স্ত্রীর মৃত্যু সংবাদ শুনে হাসপাতাল ছেড়ে পালাল স্বামী!


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬:৫৬ পূর্বাহ্ন, ৩১শে জানুয়ারী ২০২৩


স্ত্রীর মৃত্যু সংবাদ শুনে হাসপাতাল ছেড়ে পালাল স্বামী!
হাসপাতাল

ভোলার চরফ্যাশনে ১০০ শয্যা একটি হাসপাতালে স্ত্রীর মৃত্যু সংবাদ শোনা মাত্রই লাশ ফেলে পালালো চরফ্যাশন উপজেলাই এক স্বামী পাষন্ড স্বামী। 


সোমবার (৩০ জানুয়ারি) সোমবার বিকেল ৩টায় চরফ্যাসন উপজেলা ১০০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে এই ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।  শশীভূষণ থানা পুলিশ লাশ হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে ভোলা মর্গে পাঠিয়েছে।


চরফ্যাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. অমিতাভ দে জানান,বিকেল ৩টায় গুরুতর অসুস্থ ইয়াছমিন(২৫)কে মৃত অবস্থায় হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসেন স্বামী নাঈম হোসেন। ইয়াছমিন বিষপান করেছেন বলে নাঈম জানান। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে রোগীনির মৃত্যুর বিষয়টি জানানোর পর পরই স্বামী নাঈম স্ত্রীর লাশ ফেলে পালিয়ে যান। ওই চিকিৎসক জানান, ইয়াছমিনের মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট নয়।


জরুরী বিভাগের কর্মরত সাব এ্যাসিসটেন্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার জাহিদ হোসেন জানান, নাঈম ভাড়ায় চালিত এ্যাম্বুলেন্সের চালক এবং নিজের এ্যাম্বুলেন্সে করে অসুস্থ স্ত্রীকে তিনি হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে ।


শশীভূষণ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সমেদ আলী জানান,ইয়াছমিনের বাবার বাড়ি ঢাকার গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জ থানার বাশাইল গ্রামে। শশীভূষণ থানার রসুলপুর ইউনিয়নের শশীভূষণ গ্রামের মৃত ইদ্রিস মাঝি এবং স্কুল শিক্ষিকা নাজমা বেগমের ছেলে নাঈমের দ্বিতীয় স্ত্রী ইয়াছমিন। নাঈম সৌদি আরব প্রবাসী ছিলেন। সৌদিতে প্রবাসী ছিলেন ইয়াছমিনও। প্রবাসে থাকা কালে ইয়াছমিন এবং নাঈমের সাথে প্রেম-প্রণয় ঘটে। তিন বছর আগে সৌদি ছেড়ে নাঈম-ইয়াছমিন দেশে ফিরে বিয়ে করেন। তাদের এক বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।


নিহত ইয়াছমিনের ভাই কাতার প্রবাসী আল আমীন এবং বোন রহিমা বেগম দাবী করেন, বোনের সংসারে কলহ লেগেই ছিল। নিত্য কলহের জের ধরে নাঈম তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছেন বলেও তারা দাবী করেছেন।


স্থানীয়রা জানান,নাঈমের বাবা ইদ্রিস মাঝির মৃত্যুর পর মা স্কুল শিক্ষিকা নাজমা বেগম আবুল বাসার নামের এক ব্যাক্তিকে বিয়ে করেন। নাজমাকে বিয়ে পর আবুল বাশার নিজেও দ্বিতীয় বিয়ে করে ওই স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় থাকেন। ইয়াছমিনের মৃত্যুর দিন গতকাল রোববার নাজমা তার স্বামী বাশারের সাথে ঢাকায় ছিলেন।


নাজমা বেগম শশীভূষণ গ্রামের পৈত্রিক বাড়িতে ওয়ারিশসূত্রে পাওয়া জমিতে ঘর করে সেখানেই বসবাস করতেন। মা নাজমার সাথে নাঈম স্ত্রী ইয়াছমিনকে নিয়ে ওই একই ঘরে থাকতেন। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নিত্য কলহ ছিল। তবে গতকাল রোববার দুপুরে বিষপান বা মৃত্যুর কারণ নিয়ে পাড়া প্রতিবেশীরা বেশী কিছু বুঝতে পারছেন না।ঘটনার পর থেকে কেউ আর ঘরে নেই।


শশীভূষণ থানার অফিসার ইন-চার্জ মিজানুর রহমান পাটওয়ারী জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। লাশ ময়না তদন্তে পাঠানোর প্রস্ততি চলছে।