নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব: চাই সতর্কতা ও সচেতনতা


Janobani

জনবাণী ডেস্ক

প্রকাশ: ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন, ৩১শে জানুয়ারী ২০২৩


নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব: চাই সতর্কতা ও সচেতনতা
নিপাহ ভাইরাস

ডা.মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ: শীতের মৌসুমে  সাধারণ রোগবালাই ও নিপাহ ভাইরাসের  আক্রান্ত বেশি হয়। নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণের ধরন কিছুটা করোনাভাইরাসের মতো। তবে এতে মৃত্যুহার করোনার চেয়ে অনেক বেশি। প্রতিবছর শীতকালে বাংলাদেশে এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। শীতকাল আসতেই খেজুরের রসের ঘ্রাণ ও স্বাদ নেওয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয়! অনেকেই এ সময় গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খান। আবার অনেকে খেজুরের রস চুলায় জ্বাল দিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর তৈরি করেন।


এছাড়া খেজুরের রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরনের পিঠার বেশ সুখ্যাতি আছে।


কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ মাস অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ করা হয়। এদেশে সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুরে।


তবে খেজুরের রস খাওয়ার মাধ্যমে নিপাহ ভাইরাস ছড়ানোর আতঙ্ক সবার মনেই রয়েছে। বিগত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, নিপাহ ভাইরাস এক ধরনের ‘জুনোটিক ভাইরাস’, যা প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়। পরে সেটি অন্যদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে।


এখন পর্যন্ত নিপাহর সংক্রমণ নওগাঁ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, ঠাকুরগাঁও, কুষ্টিয়া, মানিকগঞ্জ, রংপুরসহ দেশের ৩১টি জেলায় দেখা গেছে। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে মস্তিষ্কে ভয়াবহ প্রদাহ দেখা দেয়। এতে রোগী জ্বর ও মানসিক অস্থিরতায় ভোগেন। এক পর্যায়ে খিঁচুনিও দেখা দিতে পারে।


> কীভাবে খেজুরের রসে নিপাহ ভাইরাস ছড়ায়?


রস সংগ্রহের জন্য গাছিরা সারারাত একটি পাত্র গাছে ঝুলিয়ে রাখেন। যেখানে নিশাচর প্রাণী রাতে বাদুড় রস পান করতে আসে। বাদুড় যখন খেজুরের রসে মুখ দেয়। তখন তাদের মুখ থেকে নিঃসৃত লালা এমনকি তাদের মলমূত্র খেজুরের রসের সঙ্গে মিশে যায়।


এই দূষিত রস কাঁচা অবস্থায় খেলে নিপাহ ভাইরাস সরাসরি মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হতে পারে। ফলে জ্বর, মাথাব্যথা, দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট, কাশি, বমি, ডায়রিয়া নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। যা মৃত্যুর কারণ পর্যন্ত হতে পারে।


> খেজুরের রস যেভাবে খাবেন?


নিপাহ্ ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে এখনো কোনো টিকা বা কার্যকর চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। এ কারণে খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন।


প্রথমত রস সংগ্রহ ও সংরক্ষণের সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। চেষ্টা করতে হবে দ্রুত রস বিতরণ করার ও ঢেকে রাখার।


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ ভাইরাস থেকে নিস্তার পাওয়ার প্রধান উপায় হলো গাছগুলোর রস সংগ্রহের জায়গায় প্রতিরক্ষামূলক আবরণ বা স্যাপ স্কার্ট ব্যবহার করা। যেন বাদুড় এর সংস্পর্শে আসতে না পারে।


স্যাপ স্কার্ট হলো- বাঁশ, কাঠ, ধইঞ্চা, পাটের খড়ি বা পলিথিন দিয়ে বানানো বেড়া। যেটা রসের নিঃসরণের চোঙের মাথা থেকে কলসির মুখ পর্যন্ত পুরোটা গাছের সঙ্গে বেঁধে ঢেকে রাখা।


তবে আইসিডিডিআরবির গবেষকরা গোপন ক্যামেরার মাধ্যমে দেখতে পেয়েছেন, রসের হাড়ির চারপাশ জাল বা স্যাপ স্কার্ট দিয়ে ঢাকা থাকলেও বাদুর কলসির মুখ বরাবর প্রস্রাব করে। ফলে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায়।


তাই কাঁচা খেজুরের রস পান করা থেকে বিরত থাকুন। জীবন বাঁচাতে রস সেদ্ধ করে পান করুন। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো, রস সংগ্রহের পর আগুনে ৭০-৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপে উত্তপ্ত করতে হবে। তাহলেই ভাইরাস মরে যাবে।


খেজুরের রস এতোটা নিয়ম ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে সংগ্রহ করা হয়েছে কি না সেটা নিশ্চিত হওয়া জরুরি এজন্য বিশ্বস্ত সূত্রে রস সংগ্রহ করুন। আজ নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে কলাম  লিখেছেন, বাংলাদেশের বিশিষ্ট গবেষক ও জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ডা.এম এম মাজেদ তার কলামে লিখেন...খেজুর গাছের কাঁচা রস বাংলাদেশে অনেকের কাছেই বেশ জনপ্রিয় একটি পানীয়। এর থেকে গুড় বানিয়েও খাওয়া যায়। তবে কতজন এই বিষয়ে অবগত যে, কাঁচা খেজুরের রস পান অনেক ক্ষেত্রেই ভয়াবহ। কারণ এই রস পান করে ‘নিপাহ এন্সেফালাইটিস’ বা মস্তিষ্কেও প্রদাহ হয়ে মানুষ মৃত্যুর মুখেও পতিত হতে পারে। নিপাহ অপেক্ষাকৃত নতুন ভাইরাস, যা অতি সহজেই বাদুড় জাতীয় তৃণভোজী প্রাণী থেকে মানুষের দেহে প্রবেশ করে। শুধু বাদুড় নয়, নিপাহ শূকরের বর্জ্য থেকেও ছড়াতে পারে। ১৯৯৮ সালে মালয়েশিয়ার ‘সুঙ্গাই নিপাহ’ গ্রামে প্রথম এই ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়। সেখানে বাড়ির পোষ্য কুকুর, বিড়াল, ঘোড়া, ছাগলের দেহে এই ভাইরাসের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। ওই অঞ্চলে প্রতিটি বাড়িতেই শূকর প্রতিপালন হয়। গবেষণার পর দেখা যায়, শূকর থেকেই নিপাহ ভাইরাস ছড়িয়েছে পোষ্যদের দেহে।


এরপর ১৯৯৯ সালের মে মাসে সিঙ্গাপুরেও রোগটি শনাক্ত করা হয়। নিপাহ ভাইরাস হচ্ছে paramyxoviridae গোত্রের অন্তর্ভূক্ত গণ Henipavirus এর অন্তর্গত। এটি একটি আরএনএ ভাইরাস। মালয়েশিয়ার সুঙ্গাই নিপাহ গ্রামে প্রথম শনাক্ত করা হয় বলে ভাইরাসটির নামকরণ করা হয় নিপাহ ভাইরাস। ভাইরাসটি ড. কো বিং চুয়া আবিষ্কার করেন।


প্রথম যখন শনাক্ত করা হয় তখন নিপাহ ভাইরাস দ্বারা প্রায় ৩০০ জন লোক আক্রান্ত হয়েছিল। যাদের মধ্যে ১০০ জন রোগী মারা গিয়েছিল। রোগের ভয়াবহতা এতটাই মারাত্মক ছিল যে, এই ভাইরাসের প্রদুর্ভাব ঠেকাতে সে সময় ১০ লক্ষ শূকরকে ইউথ্যানেশিয়া বা ব্যথামুক্ত মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছিল। সে সময় মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। বাংলাদেশে ২০০১ সালে নিপাহ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল কুষ্টিয়া জেলায়। 


এরপর জানা যায়, বাদুড়ই নিপাহ ভাইরাস খেজুরের রসে ছড়িয়ে দিয়েছে। খেজুরের রসের হাঁড়িতে বাদুড়ের মল লেগে থাকতে দেখা যায়।


দেশে চলতি বছর নিপাহ ভাইরাসে আটজন আক্রান্ত হয়েছেন, এরমধ্যে মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের। এর আগে চলতি মাসে একজনের মৃত্যু হয়েছে। (বুধবার ১১ জানুয়ারি ২০২৩)  রাজশাহীর ওই নারীর কাঁচা খেজুরের রস পানের ইতিহাস ছিল। ২০২২ সালে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তিনটি ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছিল, যার মধ্যে দুজন মারা গেছে। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান এ তথ্য জানায়।


আইইডিসিআরের তথ্যমতে, ২০০১-২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে নিপাহ ভাইরাসে ৩০৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা মোট আক্রান্তের প্রায় ৭০ শতাংশ।


এরপর ২০০৩-২০০৫ সালেও এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিল। ২০১৩ সালে প্রকাশিত রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের জরিপ থেকে জানা যায়, দেশের ১৩টি জেলায় এই রোগ শনাক্ত করা হয়েছিল। জেলাগুলো হচ্ছে গাইবান্ধা, ঝিনাইদহ, কুড়িগ্রাম, কুষ্টিয়া, মাগুরা, মানিকগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নওগা, নাটোর, নীলফামারী, পাবনা, রাজবাড়ী, রাজশাহী। এসব জেলার ৮ মাস থেকে ৬০ বছর বয়সী মানুষ আক্রান্ত হয়েছিল। তবে এসব জেলা ছাড়াও এই রোগ আরও কয়েকটি জেলায় ছড়ানোরও কথা জানা যায়। 


বাংলাদেশের ন্যায় ভারতেও নিপাহ ভাইরাস আক্রান্ত রোগী প্রথম শনাক্ত করা হয়েছিল ২০০১ সালে। তখন শিলিগুড়ি শহরে জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে মোট আক্রান্ত হয়েছিল ৬৫ জন। যার মধ্যে ৪৫ জন মৃত্যুবরণ করেছিল। এই ঘটনার ৬ বছর পর ২০০৭ সালে আবারও নদীয়ায় ৫ জন রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। আক্রান্তদের সকলেই মারা যায়।


সাধারণত বাদুড়ের লালা, মলমূত্র, শ্বাস-প্রশ্বাস ও সংস্পর্ষের মাধ্যমে এ রোগ বিস্তার লাভ করে থাকে। বাদুড় যখন খেজুর গাছে বাঁধা হাঁড়ি থেকে রস পান করে তখন ভাইরাস কাঁচা খেজুর রসে বংশবৃদ্ধি করে। পরবর্তীতে এই রস পান করার মাধ্যমে মানুষ নিপাহ ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে। আবার আক্রান্ত মানুষ থেকে সুস্থ মানুষেও ভাইরাসটি রোগের সৃষ্টি করতে পারে। নিপাহ ভাইরাস বাদুড়ে থাকার সময় বাদুড়ে কোনো প্রকার রোগ লক্ষণ প্রকাশ পায় না। কিন্তু ভাইরাস মানবদেহ ও শূকরসহ অন্যান্য মধ্যবর্তী বাহকে প্রবেশ করলে ৭-১৪ দিনের মধ্যে নানারকম রোগ লক্ষণ প্রকাশ পেয়ে থাকে। নিপাহ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে 


> নিপাহ ভাইরাসের  আক্রান্ত রোগীদের  মাঝে যেই সব লক্ষণ প্রকাশ পায়ঃ-  * ইনফ্লুয়েঞ্জা বা সর্দি-জ্বরের মতো উপসর্গ দেখা দেয়। * আক্রান্ত ব্যক্তি জ্বরে ভোগেন। *গলা ব্যথা, মাথা ধরা শুরু হয়। * রোগীর বমি হয় এবং মাংসপেশী ব্যথা করে। * যদি সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে থাকে তবে শ্বাসযন্ত্রে মৃদু থেকে মারাত্মক প্রদাহ হয়। তখন মারাত্মক শ্বাসকষ্ট হয়। এভাবে নিউমোনিয়ার মতো লক্ষণ প্রকাশ পায়। * রোগ সংক্রমণের মাত্রা আরো বৃদ্ধি পেলে মস্তিষ্কের কোষ ও কলায় প্রদাহ হয়। ফলে ঝিমুনি, মাথা ঘোরা, অসংলগ্ন কথাবার্তা এবং স্নায়ুবিক নানা প্রকার উপসর্গ প্রকাশ পায়।সাধারণত যেকোনো রোগ থেকে বাঁচতে প্রতিরোধ ব্যবস্থা মেনেই চলাই হচ্ছে উত্তম পন্থা। এই রোগ প্রতিরোধের উপায়গুলো হলো।


> নিপাহ ভাইরাস আক্রান্ত হলে সাধারণ ব্যক্তি কে যে সব নিয়ম মেনে চলতে হবেঃ-   * আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে দূরে থাকা। এমনকি মৃতদেহ কবর দেওয়া, গোসল করানো, সৎকার করা ও মৃত ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়ার সময়ও যথাযথ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে,* উন্নতমানের মাস্ক বা মুখোশ পরিধান করতে হয়। * সাবান দিয়ে নিয়মিত হাত ধৌত করতে হবে। * আংশিক খাওয়া ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।* পাস্তুরিতকরণ ছাড়া ফলের জুস পান না করা। * যথাযথ ব্যবস্থাপনা না নিয়ে প্রাণীদের ঘরের আশপাশে না যাওয়া।* খেজুরের রস পান করার পূর্বে উত্তমরূপে ফুটিয়ে নিতে হবে। রস ফুটিয়ে ও খেজুর রসের গুড় খেতে কোনো সমস্যা নেই।* খেজুর রস সংগ্রহের হাড়ি ও পাইপ খোলা না রেখে ঢেকে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।* ফলমূল খাওয়ার পূর্বে ভালভাবে ধুয়ে নিতে হবে।* আপনার এবং শিশুদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখুন। *গৃহস্থালিতে ব্যবহৃত নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী যথাযথভাবে ঢেকে রাখতে হবে।


>  নিপাহ ভাইরাস রোগীর পথ্যাপথ্য


রোগীর পানির পিপাসা থাকলে ঠান্ডা পানি পান করাবে। সাগু, বার্লি,  দুধ, পাতলা চালের ভাত, দেশি বাচ্চা মুরগি ও কবুতরের সুপ তৈরি করে খাওয়াবেন। উচ্চ রক্তচাপ না থাকলে দেশি হাস মুরগীর ডিম এবং খাটি দুধ খাওয়াবেন। ফলের রস খাওয়াবেন কিন্তু কোনো কোম্পানির তৈরি জুস খাওয়াবেন না।


> হোমিও প্রতিকার 


হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা বিজ্ঞান একটি লাক্ষণিক চিকিৎসা বিজ্ঞান। এই চিকিৎসা বিজ্ঞানে কোনো রোগই কোনো সুর্নিদিষ্ট ওষুধ নেই। বিশেষ করে, আমাদের দেশে যে কোন ভাইরাস রোগ আক্রান্ত হয়, সব রোগের হোমিওপ্যাথিতে সঠিক চিকিৎসা আছে,এই জন্য প্রয়োজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক যিনি রোগীকে মাজমেটিক চিকিৎসা দিয়ে লক্ষণ নির্বাচন করে, যে কোনো রোগের লক্ষণের সাথে হোমিওপ্যাথিক যে কোনো ওষুধের লক্ষণের মিল হলেই সেই ওষুধকে সেই রোগে প্রয়োগ করলে রোগ পুরোপুরিভাবে নিরাময় হয় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বিজ্ঞান একটি লাক্ষণিক চিকিৎসা বিজ্ঞান। 


এই চিকিৎসা বিজ্ঞানে কোনো রোগই কোনো সুর্নিদিষ্ট ওষুধ নেই। বিশেষ করে, আমাদের দেশে যে কোন ভাইরাস রোগ আক্রান্ত হয় , সব রোগের হোমিওপ্যাথিতে সঠিক চিকিৎসা আছে,এই জন্য প্রয়োজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক যিনি রোগীকে মাজমেটিক চিকিৎসা দিয়ে লক্ষণ নির্বাচন করে, যে কোনো রোগের লক্ষণের সাথে হোমিওপ্যাথিক যে কোনো ওষুধের লক্ষণের মিল হলেই সেই ওষুধকে সেই রোগে প্রয়োগ করলে রোগ পুরোপুরিভাবে নিরাময় হয়। 


লক্ষণ অনুসারে অভিজ্ঞ চিকিৎসক গন প্রাথমিক ভাবে যেই সব ঔষধ নির্বাচন করে থাকে,যেমনঃ-সালফার,অরাম স্যালফ,  আর্নিকা মন্টেনা, আর্সেনিক এ্যালাম,  ইউক্যালিপটাস ইচিনেসিয়া, এগারকিাস মাস্ক,  একোনাইট ন্যাপ,  এডোনিস ভার্নেলিস, এপিস মেল, ওপয়িম, ক্যাল্কেরিয়া আর্স, ক্যাল্কেরিয়া কার্ব,  ক্যাল্কেরিয়া ফস, ক্রাটিগাস, কুপ্রাম মেট, গ্লোনাইন, জিঙ্কাম, টিউবারকুলিনাম, ট্যারেন্টুলা, নাক্স মস্কেটা, নেট্রাম সালফ, নেট্রাম মিউর, পডোফাইলাম, পাইরোজেন, প্যাসিফ্লোর, ব্যাপ্টিসিয়া,বেলেডোনা, ব্রায়োনিয়া, ভিস্কাম, এ্যালাম, ভিরেট্রাম এ্যাল্বাম, ভিরেট্রাম ভিরিডি, মার্কসল, মেডোরিনাম, স্ট্রমোনিয়াম, হাইপেকিাম,হাইড্রোফোবিনাম,হায়োসায়েমাস, হায়োসিন হাইড্রোব্রোমাইড সহ আরো অনেক মেডিসিন লক্ষনের উপর আসতে পারে।  


পরিশেষে বলতে চাই, নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুহার অনেক বেশি। জানা গেছে যে বাদুড় এই ভাইরাস ছড়ায়। বাদুড় থেকে খেজুরের রসে ও রস থেকে মানুষের শরীরে এ ভাইরাস এসেছে। তাই খেজুরের কাঁচা রস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এ ব্যাপারে জনসচেতনতা বাড়ানো জরুরি।আসুন সবাই সচেতন হই,প্রাথমিক চিকিৎসা কিংবা ওষুধের মাধ্যমে প্রতিকার না পেলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে পরবর্তী পদক্ষেপ নিন।সতর্কতা ও সচেতনতাই এই রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের প্রধান উপায়।

লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি