এ বিষয়ে সারপ্রাইজ টেস্ট বা স্পট টেস্টের প্রচলন ফলদায়ক হতে পারে।
৯. অনেকের মধ্যে শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত থাকতে অনিচ্ছা পরিলক্ষিত হচ্ছে: শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কক্ষে উপস্থিত থাকা নিশ্চিত করতে হলে শ্রেণি কক্ষটাকে আকর্ষনীয় করে তুলতে হবে। শ্রেণিভিত্তিক ইনডোর কম্পিটিশন, শিক্ষণীয় গল্প বলা ও বলানো, দলগত কাজ দেয়া এবং আদর্শ শিক্ষামূলক শর্টফিল্ম প্রদর্শনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারলে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে আনন্দের সাথে উপস্থিত থাকতে আগ্রহাম্বিত হবে। শিক্ষার্থী, অভিবাবক, এসএমসি এবং স্থানীয় প্রতিনিধিসহ বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে যোগাযোগ করা এবং সচেতনতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগ নেওয়া।
১০.শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশের মাঝে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে হতাশা পরিলক্ষিত হয়: এই হতাশা কাটিয়ে উঠার জন্য নানামুখী কার্যক্রম গ্রহন করা যেতে পারে। সহশিক্ষা কার্যক্রম জোরদার করা, শ্রেণিকক্ষে তাদের সাথে কোমল আচরণ করা ও ছোটখাটো কাজে প্রশংসা করার প্রক্রিয়া তাদের হতাশা কাটাতে সাহায্য করবে। পঠনের পাশাপাশি বিভিন্ন ক্লাব কার্যক্রম চালানো যেতে পারে। এছাড়া প্রতি দুই তিন মাস অন্তর অভিবাবক দিবস উদযাপন করে শিক্ষকদের সাথে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মত বিনিময় করার আয়োজন এবং শ্রেণিভিত্তিক গরীব এবং দুস্থদের সাহায্য করার কর্মসূচি গ্রহণ করলে শিক্ষার্থীদের হতাশা অনেকাংশে কমে যেতে পারে।
১১. মহামারির সময় আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের বৃহৎ অংশ অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম থেকে পুরোপুরিই বঞ্চিত ছিলো: শিক্ষাঙ্গনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই অংশটি। তাদের চিহ্নিত করে আলাদাভাবে অতিরিক্ত পাঠদানের মাধ্যমে অগ্রসর করে নিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে তাদের ইংরেজী, গণিত এবং বিজ্জানের মৌলিক পাঠনের ব্যবস্থা করে পেছনে বাদ পড়া পাঠ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
১২. তাদের বেশির ভাগেরই হাতের লেখা খুবই অসুন্দর ও ধীরগতি সম্পন্ন হয়ে পড়েছে: এ জন্য তাদের মধ্যে হাতে লেখার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা দরকার। তাছাড়া হ্যান্ড রাইটিং ক্লাব পরিচালনা ও বাড়ির কাজে হাতের লেখা অর্ন্তভুক্ত করলে দ্রুতই শিক্ষার্থীদের হাতের লেখার উন্নয়ন ঘটবে বলে আশা করা যায়।
১৩. গণিত, ইংরেজী এবং বিজ্জান বিষয়ে উদ্বেগজনক দূর্বলতা ঘটেছে শিক্ষার্থীদের। অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর দূর্বলতা বা ঘাটতি পূরণ করতে হবে।
১৪. সৃজনশীল লেখায় দূর্বলতা সৃষ্টি হয়েছে: এ জন্য পঠিত অধ্যায়ের সৃজনশীল প্রশ্ন তৈরি করে তার উত্তর লেখার পদ্ধতি শেখানো এবং বারবার অনুশীলন করার ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। ভালো লিখতে পারলে একটু প্রেইজ করা, একটি চকলেট উপহার দেয়া ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর লেখায় আগ্রহ বাড়তে পারে।
১৫. পুরো সিলেবাস কিভাবে শেষ হবে করবে তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে অনেকের মাঝে ভীতির সৃষ্টি হয়েছে: এ ব্যাপারে সংক্ষিপ্ত ও স্মার্ট সিলেবাস দিয়ে পড়ার জন্য যথেষ্ট পরিমান সময় দিয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা নিতে হবে। এভাবে পুরো সিলেবাসকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে পঠন-শিখণে নিলে এই সিলেবাসভীতি দূরীকরণ সম্ভব হবে।
১৬. করোনা শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় যে ক্ষতি হয়েছে তা হলো তাদের মৌলিক বিষয়ে জ্জানে দূর্বলতা সৃষ্টি হওয়া: গত দুই বছর কোনো রকম পড়ালেখা না করে বা অল্পবিস্তর পড়া সম্পন্ন করেই পরপর দুই শ্রেণি অতিক্রম করে বর্তমান শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়ে উঠে এসেছে। ফলে তাদের প্রতিটি পঠন বিষয়ে মৌলিক জ্জানে দূর্বলতা রয়ে গেছে। এ জন্য প্রথমেই ছোট আকারে পরীক্ষা নিয়ে দূর্বল শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করে ফেলতে হবে। এরপর বিষয় ভিত্তিক মৌলিক শিখণের পাঠ বেছে আলাদা করে তাদের বুঝিয়ে দিতে হবে। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে শিট তৈরি করে বিতরণ করে দিতে হবে। আর অভিভাবকদের সাথে সমন্ময় করে মৌলিক পাঠগুলো শিখণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
১৭. কোভিড পরিস্থিতির কারণে অনেকেরই শিখণ ক্ষমতা ধীর গতি সম্পন্ন হয়ে পড়েছে: এ অবস্থা উতরানোর জন্য শ্রেণিকক্ষে পাঠসূচির শিখণ বিষয়ে ভালোভাবে বুঝিয়ে পড়ানোর পর পরীক্ষা নিয়ে পুরষ্কার দেয়া এবং প্রশংসা করার মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করা যেতে পারে। সেই সাথে সবল শিক্ষার্থীকেই দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে দূর্বলদের শিখণে সহযোগিতা করার জন্য।
১৮. দীর্ঘদিন পর শিক্ষার্থীরা শেণিকক্ষে আসায় এখানে বেশিক্ষণ থাকতে অনীহা প্রকাশ করছে: কাজেই শেণিকক্ষে তাদেরও বেশিক্ষণ থাকার অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য ক্লাস পিরিয়ডের ছোট্ট একটি অংশে গল্প বলা বা বলানো এবং হালকা ইনডোর প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যেতে পারে।
শিক্ষার্থীদের করোনায় সৃষ্ট দূর্বলতাগুলো কাটিয়ে উঠার জন্য উপরের কিছু গাইডলাইন শিক্ষকদের চিন্তার খোরাক হিসেবে উপস্থাপন করা হলো। তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের নিজস্ব আর্ট বা শৈল্পিক পদ্ধতি খুবই কার্যকর হবে শিক্ষার্থীদের উন্নয়নের জন্য। কারণ তারাই শেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করছেন। কাজেই তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতালব্ধ কৌশলই হবে সবচেয়ে বেশি ফলপ্রসু। আসলে করো মহামারির কারণে শিক্ষাঙ্গনের ক্ষয়ক্ষতি পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা খুবই দুরুহ এবং অনেক সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তবে শিক্ষকরা যদি সেলফ মোটিভেটেড হয়ে নিজ উদ্যোগে এগিয়ে আসেন তা হলে তারা নিজ নিজ শেণির শিক্ষার্থীদের ঘাটতিগুলো অনেকাংশেই পূরণ করতে সক্ষম হবেন।
এ জন্য প্রয়োজন ডেডিকেশন, কমিটমেন্ট, আন্তরিকতা ও কঠোর পরিশ্রম। আমাদের দেশের শিক্ষক সমাজের সেই আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা রয়েছে। তবে তাদেরকে এ বিষয়ে সঠিকভাবে মেন্টরিং ও প্রশিক্ষিত করে তুলতে পারলে তারা অবশ্যই জাতিকে এই ক্রান্তিকাল থেকে তুলে এনে উজ্জল ভবিষ্যৎ দেখাতে সক্ষম হবেন বলে বিশ্বাস করি।
জেবি/ আরএইচ