তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ ছাড়াই চলবে আইনজীবীর তৈরি মোটরসাইকেল
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১:৫০ অপরাহ্ন, ২২শে নভেম্বর ২০২২
নিজের প্রচেষ্টায় যে সব কিছু করা সম্ভব এমনটাই প্রমান করলেন কিশোরগঞ্জে এক আইনজীবী। তিনি উদ্ভাবন করেছেন জ্বালানি বিহীন মোটরসাইকেল। সম্পূর্ণ নিজস্ব প্রযুক্তিতে তিনি এ মোটরসাইকেলটি তৈরি করেছেন। যা কোন ধরনের তেল-গ্যাস কিংবা বৈদ্যুতিক চার্জ ছাড়াই চলবে। কেনো খরচ ছাড়াই এতে চড়ে যাওয়া যাবে দেশের যে কোন প্রান্তে। ভাবতে অবাক লাগলেও এমনটাই তৈরী করে দেখিয়েছেন কিশোরগঞ্জের তাজুল ইসলাম। যিনি পেশায় একজন আইনজীবী। দীর্ঘ ১৮ বছর সাধনার পর এ মোটরসাইকেলটি তৈরি করেছে তিনি। যা ধোঁয়া বিহীন শতভাগ পরিবেশ বান্ধব। খরচ হয়েছে এক লাখ টাকা। সরকারি বা বেসরকারি সহায়তা পেলে ভবিষ্যতে বানিজ্যিকভাবে এমন মোটরসাইকেল উৎপাদন করতে চান তিনি।
কিশোরগঞ্জ জেলা জজ কোর্টের আইনজীবী তাজুল ইসলাম (৫২)র এমন মোটরসাইকেল আবিষ্কারে রীতিমত হৈ চৈ ফেলে পড়েছে জেলায়। গত কিছুদিন ধরে তিনি বাসা থেকে কোর্টে পরীক্ষামূলকভাবে চালাচল করছেন এ মোটরসাইকেল দিয়ে। তার আবিষ্কৃত এ মোটরসাইকেলটি দেখতেও প্রতিদিন উৎসুক জনতার ভীড় করছেন কিশোরগঞ্জ কোর্ট প্রাঙ্গনে। বাহির থেকে দেখলে বুঝার উপায় নেই যে মোটরসাইকেলটি তিনি নিজেই তৈরি করেছেন।
আইনজীবী তাজুল ইসলাম জানান, জেলার কুলিয়ারচরের বাড়ি থেকে কোর্টে আসতে চার্জের মোটরসাইকেল কিনে ছিলেন। আসার সময় মোটরসাইকেল চড়ে আসলেও যাবার সময় সেই মোটরসাইকেলটি তার টমটম গাড়িতে করে বাড়িতে নিতে হতো প্রায় সময়ই। সেই কষ্ট থেকে রেহায় পেতেই তিনি এ মোটরসাইকেলটি তৈরি করেছেন।
তিনি জানান, এ মোটরসাইকেলটি তৈরীতে খরচ পড়েছে এক লাখ টাকা। প্রথমে বিভিন্ন স্থান থেকে মোটর সাইকেল তৈরীর যন্ত্রাংশ ক্রয় করেছেন। পরে আদালতের নিজস্ব চেম্বারে কাজের ফাঁকে ফাঁকে ১২ ভোল্টের ৪টি ব্যাটারি, একটি বৈদ্যুতিক মোটরের সাথে ডায়নামো স্থাপন করে মোটরসাইকেলটি তৈরী তৈরী করেন। এ মোটরসাইকেলের চাকা চলার সাথে সাথে ডায়নামোর মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হবে ব্যাটারি। কোন প্রকার জ্বালানি খরচ ছাড়াই যাওয়া যাবে দেশের যেকোন প্রান্তে। যার চলার গতি হবে ৭৫ কিলোমিটির। বিনোদনের জন্য ভেতরে সাউন্ড সিস্টেমেরও ব্যবস্থা রয়েছে। কারো সহযোগিতা ছাড়াই নিজের মেধা শক্তির মাধ্যমেই এ মোটরসাইকেল তৈরী করেছেন।
অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম জানান, এ মোটরসাইকেল বাজারজাত করতে পারলে জ্বালানি সঙ্কট কমে আসবে পাশাপাশি দেশের যুবকদেরও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। বানিজ্যিকভাবে এ মোটরসাইকেল উৎপাদন আমি সরকারের সহযোগিতা চাই। এছাড়াও এ উদ্ভাবনী পদ্ধতিতে অটোরিকশা, প্রইভেটকার ও মাইক্রোবাসে কাজে লাগানো যেতে পারে।
অ্যাডভোকেট অ ন ম তানভীর হায়দার ভূঞা বলেন, আমাদের সিনিয়র আইনজীবী তাজুল ইসলাম স্যার যে মোটরসাইকেলটি তৈরি করেছেন এটা চলতে তেল, গ্যাস কিছুই লাগেনা। এটা রিচার্জেবল বাইক। এই উদ্ভাবনী পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনও সম্ভব বলে জানিয়েছেন তাজুল ইসলাম স্যার। এ মোটরসাইকেল বাজারজাত করণে সরকারি বা বেসরকারি সহয়তা যেনো পান এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা।
আরএক্স/