শেষ হলো তিন দিনব্যাপী অদ্বৈত গ্রন্থমেলা


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬:৩৬ পূর্বাহ্ন, ২৪শে ফেব্রুয়ারি ২০২৩


শেষ হলো তিন দিনব্যাপী অদ্বৈত গ্রন্থমেলা
শেষ হলো তিন দিনব্যাপী অদ্বৈত গ্রন্থমেলা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শেষ হলো প্রথমবারের মত তিন দিনব্যাপী অদ্বৈত গ্রন্থমেলা। প্রথমবারেই অদ্বৈত মল্লবর্মণ সাহিত্য পুরস্কার পেলেন কবি জয়দুল হোসেন।


তিতাস বিধৌত অঞ্চল মালোপাড়ার মালোদের অমূল্য রত্ন ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ উপন্যাসের শ্রষ্ঠা অদ্বৈত মল্লবর্মণের সৃষ্টি ও কৃষ্টি কালচার জাগিয়ে রাখতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের গোকর্ণঘাটের জন্মভিটায় তার নামানুসারে অদ্বৈত গ্রন্থমেলার আয়োজন করা হয়েছে। 


গত ২০, ২১ ও ২২ ফেব্রুয়ারি তিন দিনব্যাপী অদ্বৈত গ্রন্থমেলার আয়োজনে ভিন্নমাত্রা যোগ করা হয়েছে। অদ্বৈত মল্লবর্মণের জীবন ও কর্মের উপর গবেষণার স্বীকৃতিস্বরূপ মুক্তিযুদ্ধের গবেষক ও কবি জয়দুল হোসেনকে অদ্বৈত মল্লবর্মণ স্মৃতি গ্রন্থাগার ও গবেষণা কেন্দ্র কর্তৃক সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩ প্রদান করা হয়েছে।


তিন দিনব্যাপী অদ্বৈত গ্রন্থমেলায় ২৫টি বইয়ের স্টল বরাদ্দে ছিল ভিন্নতরো। মালোপাড়ার নির্মলা বর্মণের নেতৃত্বে তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি পরিবেশন করেছে। অদ্বৈত গ্রন্থমেলার প্রথম দিন ২০ ফেব্রুয়ারি ‘অদ্বৈত গ্রন্থমেলা ২০২৩’ এর উদ্বোধন করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি। 


বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবনিযুক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র মিসেস নায়ার কবির, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. রুহুল আমিন, সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন, কবি আমীর হোসেন, মানিক রতন শর্মা, মো. আব্দুর রহিম, সোপানুল ইসলাম সোপান ও মানবর্দ্ধন পাল। 


উদ্বোধনী দিনে সঙ্গীত পরিবেশন করেন আনন্দলোক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করেন তিতাস আবৃত্তি সংগঠন।


২১ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার দ্বিতীয়বারের মত নির্বাচিত মেয়র নায়ার কবির, বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান লায়ন ফিরোজুর রহমান ওলিও, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে আগত কবি বিমলেন্দ্র চক্রবর্তী ও কবি গৌরি বর্মণ। দ্বিতীয় দিনে সোহেল আহাদের গ্রন্থনা ও নুসরাত জাহান বুশরা’র নির্দেশনায় ‘জাগো মানুষের দৃপ্ত শক্তি’ বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করেন সাহিত্য একাডেমির আবৃত্তি শিল্পীবৃন্দ। অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন সুরতাল সঙ্গীত নিকেতনের শিল্পীবৃন্দ।


২২ ফেব্রুয়ারি, বুধবার বিকালে তিন দিনব্যাপী ‘অদ্বৈত গ্রন্থমেলা ২০২৩’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম গবেষক কবি জয়দুল হোসেনকে অদ্বৈত মল্লবর্মণ সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করা হয়। তাকে উপহার হিসেবে সম্মাননা স্মারক, উত্তরীয়, একটি কলম এবং নগদ ২০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।


সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার। 


বিশেষ অতিথি ছিলেন সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন, আইডিয়াল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ সোপানুল ইসলাম সোপান, ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ফারুক আহমেদ, একই ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আলহাজ্ব ফেরদৌস মিয়া, সাবেরা সোবহান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. আব্দুর রহিম, কথাসাহিত্যিক ও অদ্বৈত গবেষক মানিকরতন শর্মা। 


তিন দিনব্যাপী অদ্বৈত গ্রন্থমেলায় সভাপতিত্ব করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ‘অদ্বৈত গ্রন্থমেলা ২০২৩’ এর আয়োজক কমিটির আহবায়ক মো. আ. কুদ্দুস। 


তিনি বলেন, তিতাস একটি নদীর নাম উপন্যাসের স্রষ্টা অদ্বৈত মল্লবর্মণ। অদ্বৈত মল্লবর্মণ শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সম্পদ নন, তিনি সমগ্র বাংলার সম্পদ। তাকে চির অমর করে ধরে রাখতে আমরা এই অদ্বৈত গ্রন্থমেলার আয়োজন করেছি। অদ্বৈত গ্রন্থমেলা থেকে প্রতি বছরই আমরা ধারাবাহিকভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লেখক, গবেষকদের সম্মাননা প্রদানের পরিকল্পনা নিয়েছি। 


প্রথমবারে আমরা অদ্বৈত গবেষক, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুক্তিযুদ্ধের গবেষক ও কবি জয়দুল হোসেনকে অদ্বৈত মল্লবর্মণ সাহিত্য পুরস্কার দিয়েছি। কবি জয়দুল হোসেনের কাছ থেকে গবেষণা ও তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে দেশের স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গ ডক্টরেট অর্জন করেছেন। 


সমাপনী অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবরনি আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র এবং সঙ্গীত পরিবেশন করেন জেলা শিল্পকলা একাডেমি। মেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার বলেন, অদ্বৈত মল্লবর্মণ ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ লিখে বাংলা সাহিত্যে অমরত্য লাভ করেছেন।, অদ্বৈত মল্লবর্মণের জন্মভিটায় অদ্বৈত মল্লবর্মণ স্মৃতি গ্রন্থাগার ও গবেষণা কেন্দ্রের তিন দিনব্যাপী ‘অদ্বৈত গ্রন্থমেলা ২০২৩’ সত্যি প্রশংসার দাবিদার।