ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধিতে দিন দিন বাড়ছে সরিষার আবাদ
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩:৩২ পূর্বাহ্ন, ২৭শে জানুয়ারী ২০২৩
শীতের হিমেল হাওয়ায় দিগন্ত জুড়ে হলুদ রঙের সরিষা ফুল দুলছে আর মৌমাছির আনাগোনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে প্রতিটি সরিষার ক্ষেত। মাঠে মাঠে ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
পটুয়াখালীর দুমকিতে কৃষকরা সরিষা চাষে ঝুঁকছেন। চাহিদা বৃদ্ধি, ভালো দাম, কম পরিশ্রম ও লাভজনক হওয়ায় দিন দিন বেড়েই চলেছে এই আবাদ। ভোজ্যতেলের দাম আকাশচুম্বী হওয়ায় বিকল্প হিসেবে সরিষা আবাদ করেছে এ এলাকার কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ভোজ্য তেল আমদানি বন্ধে সরকারী সিদ্ধান্ত, সরিষার তেলের চাহিদা বৃদ্ধি, চিকিৎসকদের সয়ামিন তেল পরিহারের পরামর্শের কারনে এবং বেশি লাভের আশায় সরিষা আবাদের চাহিদা বেড়েছে। এছাড়াও প্রনোদনা, ভর্তুকি প্রদানসহ বিভিন্ন ভাবে সরিষা চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। চলতি মৌসুমে দুমকিতে উপজেলায় সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩২ হেক্টর। কিন্তু কৃষকরা নিজেদের চাহিদা পূরণ করে লাভবানের আশায় লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে অধিক চাষাবাদ করেছে। উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ১৪০ জন কৃষকদের প্রনোদনা ভর্তূকির আওতায় সার ও বীজ বিতরণ করা হয়েছে। বিতরণ কৃত বীজ সমূহের মধ্যে বিনা-৯, বারি-৯,১১,১৪ ও ১৭ জাতের সরিষা রয়েছে। এছাড়াও অনেক কৃষক নিজ উদ্যোগে সরিষা আবাদ করেছে। কৃষি দফতরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মনিটরিংয়ের মাধ্যমে পরামর্শক্রমে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের আলগি, হাজীর হাট, দক্ষিণ পাঙ্গাশিয়া, তেঁতুল বাড়িয়া, শ্রীরামপুর, মুরাদিয়া ও আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে ছড়িয়ে ছিটিয়ে সরিষার আবাদ করা হয়েছে।
আলগী এলাকার কৃষক শাহজাহান মুন্সি বলেন, কৃষি দফতরের পরামর্শক্রমে তাদের দেয়া উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষার বীজ ও সার সংগ্রহ করে ৩ একরের অধিক জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। ফলন বেশ ভালো হয়েছে। অপর এক কৃষক মিলন খন্দকার জানান, বর্তমানে ভোজ্যতেলের ঘাটতি পূরণে তিনি দেড় একর জমিতে সরিষার আবাদ করেছে।
শ্রীরামপুর ইউনিয়নের শহীদ ঘরামী বলেন, সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে বিকল্প হিসেবে এবছর ৬০শতাংশ জমিতে সরিষা আবাদ করেছি এবং ফলন ভালো হয়েছে। আমাদের গ্রামের অনেকেই সরিষা চাষে ঝুঁকছেন।
দুমকি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মেহের মালিকা জানান, কম খরচে, অল্প সময়ে সরিষা আবাদের জন্য কৃষকদের সরকারি সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগন দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকায় সরিষার ফলন বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের পরামর্শ ও মনিটরিং করছেন।
জেবি/এসবি