ডেঙ্গু মোকাবিলায় জনগনের অংশগ্রহণে সফলতা আসবে: এলজিআরডি মন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩:০৬ পূর্বাহ্ন, ৩১শে অক্টোবর ২০২২
এলজিআরডি মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ডেঙ্গুসহ অন্যান্য মশাবাহিত রোগ মোকাবিলায় সরকারের সাথে জনগনের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি জনসচেতনতাও বাড়াতে হবে বলেও তাগিদ দিয়েছেন মন্ত্রী ।
রবিবার (৩০ অক্টোবর)মন্ত্রণালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সারাদেশে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধ বিষয়ক ২০২২ সালের ৫ম আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা জানান।
মন্ত্রী বলেছেন, সাধারণ জনগনকে ডেঙ্গু মোকাবিলায় সম্পৃক্ত করতে হবে। সকলস্তরের মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য দায়িত্বশীল সবার যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে।
এশিয়ার সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিইয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন ও ভারতসহ অন্যান্য দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতির সর্বশেষ তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এসব দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কম বলে উল্লেখ করেন।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের উত্তরে সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরে মো. তাজুল ইসলাম জানান, এবছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে ২৮ হাজার ১৯৬, ইন্দোনেশিয়ায় ৯৪ হাজার ৩৫৫, মালয়েশিয়ায় ৩৭ হাজার ৯৫০, ফিলিপাইনে ১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৬৫০ এবং ভারতে ৬৩ হাজার ২৮০ জন মানুষ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে। আর বাংলাদেশে এবছরের জানুয়ারি থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত ৩৩ হাজার ৯২৩ জন রোগী আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। দেশগুলোর তুলনায় আমাদের দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কম হলেও সেটি বেদনাদায়ক। তুলনা দেওয়ার কারণ এদেশগুলো আমাদের মতোই ট্রপিক্যাল দেশ।
মন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সাল থেকে আমরা ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছি। ২০২০ সালে এসে সেই সফলতা দেখাতে সক্ষম হয়েছি। তবে ২০২২ সালে এসে আবার পরিস্থিতির অবনতি লক্ষ্য করছি। যদিও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে পরিস্থিতি এখনো অনেক খারাপ।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, এই বছর আগের তুলনায় আবহাওয়ার ভিন্নতা দেখা যাচ্ছে। এখন থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ার ফলে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি হচ্ছে। অন্য বছরে এসময়ে ডেঙ্গু তুলনামূলক এতো বেশি থাকে না। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্যই ডেঙ্গুর পরিস্থিতি এসময় আগের তুলনার বেশি।
মন্ত্রী বলেন, দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে সবধরনের প্রোগ্রাম নিয়েছেন। মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ, জনবল, অভিযান পরিচালনার জন্য ম্যাজিস্ট্রেটসহ যখন যা চেয়েছেন তখন তাই দেয়া হয়েছে। মানুষকে সচেতন করার জন্য যা যা করণীয় তার সব করা হয়েছে। যার সুফল হিসেবে আমরা আজ একটি ইতিবাচক জায়গায় পৌছেছি।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান ডেঙ্গু বিরোধী মোবাইল কোর্টের অভিযানে ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশন বিগত ৪ মাসে ১৬৩ টি মামলায় ১২ লক্ষ ২১ হাজার ৫০০ টাকা ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১৩৯ টি মমলায় ৫৭ লক্ষ ৭৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকা মহানগরীতে বসবাসরত মানুষদের একটি বাসযোগ্য ও দৃষ্টিনন্দন শহর উপহার দিতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। রাজধানীসহ দেশের মানুষ সুখে-শান্তিতে বসবাস করুক এটাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল লক্ষ্য।
সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিনসহ স্থানীয় সরকার বিভাগ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর/সংস্থা ও সিটি কর্পোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
আরএক্স/