আবারও নিখোঁজ মরিয়ম মান্নানের মা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:৪১ পূর্বাহ্ন, ১৮ই অক্টোবর ২০২২


আবারও নিখোঁজ মরিয়ম মান্নানের মা
ছবি: সংগৃহীত

খুলনা থেকে আত্মগোপনে যাওয়ার পর উদ্ধার হওয়া রহিমা বেগম আবারও বাড়ি ছেড়েছেন। তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


অন্যদিকে রহিমা এর আগের বার নিজেই অপহরণের নাটক সাজান দাবি করে জবানবন্দি দিয়েছেন তার ছেলে মোহাম্মদ মিরাজ আল শাদী।


খুলনা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কার্যালয়ে সোমবার দুপুর ১২টার দিকে গিয়ে মায়ের বিরুদ্ধে জবানবন্দি দেয়ার আগ্রহ জানান মিরাজ। পরে পুলিশ তাকে আদালতে নিয়ে যায়।


খুলনা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মায়ের বিচার চেয়ে আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেবেন মিরাজ। তিনি বলেছেন, রহিমা বেগম বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে থেকে মিথ্যা কথা বলেছিলেন। এটা তার ইগোতে লেগেছে। এ জন্য তিনি স্বেচ্ছায় মায়ের বিচার চেয়ে আদালতে জবানবন্দি দিতে চেয়েছেন।


এদিকে রহিমা বেগম দুদিন আগে মেয়েদের বাড়ি ছেড়ে অজ্ঞাত স্থানে চলে গেছেন। তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান সোমবার বিকেলে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানান।


তবে রহিমার অন্য সন্তানেরা বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কোনো তথ্য দিতে রাজি হননি। পুলিশের পক্ষ থেকেও কোনো পরিষ্কার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।


বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে খুলনা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘আদালত রহিমাকে আমাদের জিম্মায় দেয়নি। তাই তিনি কোথায় আছেন, সেটি আমাদের দেখার বিষয় না। আদালত তাকে তার মেয়ে আদুরীর জিম্মায় দিয়েছিল। তাই তিনি এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।’


আদুরী আক্তারের কাছে তার মায়ের অবস্থান জানতে চাইলে তিনি সরাসরি কোনো জবাব দেননি। আদুরী পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘এসব আপনাদের কেন বলব?’


রহিমার ছেলে মিরাজ বলেন, ‘মা বোনদের কাছে আছে, নাকি অন্য কোথাও আছে জানি না। সে যদি কোথাও চলে যায় তো যাক। সে মারা গেলেও আমি তাকে খুঁজব না।’


এর আগে গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রাম থেকে রহিমা বেগমকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশের একটি দল রাত ২টার দিকে রহিমা বেগমকে নিয়ে খুলনার দৌলতপুর থানায় পৌঁছায়।


পুলিশ জানায়, রহিমা বেগমের খুলনার বাড়িতে বেশ কয়েক বছর আগে কুদ্দুস মোল্লা নামের এক ব্যক্তি ভাড়া থাকতেন। তার বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুরে। ওই বাড়িতেই রহিমা বেগম আত্মগোপনে ছিলেন।


এর একদিন আগেই ময়মনসিংহে ১২ দিন আগে উদ্ধার করা একটি মরদেহকে মায়ের বলে দাবি করেন মরিয়ম মান্নানসহ রহিমা বেগমের তিন মেয়ে।


গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে রহিমা নিখোঁজ হন বলে অভিযোগ করে তার পরিবার। রাত সোয়া ২টার দিকে দৌলতপুর থানায় অপহরণের অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন রহিমার ছেলে মিরাজ আল সাদী।


সে জিডি থেকে জানা যায়, নিখোঁজের সময় রহিমার দ্বিতীয় স্বামী বেল্লাল হাওলাদার বাড়িতে ছিলেন। পানি আনতে বাসা থেকে নিচে নেমেছিলেন রহিমা। দীর্ঘ সময় পরও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি।

মাকে পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে ২৮ আগস্ট দৌলতপুর থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন রহিমার মেয়ে আদুরী।


রহিমা অপহৃত হয়েছেন দাবি করে ১ সেপ্টেম্বর খুলনায় সংবাদ সম্মেলন করেন পরিবারের সদস্যরা।


রহিমার সঙ্গে জমি নিয়ে স্থানীয় লোকজনের মামলা চলছে বলেও সে সময় জানানো হয়েছিল। রহিমার করা সেই মামলায় আসামিরা হলেন প্রতিবেশী মঈন উদ্দিন, গোলাম কিবরিয়া, রফিুকল ইসলাম পলাশ, মোহাম্মাদ জুয়েল ও হেলাল শরীফ।

আদালত ১৪ সেপ্টেম্বর রহিমা অপহরণ মামলা পিবিআইতে পাঠানোর আদেশ দেয়। এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর নথিপত্র বুঝে নেয় পিবিআই।

জেবি/ আরএইচ/