দীর্ঘ ১১ ঘন্টা গভীর সমুদ্রে আটকে ছিল ১৩০০ পর্যটক


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২:০৮ পূর্বাহ্ন, ২২শে ডিসেম্বর ২০২২


দীর্ঘ ১১ ঘন্টা গভীর সমুদ্রে আটকে ছিল ১৩০০ পর্যটক
আটকে থাকা পর্যটকরা

কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে চলাচলকারি পর্যটকবাহী জাহাজটি ঘাটে ফেরার কথা ছিল মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৫ টায় কিন্তু জাহাজটি ফিরেছে বুধবার ভোর ৪ টায়। দীর্ঘ ১১ ঘন্টা সমুদ্র আটকে থাকার পর আতংকিত পর্যটক ঘাটে ফিরেছেন।


দীর্ঘ ১১ ঘন্টা গভীর সমুদ্রে আটকে ছিল ১৩০০ পর্যটক কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে চলাচলকারি পর্যটকবাহী জাহাজ ১৩০০ যাত্রী নিয়ে গভীর সমুদ্রে আটকে ছিল টানা ১১ ঘন্টা। মঙ্গলবার বিকাল ৩ টায় সেন্টমার্টিন থেকে যাত্রা দিয়ে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়াস্থ বিআইডবিউটিএ ঘাটে পৌঁছার কথা ছিল সন্ধ্যা ৫ টায়। কিন্তু জাহাজটি গভীর সমুদ্র আটকা পড়ে দীর্ঘ সময়। জাহাজের যাত্রীদের গভীর সমুদ্রে বার আউলিয়া নামের অপর একটি জাহাজটি তুলে ঘাটে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে বুধবার ভোর ৪ টায়।


এসময় জুড়ে জাহাজের যাত্রীদের মধ্যে ছিল আতংক। পর্যটকদের অভিযোগ, জাহাজ কর্তৃপক্ষের চরম অব্যবস্থাপনা আর অসহযোগিতার কারণে এমন পরিস্থিতি। জাহাজের ছিল যাত্রীদের তীব্র খাবার সংকট। শিশু এবং বয়স্ক মানুষের ভোগান্তি ছিল চরমে। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে অনেকে বসার জায়গাও পাননি।


যদিও ভিন্ন কথা বলেছেন জাহাজ কর্তৃপক্ষ। জাহাজটির কক্সবাজার কার্যালয়ের ইনচার্জ হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ে জাহাজটি ঘাটে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু সাগরে জাহাজটির যান্ত্রিক ক্রুটির কারণে নোঙর করতে হয়। এর মধ্যে জাহাজের যাত্রীদের ফেরার জন্য বার আউলিয়া জাহাজটি প্রেরণ করা হয়। ওই সময় সাগর উত্তাল থাকায় ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীদের জাহাজ পরিবর্তন সাগরে অসম্ভব হয়ে যায়। ফলে সাগর শান্ত হওয়ার পর জাহাজ পরিবর্তন করে ঘাটে ফিরতে বিলম্ব হয়েছে।


খাবার সংকট, অতিরিক্ত যাত্রী নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। জানান, ১১ শত যাত্রী ছিল। যেখানে খাবার মজুদ ছিল কমপক্ষে ৪ হাজার জনের।


অব্যবস্থাপনার বিষয়টি সঠিক নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা কক্সবাজার থেকে নিয়মিত যাত্রী পরিবহণ করছেন কর্ণফুলি জাহাজ যোগে। এটি সাময়িক ক্রুটির কারণে বন্ধ ছিল। এখন স্বাভাবিক। আর কোন অসুবিধা হবে না।


বুধবার ভোরে ঘাটে ফেরা যাত্রীদের মধ্যে এক নারী জানান, জাহাজটি পরিচালনা করা হচ্ছে অদক্ষ নাবিক যোগে। যেখানে জাহাজ কর্তৃপক্ষের চরম অব্যবস্থাপনা আর অসহযোগিতা ছিল। জাহাজের মাত্র ১৫ শতাংশ যাত্রীকে খাবার দেয়া হয়েছে। অন্যরা খাবার পাননি।


তিনি বলেন, আগের দিন ভোর ৫টায় তারা ঘাটে আসেন সেন্টমার্টিন যাওয়ার জন্য আর পরদিন ভোর ৪ টায় ফিরেছে, সেন্টমার্টিন দেখার সুযোগও হলো না, মাত্র ৪৫ মিনিট দ্বীপে অবস্থান করার সুযোগ হয়েছিল।


রফিকুল নামের এক যাত্রী জানান, সমুদ্র উত্তাল ছিল। বারবার বলার পরও কর্তৃপক্ষ লাইফ জ্যাকেট সরবরাহ করেনি। সেই সঙ্গে তিনটি আলু সিংগারার দাম রাখা হয়েছে ১০০ টাকা, খিচুড়ির দাম রাখা হয়েছে ২৫০ টাকা।


তিনি জানান, তিনি সাড়ে ৭ হাজার টাকা দিয়ে টিকেট কিনেছেন কেবিনের, তাকে খাবারও দেয়া হয়নি। তার স্ত্রী জানান, বাচ্চাদের নিয়ে রাতভর সমুদ্রে ভয়াবহ সময় পার করেছি।


বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষে সংশ্লিষ্ট বিভাগে দায়িত্বশীল অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আবু সুফিয়ান এর সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।


আরএক্স/