‘সংঘাত নয় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান সম্ভব’
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৪ পূর্বাহ্ন, ৮ই ডিসেম্বর ২০২২
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা বিশ্বাস করি সংঘাত নয়, সমঝোতা এবং আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যে কোনো সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। তাই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তিনি যুদ্ধের ভয়াবহতা-বিভৎসতার কথা তুলে ধরে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করার অনুরোধ করেন।
বুধবার (৭ ডিসেম্বর) কক্সবাজারের ইনানী সমুদ্র সৈকতে ইন্টারন্যাশনাল ফ্লিট রিভিউয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভয়াবহতা, বিভৎসতা আপনারা দেখছেন। আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই।
আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, নিকট অতীতে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের প্রতি আমরা আমাদের অঙ্গীকারের প্রতিফলন দেখাতে সক্ষম হয়েছি। প্রতিবেশী ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা সম্পর্কিত মতপার্থক্য সৌহার্দপূর্ণভাবে সমাধান করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতি হিসেবে আমরা সর্বদা বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি। সেই নীতি মেনেই আমরা সকলের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। নিকট প্রতিবেশি এবং আঞ্চলিক সব দেশের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক বজায় রেখেছি।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক ভৌগোলিক সীমানার মাধ্যমে আমাদের সকল দেশ বিভক্ত হলেও বন্ধুত্বের সেতু বন্ধনে সমুদ্র উপকূলীয় সকল দেশের সঙ্গে আমরা একই সূত্রে গাঁথা। অর্থাৎ বিশাল জলরাশি আমাদের একত্রিত করেছে।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনী আয়োজিত ‘আইএফআর-২০২২’ ইভেন্টটি আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করতে সক্ষম হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। যা সকল সামুদ্রিক দেশসমূহের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধিতে এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
কক্সবাজারের সৌন্দর্যের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং বৈচিত্র্যের দেশ বাংলাদেশ। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বিশ্বের সর্ববৃহৎ সোনালি বালুকাময় সৈকত। বাংলাদেশ বিপুল সম্ভাবনার দেশ। আমি আশা করি, আইএফআর ২০২২ তে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের সমুদ্র, সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে অবকাঠামো উন্নয়নের অপার সম্ভাবনা,পর্যটন ইত্যাদি সর্ম্পকে সম্যক ধারণা পাবেন।
আইএফআর ২০২২ এ অংশগ্রহণকারী ২৮টি রাষ্ট্র হলো- বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, চীন, ভারত, মিশর, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইতালি, জাপান, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মায়ানমার, নাইজেরিয়া, নেদারল্যান্ডস, ওমান, প্যালেস্টাইন, সুদান, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, শ্রীলংকা, তানজানিয়া, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র।
ইনানি সমুদ্র সৈকতের অনুষ্ঠানস্থলে এসে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবাল।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই নৌবাহিনীর প্রথা অনুযায়ী ‘শিপ্স বেল’ বাজিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐতিহাসিক এই অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে আগত বিভিন্ন দেশের নৌসদস্যদের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য কুজকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। পরে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিশেষায়িত ফোর্স সোয়াড্স কর্তৃক সমুদ্রে একটি বিশেষ মহড়া প্রদর্শিত হয়।
অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের সম্মানে বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে দৃষ্টিনন্দন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপন করা হয়।