প্রধানমন্ত্রীর কক্সবাজার সফর :

কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল দ্রুত বাস্তবায়ন চান জেলাবাসি


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:২৩ পূর্বাহ্ন, ৫ই ডিসেম্বর ২০২২


কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল দ্রুত বাস্তবায়ন চান জেলাবাসি
প্রধানমন্ত্রীর কক্সবাজার সফর | ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ কক্সবাজার সফরে এসেছিলেন ২০১৭ সালের ৬ মে। ওই দিন একই সঙ্গে ১৬ টি প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। যে প্রকল্পের মধ্যে ১৫ টি প্রকল্পের কিছু কাজ শেষ হয়েছে, অন্যান্যগুলো চলমান। কিন্তু ৫ বছরের বেশি সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও আলোর মুখ দেখেনি একমাত্র প্রকল্প কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।


আগামি ৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কক্সবাজার সফরকে কেন্দ্র করে যে সব দাবি জোরালো ভাবে আলোচনায় হচ্ছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এখন কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। কক্সবাজারের সচেতন মহল ও পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ দ্রুত সময়ের মধ্যে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসাপতাল চালু করতে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।


কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডাক্তার মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘কক্সবাজার, যশোর, পাবনা ও নোয়াখালী এ ৪ টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ইন্ডিয়ান লাইন অফ ক্যাডিটের আমব্রলা প্রক্টেজের অধিনে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিলম্বের কারণে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল করতে দেরী হয়ে যায়। ফলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ইন্ডিয়ান লাইন অফ ক্যাডিট থেকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল করার বিষয়টি বাদ দেয়া হয়েছে। এখন বিষয়টি একনেকে প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। একনেকে প্রকল্প অনুমোদন পেলে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হবে।


কক্সবাজার পিপলস্ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল বলেন, কক্সবাজার জেলার ২৫ লক্ষাধিক মানুষ, যার সাথে রয়েছে ১১ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি। এখানে দেশী বিদেশী সংস্থা কর্মকর্তা-কর্মচারী, প্রতিনিয়ত পর্যটকের আনাগোনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কক্সবাজার উন্নয়নের মেগা প্রকল্প সমুহের কারণে আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ জেলা কক্সবাজার। এখানে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল চিকিৎসা সেবার জন্য পর্যাপ্ত না। প্রধানমন্ত্রী নিজেই ৫ বছর আগে ৫০০ শয্যার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছেন। যেহেতু প্রকল্পটি বিলম্ব হওয়ার পর এখন একনেকে রয়েছে এটা প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হলে জেলাবাসি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল দ্রুত বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা পাবেন। 


কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও কক্সবাজারের কৃতিসন্তান ডাক্তার মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ২০০৮ সালে চালু হওয়া এই মেডিকেল কলেজ পূর্ণাঙ্গতা পেয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে। প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভিত্তি প্রস্তরও স্থাপন করেছে। কিন্তু নানা জটিলতায় তা হয়নি। 


তিনি বলেন, ২০১১ সালে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয় এবং মাত্র ৬ বছরের মধ্যে ২০১৭  সালে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল উদ্বোধন করা হয়। ২০১৩ সালে গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয় এবং মাত্র ৪ বছরের মধ্যে ২০১৭ সালে শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল উদ্বোধন করা হয়। এখন প্রধানমন্ত্রী আসবেন তাঁকে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিষয়টি জানানো হলে কক্সবাজারবাসি কোনভাবেই নিরাশ হবেন না। 


বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশ (বিএমএ) কক্সবাজার শাখার সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার মাহাবুবুর রহমান জানান, কক্সবাজারের চিকিৎসা সেবার ভরসাস্থল কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে প্রতিদিন ৭ হাজারের বেশি রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করেন। সরকারের আন্তরিকতায় ২০১৭ সালে কক্সবাজারে একটি সমাবেশ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। এখন সময় এসেছে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল দ্রুত চালুর ঘোষণার। প্রধানমন্ত্রী নিশ্চই এ ঘোষণা দেবেন।


কক্সবাজার চেম্বার অফ কর্মাসের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী জানান, প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠায় কাজ করছেন। এখানে যে প্রকল্প চলমান রয়েছে তা হলে বদলে যাবে এই শহর। এখানে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থাকবে না, তা হয় না। প্রধানমন্ত্রী তা বুঝেন। যেহেতু প্রকল্পটি একনেকে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই ঘোষণা দেবেন।


কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আবছার জানান, একনেকে যাওয়া কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আর বিলম্ব হওয়ার সুযোগ নেই। ৭ ডিসেম্বর জেলাবাসি প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে এমন ঘোষণা পাবেন।


কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি রেজাউল করিম জানান, কক্সবাজার জেলায় যে উন্নয়ন হচ্ছে এতে নতুন দাবী বেশি নেই। উন্নয়ন প্রকল্পের স্বার্থে আরও কিছু সুযোগ সুবিধা  প্রয়োজন রয়েছে। তাই এবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে যে সব দাবী জানানো হবে তার মধ্যে জোরালো থাকবে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল দ্রুত চালু এবং কক্সবাজার মেডিকেল কলেজকে পূর্নাঙ্গ প্রতিষ্ঠা করার।