নুডলস চুরির দায়ে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


নুডলস চুরির দায়ে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন

চুয়াডাঙ্গায় আলমডাঙ্গায় পণ্য পরিবহণের গাড়ি থেকে নুডলসের প্যাকেট ও নারিকেল তেল চুরির অভিযোগে সাদ্দাম হোসেন নামে এক যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ব্যবসায়ী আমানুল্লাহর বিরুদ্ধে। এ সময় সাদ্দামকে স্টিলের পাইপ দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। এঘটনায় উভয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছেন।  

বুধবার (০২ ফেব্রুয়ারী) সকালে আলমডাঙ্গা থানায় নির্যাতনের শিকার সাদ্দামের পরিবারের পক্ষ থেকে আটক করে নির্যাতন মামলা ও অপরদিকে নির্যাতনকারী শেখ আমানুল্লাহর পরিবারের পক্ষ থেকে একটি চুরির মামলা দায়ের হয়েছেন। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম।

সাদ্দাম হোসেন (২২) আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার থানাপাড়ার আকমল হোসেনের ছেলে ও শেখ আমানুল্লাহ (৪০) কুষ্টিয়া মীরপুর উপজেলার আমবাড়িয়া ইউনিয়নের সুতাইল গ্রামের আহসানের ছেলে।

এর আগে মঙ্গলবার (০১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে  বিভিন্ন দোকানের অর্ডারের পন্য ডেলিভারির জন্য গাড়িতে তুলছিল আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার হাফিজ মোড়ে অবস্থিত শেখ ট্রেডার্সের কর্মচারিরা। এ সময় সাদ্দাম ওই গাড়ি থেকে নুডলস ও নারিকেল তেলসহ কিছু মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে ধরে এনে শেখ ট্রেডার্সের মালিক আমানুল্লাহর কাছে হস্তান্তর করে। পরে শেখ আমানুল্লাহ প্রকাশ্যে তার দোকানের খুঁটির সঙ্গে সাদ্দামের দুই হাত বেঁধে একটি স্টিলের পাইপ দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোপ প্রকাশ করেন অনেকে। খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে সাদ্দামকে উদ্ধার করে থানায় নেই। পাশাপাশি রাতে নির্যাতনকারী শেখ আমানুল্লাহকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। বুধবার সকালে উভয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করলে তাদেরকে গ্রেফতার দেখাই পুলিশ। বুধবার দুপুরে গ্রেফতারদের চুয়াডাঙ্গা বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়।

আলমডাঙ্গা পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড কমিশনার খন্দকার মুজিবুল ইসলাম বলেন, সাদ্দামের বিরুদ্ধে অনেক চুরির অভিযোগ আছে। আগেও ব্যবসায়ী আমানুল্লাহর প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন মালামাল চুরি করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আজ দুপুরে চুরির সময় স্থানীয়রা হাতেনাতে ধরে সাদ্দামকে আমানুল্লাহর কাছে হস্তান্তর করে। পরে সে দোকানের খুঁটিতে বেঁধে মারধর করেছে।

তিনি আরও বলেন, এভাবে মারধর করা ঠিক হয়নি তার। বিষয়টি অন্যায় হয়েছে। মারধর না করে পুলিশে দেওয়া উচিত ছিল।

চুয়াডাঙ্গা মানবতা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট মানি খন্দকার বলেন, দোকানের খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা যদি সত্যি হয় তাহলে এটা বড় অপরাধের মধ্যে পড়ে। কেউ আইন নিজ হাতে তুলে নিতে পারেন না। তাকে অবশ্যই আইনের কাছে সোর্পদ করতে হবে। নির্যাতনের শিকার ওই যুবক বা তার পরিবার আমার সঙ্গে যোগাযোগ করলে মানবতা ফাউন্ডেশন থেকে তাকে বিনা মূল্যে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম জনবাণীকে বলেন, নির্যানতের বিষয়টি পুলিশের জানা ছিল না। পরে সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে নির্যাতনের ভিডিও দেখেছি। এভাবে আইন হাতে কেউ তুলে নিতে পারেন না। সাদ্দামের পক্ষ থেকে আটক করে নির্যাতন মামলা ও নির্যাতনকারী শেখ আমানুল্লাহর পক্ষ থেকে একটি চুরির মামলা দায়ের হয়েছে। তাদের দুজনকে গ্রেফতার করে বুধবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।  

এসএ/