দেড় মাস সংসার করার পর জানা গেল নববধু পুরুষ!
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৫৮ অপরাহ্ন, ২৭শে জুলাই ২০২৫

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে দেড় মাসের দাম্পত্য জীবনের পর এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। বিয়ের পর স্বামীকে কাছে ভিড়তে দিতেন না স্ত্রী। কাছে গেলেই তিনি বলতেন, আমি এখন অসুস্থ্, ডাক্তার আপাতত কাছে আসতে নিষেধ করেছে। এর পর থেকেই শুরু হয় স্বামীর মনে সন্দেহ।
দেড় মাসের দাম্পত্য জীবনের পর শুক্রবার (২৫ জুলাই) ছেলে ও তার পরিবার জানতে পারেন, তাদের ঘরের বউ আসলে একজন পুরুষ। ঘটনাটি ঘটেছে গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট ভাকলা ইউনিয়নের হাউলি কেউটিল গ্রামে।
কথিত ওই গৃহবধূর নাম সামিয়া। তার প্রকৃত নাম মো. শাহিনুর রহমান। তিনি চট্টগ্রামের আমতলা ঈদগাহ বৌবাজার এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে।
শাহিনুর রহমান ওরফে সামিয়া জানান, তার হরমন জাতীয় শারীরিক সমস্যা আছে। তাই নিজেকে মেয়ে ভাবতে ভালো লাগে।
স্থানীয় ও ছেলের পারিবার সূত্রে জানা গেছে, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট ভাকলা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হাউলি কেউটিল গ্রামের মো. বাদল খানের ছেলে মাহমুদুল হাসান শান্তর সঙ্গে কথিত সামিয়ার ফেসবুকে পরিচয় হয়। দীর্ঘদিন তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক চলে। গত ৭ জুন শান্তর বাড়িতে চলে আসেন সামিয়া। এরপর পরিবারের সম্মতিতে এলাকাবাসী মৌলভি দিয়ে বিয়ে করিয়ে দেন শান্ত ও সামিয়ার।
এরপর থেকে শান্তর পরিবারে বসবাস করতে করতে থাকেন সামিয়া। তবে, নানা কারণে সম্প্রতি শান্ত ও তার পরিবারের অন্য সদস্যদের মধ্যে সামিয়াকে নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়। গতকাল শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকেলে শান্তর পরিবারের লোকজন জানতে পারেন তাদের ঘরের বউ আসলে একজন পুরুষ।
মাহমুদুল হাসান শান্ত জানান, ফেসবুকের মাধ্যমে কথিত সামিয়ার সঙ্গে তার পরিচয়। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ৭ জুন সামিয়া তার বাড়িতে আসেন। পরে অভিভাবক ও স্থানীয়দের উপস্থিতিতে হুজুর দিয়ে তার সঙ্গে সামিয়ার বিয়ে করানো হয়। সামিয়ার জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় কাবিন রেজিষ্ট্রি করা হয়নি।
তিনি আরও জানান, বিয়ের পর থেকেই তার স্ত্রীর আচরণ রহস্যজনক ছিল। কাছে গেলেই তিনি বলতেন, আমি এখন অসুস্থ, ডাক্তার আপাতত কাছে আসতে নিষেধ করেছেন। এ থেকেই সন্দেহ বাড়তে থাকে তার।
শান্তর মা মোছা. সোহাগী বেগম বলেন, একজন ছেলে মানুষ আমাদের পরিবারের বৌ হয়েছিল। আমরা এ বিষয়টি কোনোভাবেই টের পাইনি। সে অভিনয় করে আমাদের সবার মন জয় করে নিয়েছিল। সবই যে তার অভিনয় ছিল, তা আমরা বুঝতে পারিনি। তার পরিচয় জানাজানি হলে শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে তাকে আমরা বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছি।
এ প্রসঙ্গে শাহিনুর রহমান ওরফে সামিয়া মোবাইল ফোনে বলেন, আমি শান্তর সঙ্গে যা করেছি, সেটা অন্যায় করেছি। এটা করা আমার ঠিক হয়নি।
তিনি জানান, তার হরমন জাতীয় শারীরিক সমস্যা আছে। তাই নিজেকে মেয়ে ভাবতে ভালো লাগে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন জানান, ঘটনার বিষয়ে কেউ আমার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আসেনি। তবে এক মেম্বারের মাধ্যমে বিষয়টি শুনেছি।
এসডি/