শিক্ষার্থী না হয়েও স্টুডেন্ট আইডি ব্যবহারের অভিযোগ


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১০:৩২ অপরাহ্ন, ১২ই নভেম্বর ২০২২


শিক্ষার্থী না হয়েও স্টুডেন্ট আইডি ব্যবহারের অভিযোগ
ফাইল ছবি

একজনের স্টুডেন্ট আইডি ব্যবহার করে আরেকজন সামাজিক-সাংস্কৃতিক এবং ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছেন। এমন অভিযোগ করেছেন দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের এক শিক্ষার্থী। 


বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দেয়া লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, কৃষি অনুষদের ১৯ ব্যাচের মো. মাফিজুর রহমান যার আইডি-১৯০১৩১৯ ব্যবহার করে অন্য একজন বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছেন যাতে করে অভিযুক্তের ছাত্রত্ব নিয়েও তৈরী হয়েছে ধোঁয়াশা। এবিষয়ে তদন্ত চলমান বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত রাফি ১৯ তম ব্যাচের কৃষি অনুষদের আইডি-১৯০১৩১৯ পরিচয় ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করে আসছেন।


সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে আয়োজিত ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় কৃষি অনুষদ। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীও দ্বৈত টিমের সদস্য ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহকারী প্রক্টর, কৃষি অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকদের সাথেও সেসব ছবি তুলে ফেইসবুকেও দিয়েছে সে। 


অভিযোগকারী মাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি এতোদিন কিছু না জানলেও সম্প্রতি আঃন্ত:হল ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় রেজিস্ট্রেশনে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে সন্দেহ হলে অনুসরণ করে আমার ব্যাচের এক বন্ধু। এরপর সে দেখতে পায় স্টুডেন্ট আইডির স্থানে সে আমার আইডি ব্যবহার করছে এবং নামের যায়গায় লিখেছে রাফি। বিষয়টি জানার পর আমি সেই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আমার আইডি নাম্বারের অপব্যবহার করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও এডভাইজর শাখায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। 


মাফিজুর রহমান শঙ্কিত হয়ে আরো বলেন, আমি জানিনা সে আমার আইডি ব্যবহার করে আরও কোথায় কি করেছে। বিষয়টি নিয়ে আমি শঙ্কায় আছি।


এ বিষয়ে কৃষি অনুষদের ২০১৯ শিক্ষাবর্ষের তিনটি সেকশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিআররা নিশ্চিত করেছেন যে অভিযুক্ত কখনো তাদের সেকশনের ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি । 


এ বিষয়ে, কৃষি অনুষদের একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বললে তারা অভিযুক্তকে বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম এবং খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করতে দেখলেও কখনো ক্লাস কিংবা একাডেমিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে দেখেননি বলে জানান। 


এ বিষয়ে গণিত ২০১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সোহানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি তো ওর সাথে নিয়মিতভাবে খেলতে যেতাম। গতকাল সন্ধ্যার পরও জিমনেসিয়ামে ওর সাথে খেলতে আসার কথা ছিলো। বিকেলেও ওর সাথে যোগাযোগ হয়েছিলো। কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়, আর ও সন্ধ্যার পর খেলতেও আসেনি। তখন ফোন করে ফোনেও পাইনি ওকে। এরপর থেকে ওকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না।


এ বিষয়ে জানতে কৃষি অনুষদের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. ইয়াসিন প্রধানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আজ আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি৷ অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে। সে ক্যাম্পাসে নেই, বাহিরে অবস্থান করছে বলে আমাদের জানিয়েছে। 


তিনি আরও বলেন, আমরা সে শিক্ষার্থীকে ডেকেছি। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে বিষয়টি জানা যাবে। পুরো ব্যাপারটি তদন্তাধীন আছে। দ্রুততম সময়ে অভিযোগের সমাধান করা হবে। 


বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মামুনুর রশিদ বলেন, এক শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। প্রকৃত ঘটনা উদ্ধারে আমরা কাজ করছি। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। কিন্ত তার মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। অভিযোগকারী শিক্ষার্থীকে ডাকা হয়েছে। কাগজপত্র যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রকৃত বিষয়টি জানা যাবে। যদি সে আমাদের শিক্ষার্থী না হয়ে থাকে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেবি/ আরএইচ/