শত বছরের পুরাতন মহেশ্বরী দীঘি পুনরুদ্ধার


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:৪২ পূর্বাহ্ন, ১০ই নভেম্বর ২০২২


শত বছরের পুরাতন মহেশ্বরী দীঘি পুনরুদ্ধার
ছবি: জনবাণী

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার দুইশত বছরের পুরাতন মহেশ্বরী দীঘিটি অবৈধ দখলদারদের থেকে পুনরুদ্ধার করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।


শহরের ৫নং ওয়ার্ডের মধ্যপাড়া মহল্লার মহেশ্বরী দেবীর বিশালাকৃতির দীঘিটি নামে বেনামে দীর্ঘ বছর যাবৎ দখল হয়ে আছে। এসব নিয়ে দখলদারদের সাথে এলাবাসী ও পৌর কর্তৃপক্ষের ত্রিমূখী মামলা তৈরি হলেও পাড়বাসীদের সাথে দখলদারদের দীর্ঘ বছরের হামলা মামলা চলতে থাকে। দীর্ঘদিনের অবৈধ দখলে থাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা তাদের সম্পত্তি মহেশ্বরী দীঘিটি নিজ দখলে নিতে গত ২৭ জুলাই মহেশ্বরী দীঘি পরিদর্শন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আ. কুদদুসসহ পৌর কর্তৃপক্ষের একটি দল। 


দীঘির সীমানা নির্ধারণ করে সীমানা পিলার স্থাপন, ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার, চারপাশে পায়ে হাঁটার রাস্তা, বসার বেঞ্চ, বৃক্ষরোপণসহ পুকুরটি পাড়বাসিদের ব্যবহারের উপযোগী করার লক্ষ্যে উপস্থিত হন। পুকুরটির উত্তর-পশ্চিমাংশের সাড়ে বার শতাংশ জায়গা এখনো বেদখল রয়েছে যা পৌর কর্তৃপক্ষ দখলে নিতে হিমশিম খাচ্ছে। অন্যদিকে দীঘির পাড়টি দখল করে ইট, বালু, সুরকি রেখে কেনা বেচা করা হতো।


সরেজমিনে দেখা যায়, দীঘির উত্তরাংশে কাটা তারের বেড়া দিয়ে মোট ৯টি বেঞ্চ বসানো হয়েছে, দীঘির চারপাশে ফুল, ফল ও ঔষধি গাছের দুইশতো গাছ লাগানো হয়েছে, দীঘিতে প্রবেশ পথে মহেশ্বরী দীঘি নামে ফটক নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে, দীঘির চারপাশে হাঁটার জন্য উন্নতমানের ইট বসানো হচ্ছে। রিটার্নিং দেয়াল নির্মাণ করা ও পাকা ঘাট নির্মাণেরও পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা যায়।


মহেশ্বরী দীঘির পাড়বাসিন্দা মো. শেকুল ইসলাম জানান, প্রভাবশালী মহলের লোকেরা দীঘিটি দখল নেয়ার জন্য এখানে ঘর নির্মাণ করেছিল এবং বেড়াও দিয়েছিল। আমরা পাড়বাসিন্দা এক হয়ে সেদিন তা প্রতিহত করেছিলাম। তারই ধারাবাহিকতায় পৌর কর্তৃপক্ষ যখন মহেশ্বরী দীঘি দখলে নিতে আসেন তখন আমরা সেদিনের সেই দখলদারদের মত মনে করেছিলাম। তাই আমরা প্রথমে তাদের আসাটা ভালভাবে নিতে পারিনি। পরবর্তীতে যখন চারপাশের সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ শুরু করেছে তখন বুঝতে পেরেছি পৌর কর্তৃপক্ষ আমাদের দীঘিটি রক্ষা করার জন্য এসেছে। 


ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কাউছার আহমেদ বলেন, মহেশ্বরী দীঘির দখল রোধ করতে জরুরি ভিত্তিতে পৌর পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা কাজটি শুরু করেছি। শুধুমাত্র প্রাথমিকভাবে দখলরোধ করতে আমরা ছয় লক্ষ টাকা ব্যয় করেছি যা পিপিএ ২০০৬ এবং পিপিআর ২০০৮ আইন রিকোয়েস্ট ফর কোটেশন অনুস্মরণের ক্ষেত্রে কোনোরূপ ব্যত্যয় ঘটেনি।


ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আ. কুদদুস দৈনিক জনবাণীকে জানান, মহেশ্বরীদিঘির দখল মুক্ত হওয়া ভূমি জরুরি ভিত্তিতে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গাছ লাগানো, বসার ব্যাঞ্চি, ওয়াকওয়ে, সেফটি গেট নির্মাণ কাজে পিপিআর -২০০৮ অনুস্মরণ করা হয়েছে। পৌরসভার নিজস্ব ফান্ড থেকে এ কাজটি শুরু করা হয়েছে। এখানে কোনো অনিয়ম করা হয়নি। 


বিষয়টি নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র নায়ার কবিরকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে তাকে পাওয়া যায়নি।

জেবি/ আরএইচ/