মরদেহ নড়েচড়ে ওঠার পর স্বজনদের ছোটাছুটি, অতঃপর...


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


মরদেহ নড়েচড়ে ওঠার পর স্বজনদের ছোটাছুটি, অতঃপর...

মরদেহ ধোয়ানো খাট থেকে মরদেহ তুলে হাসপাতালে নিয়েও বাঁচানো গেল না মুক্তা খাতুনকে। জরুরি বিভাগের চিকিৎসকও মৃত ঘোষণা করলেন। এর আগে এক ক্লিনিক থেকে মুক্তাকে মৃত ঘোষণার করার পর বাড়িতে নিয়ে চলছিলো দাফনের প্রস্তুতি। ধোয়ানোর সময় লাশ নড়ে ওঠার গুজবে গৃহবধূর মরদেহ নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ছুটে যান স্বজনরা।  

শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা উপজেলার রোয়াকুলি গ্রামের পূর্বপাড়ায় ঘটে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শতশত মানুষ ভিড় জমায় রোয়াকুলি গ্রামে৷ এনিয়ে গ্রামজুড়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। চলছে নানান কুসংস্কার আলোচনা- সমালোচনার ঝড়।

শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাত ১২টার দিকে গ্রাম্য কবরস্থানে মুক্তা খাতুনের মরদেহ দাফন সম্পন্ন হয়। গৃহবধূ মুক্তা খাতুন (২৫)  আলমডাঙ্গা উপজেলার রোয়াকুলি গ্রামের পূর্বপাড়ার দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী। মেঘলা খাতুন নামে তার ৯ মাস বয়সী এক শিশুকন্যা আছে। 

পরিবারের সদস্যরা জানায়, শুক্রবার সকাল ৬টার দিকে মুক্তা খাতুন অসুস্থ অনুভব করলে আলমডাঙ্গা শহরের ফাতেমা ক্লিনিকে ভর্তি  করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল ৪টার দিকে মুক্তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। পরে তার মরদেহ নেয়া হয় নিজবাড়ি রোয়াকুলি গ্রামের পূর্বপাড়ায়। সেখানে চলছিলো দাফনের প্রস্তুতি। রাত ৮ টার দিকে মরদেহ ধোয়ানোর (গোসল) জন্যও পৌঁছেছেন কয়েক নারী। ধোয়ানোর সময় লাশ নড়েচড়ে উঠেছে এবং শরীর গরম রয়েছে বলে দাবি করেন মরদেহ ধৌতকারীরা। তাদের কথা শুনে ধোয়ানো বন্ধ করে দেয় প্রিয়জনকে বাঁচাতে মরিয়া স্বজনরা। রাত পৌনে ৯টার দিকে মুক্তা খাতুনের মরদেহ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়। এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রোগী স্বজনদের ভিড় জমে। পরে চিকিৎসক পরিক্ষা-নিরিক্ষার পর মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে, মুক্তা খাতুনের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয় পুলিশ। ফলে মুক্তার মরদেহ পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করা হয়। 

মুক্তা খাতুনের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে, আগে থেকেই মুক্তা খাতুন হৃদরোগে আক্রান্ত ছিলো। এছাড়াও ছিলো রক্তচাপের সমস্যাও। শুক্রবার ভোরে হঠাৎ রক্তচাপ (ব্লাডপ্রেশার) কমে যায় মুক্তার। দু’চোখে ঝাপসা দেখতে থাকে। ভোর ৬ টার দিকে তাকে নেয়া হয় আলমডাঙ্গার ফাতেমা ক্লিনিকে। 

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. কুদরত এ খোদা জনবাণীকে বলেন, হাসপাতালে নেয়ার আগেই মুক্তা খাতুনের মৃত্যু হয়েছে। বেশকিছু সময় আগেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মরদেহ নড়েচড়ে ওঠার কথা শুনে ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রাম বা ইসিজি পরীক্ষা করার পর নিশ্চিত হয়ে মুক্তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।

এসএ/