‘এসি ব্যবহারে নীতিমালা প্রয়োজন’


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬:৩৩ পূর্বাহ্ন, ২২শে অক্টোবর ২০২২


‘এসি ব্যবহারে নীতিমালা প্রয়োজন’
ফাইল ছবি

টেকসই নগর গড়তে ও বিদ্যমান বিদ্যুৎ সংকট কমাতে এসি ব্যবহারের চাহিদা ব্যবস্থাপনা ও নীতিমালা প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন আইপিডি পরিকল্পনা সংলাপে যুক্ত হওয়া বিশেষজ্ঞরা। 


আজ শুক্রবার (২১ অক্টোবর) ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) ভার্চুয়ালি আয়োজিত ‘ভবনে এসি ব্যবহারজনিত বিদ্যুৎ চাহিদা ও নগরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি : টেকসই ভবন ও শহর বিনির্মাণে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ মত দেন তারা। 


বক্তারা বলেন, ঢাকা মহানগরীসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন নগর এলাকায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র তথা এসির ব্যবহার লাগামহীনভাবে বাড়ছে, যা নগর এলাকার তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত। আবার নগর এলাকার তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য মানুষ আবাসিক ভবনসহ বাণিজ্যিক, শিল্প-কারখানা, প্রাতিষ্ঠানিক ভবনসমূহে এসির ব্যবহার আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। এসি ব্যবহারের এই অচ্ছেদ্য চক্রের কারণে বিদ্যুৎ চাহিদার উপর চাপ পড়ছে মাত্রাতিরিক্তভাবে, যা সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সরকারকে; আর ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ।


পরিকল্পনাবিদ ড.আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রয়োজনে এসির ব্যবহার বেড়েই চলেছে যা নগর তাপ দ্বীপ তৈরি করছে এবং পরিবেশের ক্ষতি করছে। অথচ কার্যকর নগর পরিকল্পনা, ইমারত বিধিমালা এবং এসি ব্যবহারের সঠিক নীতিমালা থাকলে এসির ব্যবহার কমানোর পাশাপাশি বিদ্যুৎ এর উপর চাপ বহুলাংশে কমানো যেত। শুধু ঢাকা শহরেই প্রতি বছর এসির ব্যবহার ২০ শতাংশ হারে বাড়ছে এবং সারা দেশের ব্যবহৃত এসির সিংহভাগই ঢাকা শহরে ব্যবহৃত হচ্ছে। 


পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বলেন, এসি ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার মনস্তাত্ত্বিক কারণগুলো অনুসন্ধান করে এসির ব্যবহার কমানোর ব্যাপারে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ প্রয়োজন। সারা বিশ্বেই এসি ব্যবহারের কারণে বিদ্যুৎ চাহিদা ক্রমাগত বেড়েই চলছে। 


রাজউকের নগর পরিকল্পনাবিদ এবং ড্যাপ পরিচালক বলেন, নগর এলাকায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্লটের মধ্যে যে উঁচু ভবনগুলো নির্মিত হচ্ছে, সেখানে আলো-বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা না থাকাতে মানুষ এসি ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে। ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় প্রস্তাবিত ব্লক ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে উন্মুক্ত স্থান ও ভবনে আলো বাতাসের প্রবাহ বাড়িয়ে দিয়ে এসির ব্যবহার হ্রাস করে বিদ্যুতের উপর চাপ কমানো সম্ভব।   


সংলাপে অংশ নিয়ে স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, এসির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারে বিদ্যুৎ সংকট প্রকটতর হচ্ছে, অথচ দেশে কৃষি কাজের জন্য বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। এসির নিরবচ্ছিন্ন ব্যবহার নিশ্চিত করতে অনেকেই তেল নির্ভর জেনারেটর চালাচ্ছেন, যা শব্দ দূষণ-বায়ু দূষণ করার মাধ্যমে সামগ্রিক পরিবেশ দূষণের কারণ।


নগর সংলাপে আরও যুক্ত ছিলেন ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের পরিচালক পরিকল্পনাবিদ ড. চৌধুরী মো. জাবের সাদেক, আর্কিট্রেভ ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের পরিচালক প্রকৌশলী জামিল আহমেদ চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ফরহাদুর রেজা প্রমুখ।

জেবি/ আরএইচ/