শিক্ষাবিদ, সাবেক যুগ্মসচিব ও জাতীয় জাদুঘরের সাবেক মহাপরিচালক মোসলেম আলীর জন্মদিন


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


শিক্ষাবিদ, সাবেক যুগ্মসচিব ও জাতীয় জাদুঘরের সাবেক মহাপরিচালক মোসলেম আলীর জন্মদিন

শিক্ষাবিদ, সাবেক যুগ্মসচিব ও জাতীয় জাদুঘরের সাবেক মহাপরিচালক মোসলেম আলীর জন্মদিন কিংবদন্তি শিক্ষক ও শিক্ষা ক্যাডারের অহংকার, প্রফেসর মোসলেম আলী নাটোর জেলার সিংড়া থানাস্থ জোড়মল্লিকা গ্রামে এক সভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৩৮ সালে ৭ই ফেব্রুয়ারী জন্মগ্রহণ করেন। মৃত্যুর পরে ২০২১সালের ১৬ই এপ্রিল  রাজশাহীস্থ সিডিএম হাসপাতালে বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থতায় ইন্তেকাল করেন।  

তিনি সেকালের সুখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আড়ানী মনোমোহিনী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৫৫ সালে দ্বিতীয় বিভাগে এসএসসি পাস করেন এবং রাজশাহী কলেজ থেকে এইচ এস সি  ও রসায়ন বিষয়ে কৃতিত্বেও সাথে স্নাতক সম্মান ডিগ্রি লাভ করেন এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেনি পেয়ে মাসটার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। 

১৯৬৩ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান শিক্ষা সার্ভিস কমিশন কর্তৃক নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে রাজশাহী কলেজে রসায়ন শাস্ত্রে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। এরপর তিনি অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়ে ১৯৬৭ সালে সিলেট এমসি কলেজে যোগদান করেন এবং ঐ বৎসরই বদলীজনিতকারণে পুনরায় রাজশাহী কলেজে ফিরে আসেন। ১৯৭২ সালে তিনি বগুড়া আজিজুল হক কলেজে যোগদান করেন এবং তাঁর নেতৃত্বে সেখানে রসায়নশাস্ত্রে সম্মান কোর্স চালু করেন। এবপর ১৯৭৫ সালে তিনি নওগাঁ ডিগ্রি কলেজে ডেপুটেশনে অধ্যক্ষ পদে পদায়ন লাভ করে সেখানে যোগদান করেন। সেকালের নওগাঁ কলেজ তাঁর প্রভাময় ব্যক্তিত্বেও আলো ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৭৭ সালে তিনি সহযোগী অধ্যাপক হিসাবে পদোন্নতি পেয়ে খুলনা বিএল কলেজে যোগদান করেন। ১৯৮১ সালে তিনি রাজশাহী কলেজের রসায়ন শাস্ত্রের বিভাগীয় প্রধানের পদে যোগদান করেন এবং রাজশাহীতে ফিরেন। তৎপর তিনি নিউ গভ ডিগ্রি কলেজে উপাধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। অধ্যাপক পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত হয়ে ১৯৮৪ সালে রাজশাহী উপাধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। এরপর তিনি নাটোর এনএস কলেজে অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন এবং সেকলেজে স্বল্পকাল কর্মকালে তিনি নিউ গভ ডিগ্রি কলেজে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। নিউ গভ ডিগ্রি কলেজে তিনি অনেক প্রতিকূল পরিবেশকে সুনামের সাথে জয় করতে সক্ষম হন। কলেজটি জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ কলেজের  মর্যাদা লাভ করে এবং তিনিও জাতীয় পার্যায়ে শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষের মর্যাদা লাভ করে। এরপর ১৯৮৯ সালে তিনি সরকারী এডওয়ার্ড কলেজ পাবনায় অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত কর্মকালে কলেজটিতে গোরবময় ঐতিহ্য সৃষ্টিতে তাঁর সাফল্যেও খ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। 

১৯৯২ সালের সূচনালগ্নে তিনি তৎকালীন সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব পদে যোগদান করেন। ঐপদে কর্মকালে তাঁর ইতিবাচক ভাবমূর্তি ও খ্যাতি সর্বজনবিদিত। এমতাবস্থা তিনি জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক পদে যোগদান করেন এবং তিনি তাঁর কর্মময় জীবনে অসামান্য প্রতিভা ও প্রজ্ঞার পরিচয় দিতে সক্ষম হন। অবসরগ্রহণের পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যলয়ের পরিচালক, উন্নয়ন ও পরিকল্পনা পদে যোগদান করেন। সে সমময় তিনি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের “ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির জীবনমান উন্নয়নে কালচারাল একাডেমি ‘নামক প্রকল্প পরিচালকের পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে সুনাম ও মর্যাদার সাথে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত সেখানে দায়িত্ব পালন করেন। 

তিনি ইরান, সুইজারল্যান্ড, মালেশিয়া, ভারত, সিংগাপুর, ভিয়েতনাম সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের যান এবং বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি ইংরেজী ভাষায় দক্ষ একজন বক্তা। তৎপর ২০১৮ সাল পর্যন্ত কৃষিভিত্তিক শিল্পের সংগঠন’ বাপা” এর উপদেষ্টা হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন কালে শেষ জীবনেও আপন মেধা ও প্রজ্ঞার অগ্নিশিখা প্রজ্জ্বলিত করতে সক্ষম হন। সেখানেও তিনি সাফল্যেও সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি প্রকল্পের নেতৃত্ব দেন।

এসএ/