বিলুপ্তর পথে মাটির চুলা,দক্ষিণাঞ্চলে আধুনিকতার ছোঁয়া
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪:৩৬ পূর্বাহ্ন, ৯ই ডিসেম্বর ২০২২
দক্ষিণাঞ্চলে আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রাম বাঙলা থেকে দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে মাটির চুলা। এক সময় গ্রামের মানুষের রান্নার মূল ভিত্তি ছিল মাটির চুলা। শীতকাল আসলেই মধ্যবিত্ত-নিম্ন মধ্যবিত্ত বাড়ির নারীরা ঘরের মাঝে বা পাশে মাটির চুলা তৈরি করতেন। আর এগুলো তৈরি করতে ব্যবহার করতো ফসলি জমির এটেল মাটি।
বর্তমানে এই মাটির চুলা বিলুপ্তর পথে শহরের মতো গ্রামাঞ্চলে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে সবাই এখন মাটির চুলা রেখে গ্যাসে রান্না করছে।
চুলা বানাতে প্রথমে মাটিতে বিশেষভাবে গর্ত করা হয়। একমুখো ও দুমুখো ধরনের চুলা বানানো হয় । প্রতিটি চুলায় সাধারণত একটি করে জ্বালানি প্রবেশের মুখ থাকে। যেসব চুলায় একটি হাঁড়ি বসানো যায়, সেটিই একমুখো চুলা। যে চুলায় দুটি হাঁড়ি বসানো যায়, সেগুলো দুমুখো চুলা। দুমুখো মাটির চুলা দিয়ে সাধারণত বাড়িতে ধান সিদ্ধ বা অনুষ্ঠানের খাবার রান্নার জন্য ব্যবহার করা হয়। এছাড়া তোলা চুলা বলে এক ধরনের চুলা আছে। মূলত এটি একমুখো চুলা। তবে এটি তৈরি করা হয় পরিত্যক্ত গামলার মাটি দিয়ে। সাধারণত হালকা খাবার রান্না, খাবার গরম করা, দুধ গরম করা, চা তৈরি ইত্যাদি কাজে এটি ব্যবহার করা হতো। বিশেষ প্রয়োজনে এটিকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় অনায়াসে নিয়ে যাওয়া যায়। বন্যাকবলিত অঞ্চলে এর ব্যবহার চোখে পড়ে। সাধারণত এসব চুলায় কাঠ, বাঁশ, খড়কুটো, পাটশোলা, শুকনো পাতা, ঘষি প্রভৃতি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
মাটির চুলার ছাই সবজি চাষে বা মাছ কাটতে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া গ্রামবাংলায় এখনো অনেক পরিবার হাঁড়ি-পাতিল ধুতে ছাই ব্যবহার করে। শীতের দিনে মাটির চুলা জালিয়ে শীত নিবারণের জন্য চুলারপাড়ে বসতো মা বোনসহ গ্রাম বাঙলার মানুষ। একটি মাটির চুলা তৈরি করতে ১৫-২০ দিন সময় লাগে।
বরগুনার বামনা উপজেলার বুকাবুনিয়া ইউনিয়নের লক্ষীপুরা গ্রামের বাসিন্দা ফরিদা বেগম বলেন, ‘পুরনো মাটির (চুলা) ২০-৩০ বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়।রান্নাঘরের চুলা যত পুরান হয়, তার ভিতরের মাটি পুড়তে পুড়তে তত বেশি লাল হয়। পুরানো চুলাশ তাপ বেশি ছড়ায়। কিন্তু চুলা সংস্কারের জন্য মাঝে মাঝে কাদা মাটির পোচ দেওয়া লাগে।’
একই গ্রামের সানজানা ইসলাম সুমা বলেন, আগের চুলা গুলোর নাম ছিল দো-চুলা, কয়লা চুলা, পাশ কাঁটা চুলা, আলোক চুলা। গ্যাস সিলিন্ডার হওয়ার পর এখন আর আগের মত কেউ চুলা বানায় না মানুষ ডিজিটাল হয়ে গেছে সবাই শান্তি খুঁজে।
আরএক্স/