শ্রীপুরে যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:৩৭ পূর্বাহ্ন, ১৮ই মার্চ ২০২৩


শ্রীপুরে যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন
মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন

গাজীপুরের শ্রীপুরে প্রহলাদপুর ইউনিয়নের দমাদমা গ্রামের আরিফুল খান নামের এক যুবককে গাছের সাথে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতনের একটি ভিডিওচিত্র ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।


বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) রাতে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি মেম্বার। এরআগে, দুপুরের দিকে ওই গ্রামের খান বাড়ির পাশের একটি গাছের সাথে দড়ি বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হয় আরিফুলকে। 


নির্যাতনের শিকার আরিফুল খান দমাদমার গ্রামের উসমান খানের ছেলে। 


নির্যাতনের শিকার আরিফুলের ভাই আশরাফুল জানান, গত ২ বছর ধরে আমাদের বাড়ির পাশে ডাঃ কাইয়ুম নামের এক ভদ্রলোক জায়গা কিনে প্রজেক্ট করেছে। বৃহস্পতিবার ওই ডাক্তারের প্রজেক্টের সামনে রাখা একটি গাড়ির গ্লাস ভেঙ্গে কে বা কাহারা টাকা নিয়ে গেছে বলে তারা বলছে। যা আমরা জানি না। কিন্তু  আমার ভাই ঘরে শুয়ে থাকাবস্থায় অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা কায়সারের নেতৃত্বে মেহেদী, রাসেল ও সালামসহ কয়েকজন থাকে পায়ে দড়ি বেঁধে গাছে ঝুলিয়ে বেধড়ক মারধর করে। আমরা মেম্বারসহ গন্যমান্য ব্যক্তিদের জানিয়েছি। এ ঘটনায় ন্যায়বিচার দাবী করছি। 


নির্যাতনের শিকার আরিফুল ইসলাম বলেন, " সকালের দিকে আমি বাড়িতে রুটি খেয়ে ঘরে শুয়ে ছিলাম। পরে কায়সার আমাকে ফোন দিয়ে যেতে বলে। আমি না গেলে লোক দিয়ে আমাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে মারে। আমার শরীরের সব জায়গায় মারছে। আমি টাকা নেইনি "।


টাকা চুরির অভিযোগ এনে যুবককে বাড়ি থেকে ঢেকে নিয়ে এমন নির্যাতন চালানোর বিষয়ে স্থানীয় ইউপি মেম্বার জাকির হোসেন শেখ জানান, চুরির ঘটনা আমাকে কেউ অবগত করেনি। তবে, সন্ধ্যার দিকে আরিফুল নামের ওই যুবককে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে গাজীপুরের শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছি। তিনি বলেন, চুরি হলে প্রশাসনকে না জানিয়ে এভাবে মারধর উচিৎ হয়নি। তারা তো আর, আরিফুলের চুরির প্রত্যক্ষ কোনো প্রমান পায়নি।


মারধরের কথা শিকার করে প্রহলাদপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য কায়সার মুঠোফোনে জানান, আরিফুল টাকা চুরি করেছে এটা নিশ্চিত। আগেও চুরির অভিযোগ আছে তাঁর নামে। টাকা চুরির সময় আরিফুলকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি ওই যুবলীগ নেতা।


এ ঘটনায় গাড়ি ও  প্রজেক্টের মালিক মালিক ডাঃ কাইয়ুমের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। 


পরে তাঁর ম্যানেজার মিশুকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "টাকা চুরির পর মালিক কাউকে বিচার দেননি। কিছু অতি উৎসাহী ব্যক্তিরা এমন মারধোর করেছে। আমাদের সাহেব মুরুব্বি মানুষ এমন ঘটনার সাথে থাকার প্রশ্নই আসে না। 


এ বিষয়ে প্রহলাদপুর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম আকন্দ বলেন, গাড়ির গ্লাস ভেঙ্গে টাকা চুরির অভিযোগ শুনিনি। তবে, ওই যুবককে মারধরের একটি ভিডিও দেখেছি। তিনি বলেন, আইনের উর্দ্ধে কেউই না। আইন নিজের হাতে নেওয়া ঠিক হয়নি।


এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, প্রহলাদপুরে চুরি ও মারধরের ঘটনায় কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি।