গলাচিপায় মুখপোড়া হনুমান পিটিয়ে হত্যা, পশুপ্রেমীদের ক্ষোভ
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০:৪৫ অপরাহ্ন, ২৬শে ফেব্রুয়ারি ২০২৩

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার উত্তর আমখোলা গ্রামের স্থানীয় একদল উচ্ছৃক্সখল মানুষ নির্মম ভাবে পিটিয়ে একটি মুখপোড়া হনুমান হত্যা করে মাটি চাপা দিয়েছে।
শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে পশুপ্রেমী সংগঠন এনিমেল লাভার অব পটুয়াখালী। বনবিভাগের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকালে হটাৎ করে ওই এলাকায় হনুমানটির আর্বিভাব ঘটে। হনুমানটি এগাছে ওগাছে লাফাতে শুরু করে। এলাকায় এরআগে কখনোই হনুমান দেখা যায়নি। যে কারণে হনুমানের আকস্মিক আর্বিভাবে উৎসুক মানুষের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়ায় এবং হনুমানটি ঘিরে ভিড় জমে।
খবর পেয়ে পটুয়াখালী সদর থেকে বনবিভাগের লোকজন ছুটে আসে। তারা সারাদিন ওই এলাকায় অবস্থান করে মানুষজনকে আশ্বস্ত করে যে, হনুমানটি মানুষের কোনো ক্ষতি করবে না। কিন্তু বনবিভাগের লোকজন চলে যাওয়ার পরই সন্ধ্যার দিকে স্থানীয় একদল উগ্র মানুষ হনুমানটির ওপর ঝাপিয়ে পড়ে এবং পিটিয়ে হত্যা করে। এক পর্যায়ে মৃত হনুমানটিকে মাটি চাপা দেয়।
পটুয়াখালী সদর উপজেলা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা নয়ন মিস্ত্রি জানান, হনুমানের খবর পাওয়ার পর তারা ওই এলাকায় লোক পাঠান। তারা সারাদিন হনুমানটিকে পাহাড়া দেন। কিন্তু বিকালে বন বিভাগের লোক সেখান থেকে চলে আসার পরে স্থানীয় লোকজন হনুমানটিকে পিটিয়ে হত্যা করে মাটি চাপা দেয়। পরে লোকমুখে খবর পেয়ে তারা মৃত হনুমানটিকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী নিয়ে যান। তিনি আরও জানান, এ প্রজাতির হনুমান সাধারণত পাহাড়ি এলাকায় থাকে। কিন্তু কিভাবে এটি এখানে এসেছে, তা বলা মুশকিল।
তবে ধারণা করা হচ্ছে অন্য এলাকা থেকে মালবাহী কোনো পরিবহনের মাধ্যমে এটি এলাকায় আসতে পারে। উর্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে যারা হনুমানটিকে পিটিয়ে মেরেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, হনুমান হত্যায় ক্ষোভ জানিয়ে ‘এনিমেল লাভার অব পটুয়াখালী’ সংগঠনের সদস্য আহসানউল্লাহ হাসান মুছা বলেন, হনুমানটি পটুয়াখালীতে এসেছে দিন কয়েক আগে। মানুষের কোনো ক্ষতি করেনি। খুবই শান্ত ছিল। কিন্তু কেন হনুমানটিকে পিটিয়ে হত্যা করা হলো? এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি না দেওয়া হলে ভবিষ্যতে এ রকম ঘটনা আরও ঘটবে।
এ বিষয়ে গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ শোনিত কুমার গায়েন জানান, লোকমুখে শুনেছি একটি বাসায় হনুমানটি ঢুকে এক বাচ্চাকে আঘাত করে। পরে ওই বাচ্চার মায়ের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে যে কোন এক ব্যক্তির লাঠির আঘাতে হনুমানটি মারা যায়। পরে বনবিভাগের লোকজনকে খবর দেয়া হয়। তারপরও বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
আরএক্স/