ক্ষেতলালে ফসলি জমি কেটে পুকুর খনন


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬:০৪ পূর্বাহ্ন, ২৯শে ডিসেম্বর ২০২২


ক্ষেতলালে ফসলি জমি কেটে পুকুর খনন
ফসলি জমি কেটে পুকুর খনন

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে ফসলি জমি কেটে পুকুর খনন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ও মাটি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম বেড়েই চলেছে । অসাধু ব্যবসায়ীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে জমির মালিক বিক্রয় করেন ফসলি জমির মাটি। জমি কেটে খনন করছেন অপরিকল্পিত পুকুর।  পুকুর সংস্কারের নামে গভীর করে মাটি কেটে বিক্রয় করা হচ্ছে। এতে জমির শ্রেণী পরিবর্তন হয়। ফসলি জমি কমে আসার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় জনসাধারণের চলাচলের রাস্তাঘাট। ঘন কুয়াশায় রাস্তা কর্দমাক্ত হয়ে ঘটে  বিভিন্ন ধরনের মারাত্মক দুর্ঘটনা। 


এ মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়েছে পুকুর খনন ও অবৈধ মাটি ব্যবসা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার ৮৯টি মৌজার মধ্যে অধিকাংশ মৌজায় ইতিমধ্যে মাহমুদপুর ইউনিয়নের আয়মাপুর ও মিনিগাড়ী, ক্ষেতলাল পৌর এলাকায় রামপুরা চৌধুরী পাড়া ও ইটাখোলা বাজারে , বড়তারা ইউনিয়নের পাঠানপাড়া, হোপহাট, ছোটতারা ও বড়তারা, আলমপুর ইউনিয়নের কানাই পুকুর, দৌলতপুর, পলুন্জ,শহলা পাড়া, আলীপুর মধুপুকুর বাসতা,সুহলী গ্রামে,বড়াইল ইউনিয়নের শশিগ্রাম,হিন্দা বজর বারাহীসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চলছে ভেকু মেশিন (এস্কেভেটর) দ্বারা পুকুর খনন করে মাটি বিক্রয়। 


উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দিনে ও রাতে ফসলি জমি কেটে পুকুর খনন  অবৈধভাবে মাটি বিক্রয়ের রমরমা ব্যবসা করছেন তাঁরা। তবে সচেতন মহল ধারণা করছেন বর্তমান সময়ে পুকুরের সংখ্যা বেড়ে গেছে এবং অসাধু মাটি ব্যবসায়ীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে জমির মালিকদের সুকৌশলে নাম মাত্র মূল্যে দিয়ে খনন করা হচ্ছে নতুন পুকুর। 


মাটি ব্যবসায়ীরা বলেন, কৃষকের সঙ্গে চুক্তি করেই কৃষিজমির মাটি নিয়ে থাকেন। কৃষিজমির মাটি কাটতে কোনো বিধিনিষেধ নেই। শুধু পুকুর খনন করলে প্রসাশনকে একটু  জানালেই চলে।


উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে,এ উপজেলায় ফসলি জমির পরিমাণ মোট ১৪ হাজার ৩০০ হেক্টর জমি রয়েছে। এর মধ্যে গত বছর ১১ হাজার ২১১ হেক্টর জমিতে কৃষি ফসল উৎপাদন করা হত।  বর্তমান ৩ হেক্টর ফসলি জমির পরিমাণ কম হওয়ায় বর্তমান ১১ হাজার ২১১ হেক্টর জমিতে কৃষি ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।


উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে,১৪২.৬৩ বগ কিলোমিটার আয়তনের এ উপজেলায় মোট ২৬২৭টি ছোট-বড় পুকুর রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি ৪৭৫টি এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন ২১৫২টি পুকুরে মাছ চাষ করা হয়। বর্তমান অবৈধভাবে নতুন পুকুর খননের কারণে ফসলি জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে।


অবাধে ফসলি জমি কেটে পুকুর খনন নিয়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসার নুসরাত জাহান বন্যা বলেন, ফসলি জমি কেটে পুকুর খনন করা যাবে না। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতিমধ্যে আর কয়েকটি স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।


আরএক্স/