রোজার মাস সন্নিকটে, দিশেহারা বেড়ার নিম্ন আয়ের মানুষ


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১:৫৯ অপরাহ্ন, ১৩ই মার্চ ২০২৩


রোজার মাস সন্নিকটে, দিশেহারা বেড়ার নিম্ন আয়ের মানুষ
ফাইল ছবি

পবিত্র রমজান মাস সন্নিকটে চলে আসায় বেড়া উপজেলায় ক্রমাগতই নিত্যপণ্যের মূল্যের উর্ধ্বগতিতে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন দূর্বিষহ হয়ে পড়েছে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে বিভিন্ন অজুহাতে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষকে ফেলেছে বিপাকে। একবার যে পণ্যের দাম বাড়ে তা আর কমে না। বাজারে চাল, ডাল, তেল, চিনি, শাক-সব্জি থেকে শুরু করে সব ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।


এ ছাড়া কয়েক দফায় বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। বাজারের উপর প্রশাসনের নেই কোন নিয়ন্ত্রণ। মাত্রাতিরিক্ত হারে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অস্বাভাবিক এবং আকস্মিক মূল্য বৃদ্ধিতে মানুষের জীবনে নেমে এসেছে নানা অশান্তি।


বর্তমানে নিত্য পণ্যের মূল্য উর্ধ্বগতির কারণে নানা অসুবিধা ও কষ্টের মধ্যে দিন পার করছে বেড়া উপজেলার অধিকাংশ মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। যারা লোক লজ্জায় না পারছে কাউকে কিছু বলতে, না পারছে কারও কাছে হাত পাততে। রোজা সন্নিকটে চলে আসায় যখন হাট-বাজারে অর্থশালী বিত্তবান লোকজন রোজার প্রস্তুতি হিসেবে আগেই ব্যাগ ভর্তি মাসের বাজার সদাই করছে তখন মধ্যবিত্তরা তাকিয়ে দেখছে আর আক্ষেপ করে হতাশায় ভুগছে।


সরেজমিনে সোমবার (১৩ মার্চ)হাটবার নাকালিয়া বাজারে গেলে কথা হয় চর-সাঁড়াশিয়া গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সাত্তার ব্যাপারীর সাথে। তিনি বলেন, আগে সংসার চালাতে মাসে যে টাকা লাগতো বর্তমানে তার চেয়ে তিনগুণ টাকা বেশী লাগে। কিন্তু আয় তো বাড়েনি। তার উপর সামনে রমজান মাস, একটু ভালো খাবার, ইফতারি কেনাকাটাসহ এ মাসে অনেক বাড়তি খরচ লাগে। এ মাসে কেমন করে এসব করবো, পরিবারের লোকজনকে কি খাওয়াবো - এসব ভেবে হতাশায় ভুগছি।


নাকালিয়া বাজারের হোটেল ব্যবসায়ী আ. রউফ বলেন, বাজারের নিত্য প্রয়োজনীয় সব কিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় হোটেল ব্যবসায় মন্দা ভাব দেখা দিয়েছে। আগের মতো সকালে আর নাস্তা করে না মানুষ। তার উপর রোজা আসন্ন। কিভাবে সংসার চালাবো ভেবে পাচ্ছি না।


মিষ্টির দোকানী আলম বলেন, সব পণ্য সামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় মিষ্টির দামও বেড়েছে। মিষ্টির দাম বেড়ে যাওয়ার পর থেকে আগের তুলনায় বেচা-বিক্রি অনেক কমে গেছে। সামনে রোজার মাসে বেচা-কেনা আরো থাকবে না,জীবন চালানো দায় হয়ে যাবে।


বেকারী ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বাবু বলেন, বেকারী পণ্য তৈরিতে তেল, চিনি, ডিম, ময়দাসহ যেসব উপকরণ লাগে তার সবগুলোার দাম দ্বিগুণ তিনগুণ বেড়ে যাওয়ায় এ ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। তার উপর রোজার মাসে বেকারী পণ্য চলে না। রোজার মাসে আয় কম, ব্যয় হয় বেশি নিত্য প্রয়োজনীয় সব জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা দিন দিন চরম ভাবে হ্রাস পাচ্ছে। এতে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার গুলো শোচনীয় অবস্থায় পড়েছে।