আধুনিকতার যুগে ৬০ দশকের সেই অতীতের পেশায় জহরলাল


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


আধুনিকতার যুগে ৬০ দশকের সেই অতীতের পেশায় জহরলাল

মানুষকে দেখতে সুন্দর করা যাদের কাজ, তারাই নরসুন্দর। আমরা যাকে বলি নাপিত। এরকম নরসুন্দর বা নাপিতরা চুলকে সুন্দর করে কেটে নরকে (মানুষকে) সুন্দর করে তুলে।

সর্বত্র আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও চট্রগ্রাম আনোয়ারা উপজেলার বিলপুর গ্রামের সাধারণ বৃদ্ধ মানুষ এখনও হাটে-বাজারে ও বাড়ির আঙ্গিনায় ইটের উপর বা কাঠের পিঁড়িতে বসে চুল কাটানোর কাজটি  সেরে নেন। আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে এসব সেলুন। আর কাজ না পেয়ে এখানকার নরসুন্দরদের পড়তে হচ্ছে বিপাকে। বিশেষ করে অমিকন কোভিড-১৯ করোনা মহামারীর সময়টাতে এদের অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। রাস্তার ধারে, ফুটপাতে বসতে নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ ও মানুষের মধ্যে করোনার ভয় এবং আধুনিক সভ্যতার পরিবর্তন সবমিলিয়ে এই নরসুন্দরদের অবস্থা ভাটির দিকে। তবে ঘর সেলুনের চাহিদা রয়েছে ব্যাপক।

 অতীত স্মৃতি খুঁজতে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে গেলে এরকম  পেছনে ফেলে আসা দিনগুলির চিত্র  চোখে  পড়ে। আধুনিক সভ্যতার ক্রমবিবর্তনে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের গতিধারায় এসেছে পরিবর্তন। লেগেছে নতুনত্বের ছোঁয়া। তাই আজ হাটে-বাজারে বটবৃক্ষের ছায়ায় খেয়াখাটে, ফুটপাতে কিংবা গ্রামগঞ্জের জল চৌকিতে বা ইটের উপরে সাজানো পিঁড়িতে বসে নাপিতের কাছে গ্রামবাংলার মানুষের চুল দাঁড়ি কাটার সেই আদি দৃশ্য আর চোখে পড়ে না। তবে উপজেলার বিলপুর গ্রামের এখনো কিছুটা দেখা মেলে এ দৃশ্যের।

তবে প্রতিনিয়ত মানুষকে সুন্দর করার কাজ করে যাচ্ছেন এসব নরসুন্দর বা নাপিতরা। অনেকেই বহু বছর ধরে করছেন এ কাজ। সে সময়ে তাদের এ আয় দিয়ে সংসার ভালোভাবে চললেও বর্তমানে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নরসুন্দরদের।

৪০ টাকা থেকে শুরু করে শতাধিক টাকা দিয়ে বর্তমানে চুল কাটা ও দাঁড়ি সেভ  করা হয়। কিন্তু গ্রামের সেই জহরলাল নাপিতের কাছে ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা দিলেই  চুল কাটানো হয়।বিলপুর গ্রাম সহ আশে পাশের গ্রাম গুলোতে দিন ভাগ করে জহরলাল শীল কাজ করে থাকেন। পাঁচদিন গ্রামের বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় , দুই দিন জয়কালী বাজারে কাজ করেন। গ্রামের বেশীরভাগ দরিদ্র পরিবারের লোকজনের চুল দাড়ি কাটানোর কাজ বাকীতে করে পরবর্তীতে ফসল কাটার মৌসুমে ধান চাল নিয়ে থাকেন।

জহরলাল শীল জানান, বহু বছর ধরে এ পেশায় কাজ করছি। প্রায় ৩০-৪০ বছর ধরে ইটের উপর বা পিঁড়িতে বসিয়ে মানুষদের এভাবে নাপিতের কাজ করেছি। কিন্তু বর্তমানে আধুনিকতার কারণে আমরা এখন কোনো কাজ করতে পারছি না।

আমাদের কাছে এখন তেমন একটা মানুষ আসতে চায় না। তাই সরকারের সহায়তা কামনা করছি। এদিকে স্বচ্ছ জীবনযাপন করতে ও আক্ষেপ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সরকারি সহায়তার দাবি জানিয়েছেন জহরলাল শীল।

এসএ/