চট্টগ্রামে পাসপোর্টের সার্ভার ডাউন, ভোগান্তিতে মানুষ


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬:৩০ পূর্বাহ্ন, ২৮শে ফেব্রুয়ারি ২০২৩


চট্টগ্রামে পাসপোর্টের সার্ভার ডাউন, ভোগান্তিতে মানুষ
চট্টগ্রামের বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস

সকাল ৮টা থেকে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে পাসপোর্টের আবেদন জমা দিতে এসে অপেক্ষায় রয়েছেন আতুরার ডিপো এলাকার হাসিনা বেগম। 


সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও শেষ পর্যন্ত জমা দিতে পারেননি আবেদন। শুধু হাসিনা বেগমই নন, সার্ভার জটিলতার কারণে পাসপোর্টের জন্য আবেদন জমা দিতে পারেননি কমপক্ষে চট্টগ্রামের সাড়ে তিনশ মানুষ। সার্ভার ডাউন থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। 


হঠাৎ করেই জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য ভাণ্ডারের সাথে সার্ভারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় মেশিন রেডিবল পাসপোর্টের (এমআরপি) নবায়নের আবেদন নেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস। তবে সার্ভার কখন ঠিক হবে সেবিষয়ে কিছুই জানাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। যদিও ই-পাসপোর্টের আবেদনের ক্ষেত্রে কোনো জটিলতা নেই বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 


জানা যায়, চট্টগ্রামের বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে প্রতিদিন আবেদনপত্র জমা, ছবি ও আঙ্গুলের ছাপ দেওয়া আর ইস্যু করা পাসপোর্ট নিতে আসেন গড়ে ৯০০ মানুষ। সার্ভার ডাউন হওয়ার কারণে বিপাকে পড়তে হয়েছে এসব মানুষদের। প্রচণ্ড ভিড়ে অনেকেই কাজ ছাড়াই ফিরে গেছেন। আবার দূরদূরান্ত থেকে আসা অনেকেই অপেক্ষায় আছেন সার্ভার ঠিক হওয়ার আশায়। 


সরেজমিনে দেখা যায়, ১০২ ও ১০৩ নম্বর কক্ষের সামনে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ। তাদের কেউ ই-পাসপোর্ট আবার কেউবা এমআরপি পাসপোর্টের জন্য দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। তবে সার্ভার জটিলতায় আটকে গেছে মেশিন রেডিবল পাসপোর্ট (এমআরপি) নবায়ন করতে আসা সেবাগ্রহীতাদের। 


তাদেরই একজন ফটিকছড়ি এলাকার ওসমান গনি। তিনি বলেন, ‘আগে আগে কাজ শেষ করার আশায় সকাল ৭টায় এসেছি। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে যখন ভেতরে গেলাম তখন জানতে পারলাম সার্ভারে সমস্যা। তাই কাজ হবে না। তাই অপেক্ষায় আছি। কখন ঠিক হবে সেটাও বলতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। ছয় সাত ঘণ্টা অপেক্ষা করেও যদি কাজ না হয় তাহলে কী করবো বলেন! তাও আরেকটু অপেক্ষা করে দেখি কি হয়।’


আরেক ভুক্তভোগী মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘এখন সমস্যা মেশিনের। উনাদের নাকি হাত নেই। কর্তৃপক্ষ বলছে সার্ভার যেকোনো সময় ঠিক হয়ে যেতে পারে আবার নাও পারে। সেটা এক ঘণ্টাও হতে পারে আবার ৫ ঘণ্টাও লাগতে পারে। আমরা চাকরিজীবী মানুষ। সবসময়ই তো অফিস ছুটি দিবে না। আজকে আসলাম ছুটি নিয়ে। এতোক্ষণ অপেক্ষা করেও যদি কাজটা না হয় তাহলে ঝামেলায় পড়ে যাবো।’ 


সার্ভার ডাউন হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক মো. আবু সাঈদ বলেন, ‘সকাল থেকে সার্ভার ডাউন হয়ে আছে। জার্মানির একটি প্রতিষ্ঠান এ সার্ভার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। আমরা ঢাকায় জানিয়েছি। তারা জানিয়েছে কাজ চলছে। এখন কখন ঠিক হবে সেটা বলা যাচ্ছে না। সেটা কয়েক মিনিটও হতে পারে আবার কয়েক ঘণ্টাও হতে পারে। আমরা সেবাগ্রহীতাদের বলেছি যারা অপেক্ষা করতে পারবে না তারা যেন অন্য দিন আসেন। আমরা যোগাযোগের নম্বরও দিয়ে দিয়েছি যাতে তারা যোগাযোগ করে আসেন।’ 


তিনি আরও বলেন, ‘মেশিন যেকোনো সময় নষ্ট হতে পারে। সেখানে আমাদের কোনো হাত নেই। মূলত জাতীয় পরিচয়পত্র আর পেমেন্টের ক্ষেত্রে অনলাইনের কাজটা করা যাচ্ছে না। এটা শুধু মেশিন রেডিবল পাসপোর্টের সার্ভারে জটিলতা দেখা দিয়েছে। ই-পাসপোর্টের কাজ চলছে। সেখানে কোনো সমস্যা নেই।’ 


এর আগে গত বছরের মার্চেও একবার সারাদেশে ই-পাসপোর্টের সার্ভার ডাউন হয়ে যায়। ওই সময় নতুন ডেটা সেন্টার ও পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের কারণে বন্ধ রাখে ই-পাসপোর্টের অনলাইন পোর্টাল। ফলে ওই সময় ই-পাসপোর্টের সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষকে বিপাকে পড়তে হয়েছিল।