টেকনাফ স্থলবন্দর থেকে আচার ও সুপারি সরবরাহ বন্ধ


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:০৬ পূর্বাহ্ন, ২৫শে নভেম্বর ২০২২


টেকনাফ স্থলবন্দর থেকে আচার ও সুপারি সরবরাহ বন্ধ
ছবি: জনবাণী

কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দর থেকে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা আচার ও সুপারি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। গত ১৫ নভেম্বর থেকে এ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা। এর কারণে ব্যবসায়ীদের বন্দরে অতিরিক্ত ভাড়া প্রদান করতে হচ্ছে।


টেকনাফ স্থলবন্দর পরিচালনাকারি ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (হিসাব) মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, শুল্ক গোয়েন্দা নির্দেশনায় আচার ওসুপারি সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে মিয়ানমার থেকে আশা আচার ও সুপারিগুলো টেকনাফ স্থলবন্দরের গোডাউনে জমা রাখা হয়েছে। এসব পণ্যের প্রতি টনে দৈনিক ১৭ দশমিক ৫০ টাকা করে চার্জ আদায় করা হবে।


শুল্ক গোয়েন্দা নির্দেশনার বিষয়টি তিনি পরিষ্কার করেননি। তবে এ সংক্রান্ত একটা চিঠি প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। গত ১৩ নভেম্বর টেকনাফ তদন্ত সার্কেলে কাস্টমস গোয়েন্দা বিভাগের রাজস্ব কর্মকর্তা  মো. কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত


মহাব্যবস্থাপক ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট টেকনাফ লিমিটেডকে পাঠানো আচার ও বরই আচার নামীয় পণ্যচালান ছাড় না করণ এক চিঠিতে বলা হয়েছে টেকনাফ স্থল বন্দর স্টেশন নিয়ে আচার ও বরই আচার বর্ণনার পরসমূহের বিষয়ে অত্র দপ্তরের গোপন সংবাদ রয়েছ। 


এ বিষয়ে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণ কার্যক্রম চলমান। তাই রাজস্ব সুরক্ষার স্বার্থে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এসব পণ্যচালান না করার জন্য অনুরোধ করা হইল।


টেকনাফ শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন জানিয়েছেন, রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগকে কেন্দ্র করে টেকনাফ বন্দর কর্তৃপক্ষকে ওইসব পণ্য সরবরাহ বন্ধ রাখা জন্য একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।


টেকনাফ স্থল বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক বাহাদুর বলেন, শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের একটি চিঠির প্রেক্ষিতে গত ৯ দিন ধরে বন্দর থেকে সারাদেশে আচার ও সুপারির সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে করে ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত চার্জের গুনতে হচ্ছে।


একাধিক সূত্র বলছে, গত ১৩ নভেম্বর চট্টগ্রামের পটিয়ার মজ্জারটেক এলাকায় রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে ছয়টি ট্রাকের মালামাল জব্দ করে কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দা। যেখানে বলা হয়েছে, মিয়ানমার থেকে আনা পণ্যের মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে এসব পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে সরকারের ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে।


অভিযান পরিচালনাকারি প্রতিষ্ঠানের দাবি, এসব ট্রাক ভর্তি ছিল সুপারি। যা ৪ জন আমদানিকারক আমদানি করেছেন। যাদের দুজন টেকনাফের সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদির ছোট বোনের স্বামী ফারুক এবং ছোট ভাই আব্দুল আমিন।


চট্টগ্রামের শুল্ক গোয়েন্দা ও কাস্টমসের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বশির আহমেদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সুপারি আমদানি করে আচারের শুল্ক দিয়ে পণ্য খালাস হয়েছে। নিয়ম মতে প্রতি টন সুপারির শুল্ক ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। আর আচারের ২২ হাজার টাকা। মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে শুল্ক ফাঁকি দেয়ার জন্য তাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে।


মুলত এর জের ধরে টেকনাফ বন্দর থেকে আচার ও সুপারি সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক ব্যবসায়ী। তাদের দাবি, বিষয়কে কেন্দ্র করে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা আচার ও সুপারি সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে। এতে করে হিমায়িত মাছ-আদাসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য সামগ্রী আমদানিও কমে গেছে।


আরএক্স/