১০ টাকার জন্য শিশুকে হত্যা, মায়ের কারাদণ্ড
জনবাণী ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন, ২রা মার্চ ২০২৩
লক্ষ্মীপুরে ১০ টাকা চাওয়ায় শিশু কাউছারকে হত্যার ঘটনায় মা স্বপ্না বেগমকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে আসামির ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়।
কিন্তু আসামির বয়স, আচরণ ও শিশু বাচ্চাকে লালন পালনসহ মানবিক কারণে বিচারক তাকে প্রোভিশনাল রায় দেন। এতে আসামি তার বাড়িতেই থাকবেন। এরমধ্যে তিনি কোন অপরাধে জড়াতে পারবেন না। এটি জেলা সমাজসেবা কার্যালয় তদারকি করবে।
বুধবার (১ মার্চ) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত স্বপ্না সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের চররুহিতা গ্রামের হাসানুজ্জামানের মেয়ে।
জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর ১০ টাকা চাওয়ায় শিশু কাউছারকে তার মা স্বপ্না গলা টিপে হত্যা করে। এর ১০ বছর আগে বাদী রাসেল হোসেনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে স্বপ্নার বিয়ে হয়। তাদের সংসারে কাউছার ও ছাব্বির হোসেন দুটি সন্তান জন্ম নেয়। ২০১৭ সালে রাসেল চট্টগ্রামের এক নারীকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এনিয়ে স্বপ্নার সঙ্গে তার কলহ সৃষ্টি হয়। এতে প্রায়ই স্বপ্না বিভিন্ন কারণে তার দুই ছেলেকে মারধর করতো।
ঘটনার দিন স্বপ্না প্রতিবেশি সেলিনা বেগমের ঘরে পিঠা বানাচ্ছিল। কাউছার তখন সেখানে গিয়ে তার কাছে কিছু খাওয়ার জন্য ১০ টাকা চায়। টাকা না দিয়ে তিনি ছেলেকে ঘরে গিয়ে ভাত খাওয়ার জন্য বলে। এতে কাউছার ঘরে চলে যায়। এরপর তিনিও ঘরে যান। তখন তিনি ছেলেকে ভাত খেয়ে ঘুমানোর জন্য বকেন। কিন্তু কাউছার ভাত খাবে না, তাকে ১০ টাকা দিতে হবে বলে বায়না ধরে। এতে উত্তেজিত হয়ে তিনি খাটের ওপর ছেলেকে গলা টিপে হত্যা করে। ছেলে মারা গেছে বুঝতে পেরে তিনি ঘটনাটি ফাঁসের ঘটনা ও অন্য কেউ হত্যা করেছে বলে প্রচারণা চালায়।
ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় পরদিন ১৫ অক্টোবর রাসেল বাদী হয়ে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে ২০২০ সালের ১০ মার্চ স্বপ্নার বিরুদ্ধে পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেয়।