ক্ষেতলালে গৃহকর্মের পাশাপাশি ঝুড়ি তৈরি করে বাড়তি আয় করছে নারীরা
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন, ৯ই মার্চ ২০২৩
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে কচুরিপানাকে উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে ঝুড়ি তৈরির কাজ করছেন নারীরা। গৃহকর্মের পাশাপাশি ঝুড়ি তৈরির এ কাজ করে বাড়তি আয় করছে তারা। নারীদের তৈরি এসব ঝুড়ি যাচ্ছে দেশের বাহিরে।
বুধবার (৮ মার্চ) পৌর এলাকার ফকিরপাড়া ও সূর্যবান গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র। বেশকিছু বাড়িতে নারীরা এই ঝুড়ি তৈরির কাজ করছেন। কাজের ফাঁকে নিজ বাড়িতে বসে বিভিন্ন আকৃতির ঝুড়ি তৈরি করছেন তারা। এসব ঝুড়ি বাহারি রং করার পর পাঠানো হয় দেশের বাহিরে।
পৌর মহল্লার ফকিরপাড়া এলাকার শ্রী বিকাশ চন্দ্রের স্ত্রী বৃষ্টি রানী জানান, নিজ গ্রামের মিঠুর স্ত্রী রোমানা বেগমের মাধ্যমে এই ঝুড়ি তৈরির কাজে আগ্রহী হন। তার গ্রামের প্রায় পঞ্চাশজন মহিলা এই ঝুড়ি তৈরির কাজের সাথে সম্পৃক্ত। প্রথমে তারা রোমানার বাড়িতে ঝুড়ি তৈরির প্রশিক্ষণ নেন এবং পরে নিজ বাড়িতে বসে এসব ঝুড়ি তৈরি করেন। কচুরিপানাসহ ঝুড়ি তৈরির যাবতীয় উপকরণ রোমানা তাদের সরবরাহ করে। তারা শুধু নিজের শ্রম দ্বারা ঝুড়ি তৈরি করে। ঝুড়িগুলো তৈরির ক্ষেত্রে আকৃতি অনুয়ায়ী ২০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত মজুরি পান। সংসারের কাজের পাশাপাশি এই ঝুড়ি তৈরি করে মাসে সে তিন-চার হাজার টাকা বাড়তি আয় করতে পারে।
সূর্যবান গ্রামের নবিরুল মন্ডলের স্ত্রী শান্তনা আক্তার বলেন, আমরা কচুরিপানা দিয়ে প্রায় এগারো থেকে বারটি আইটেমের ঝুড়ি তৈরির কাজ শিখেছি। আমি রোমানার মাধ্যমে কাজে আগ্রহী হয়েছি আমার দেখাদেখি আমার গ্রামের প্রায় ২০-৩০ জন নারী এখন এই কাজ করে। ঝুড়িগুলো বিভিন্ন আকৃতির হওয়ায় তৈরির ক্ষেত্রে আমরা আলাদা আলাদা মজুরি পাই। বর্তমানে আমি যে মডেলের ঝুড়ি তৈরি করছি সেগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন ২০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৬৫ টাকা মজুরি পাই। সংসারের কাজের পাশাপাশি এই ঝুড়ি তৈরি করে আমি বাড়তি আয় করতে পারি।
ঝুড়ি তৈরির উপকরণ সংগ্রহকারী পৌর এলাকার ফকিরপাড়া গ্রামের মিঠুর স্ত্রী রোমানা বলেন, আমি আগে অনলাইনের মাধ্যমে সুতার কাজ করতাম। পরে জয়পুরহাটের হেলকুন্ডা গ্রামের মা হস্ত শিল্প সংস্থার প্রধান মাহফুজ আলম সবুজ ভাইয়ের সাথে পরিচয় হয়। তখন তিনি আমাকে এই ঝুড়ি তৈরির কাজ দেখান, কাজ দেখে আমি আগ্রহী হই এবং কাজ করি। পরে আমার দেখাদেখি উপজেলায় এখন প্রায় ১০০ জন মহিলা এই ঝুড়ি তৈরির কাজ করছে। আমি এখন শুধু যারা ঝুড়ি তৈরির কাজ করে তাদের বিভিন্ন উপকরণ পৌঁছে দেই এবং ঝুড়ি বুঝে নেই এই দায়িত্ব পালন করি। ঝুড়ি গুলো বুঝে নিয়ে আমি সেগুলো জয়পুরহাটে সবুজ ভাইকে দেই। সবুজ ভাইয়ের বড় ভাই পাবনা বিডি ক্রিয়েশন কোম্পানিতে চাকুরী করেন। সবুজ ভাই এসব ঝুড়ি তার কাছে পাঠায় ওখানে বাহারি রং করার পরে নদী পথে জাহাজে করে এসব ঝুড়ি বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়।