পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু কাল


Janobani

জনবাণী ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪:৪০ এএম, ৪ঠা এপ্রিল ২০২৩


পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু কাল
ছবি: সংগৃহীত

এবার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের আরেকটি স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। পদ্মার বুকে দেশের সর্ববৃহৎ রেল সেতু দিয়ে পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হচ্ছে কাল। ৬ মাস পর ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙা পর্যন্ত বাণিজ্যিকভাবে চলবে রেল। 


ঢাকা থেকে মাওয়া, মাওয়া থেকে ভাঙ্গা এবং ভাঙ্গা থেকে যশোর-এই তিন অংশে বিভক্ত পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্প।


এর মধ্যে মাওয়া-ভাঙ্গা ৪২ কিলোমিটার অগ্রাধিকার অংশ। পদ্মাসেতুর সড়ক অংশ চালুর পর অনেকটা বিলম্বে মূল সেতুতে শুরু হয় রেললাইন বসানো। মূল সেতুতে রয়েছে ১০ হাজার ৭৯০টি স্লিপার। 


লাইনের প্রসারণে ভারসাম্য ঠিক রাখতে এবং সেতু দিয়ে দ্রুতগতির ট্রেন চলাচলে ৮টি ইস্পাতের মুভমেন্ট জয়েন্ট বসানো হয়েছে। 


পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প ট্র্যাক ইঞ্জিনিয়ার শওকত আলী বলেন, ‘ব্রিজ মুভমেন্ট করবে ঠিকই, কিন্তু আমার রেললাইন সেইফ থাকবে, গাড়ি চলাচলে সার্বক্ষণিক উপযোগী থাকবে।’


প্রকল্পের ব্রিজ এন্ড ভায়াডাক্ট ইনচার্জ মোহাম্মদ জহুরুল হক বলেন, ‘৮০০ করে এক্সপাংশন গ্যাপ রাখা হয়েছে যাতে করে কোনো ঝড়-তুফান বা বাহ্যিক কোনো লোডের কারণে মুভমেন্টে কোনো অসুবিধা না হয়।’


প্রকৌশলী সাদমান শাহরিয়ার বলেন, ‘হাইস্প্রিড ট্রেন যখনই করতে যাবেন তখন আসলে পাথর থেকে বের হয়ে আসতে হবে। কারণ আপনি যখন পাথরযুক্ত রেললাইন করবেন সেক্ষেত্রে গতিটা সেই লেবেলে আনা যায় না।’


ভায়াডাক্টসহ মূল সেতুর ৬ দশমিক এক-পাঁচ কিলোমিটার পথ পাথরবিহীন। বাদ বাকি অন্যান্য অংশে ভাঙ্গা পর্যন্ত পাথরসহ-ই বসেছে লাইন। তবে ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ ধরণের পাথর। 


মোহাম্মদ জহুরুল হক বলেন, ‘রেল ক্রসিংয়ের স্বার্থে এখানে ৩০০ স্পিড দিলেও কোনো সমস্যা হবে না। এখানে সাড়ে ১৩ কিলোমিটার, আবার ঢাকা সেকশনে আছে সাড়ে ১৬ কিলোমিটার। এর মধ্যে গার্ড রেলও আছে, কখনো যদি ডি-রেল হয় তখন এই গার্ড রেল ট্রেনটাকে ধরে রাখতে পারবে।’


মাওয়া-ভাঙা অংশে ৩২টি রেল কালভার্ট, ৩৭টি আন্ডার পাস, ১৩টি রেল সেতু তৈরি হয়েছে। দ্রুততম সময়ে কাজ শেষ করা হলেও নির্মাণের সব পর্যায়েই বজায়ে রাখা হয়েছে বিশ্বমান। কোথাও কোনো আপোস করা হয়নি।


ট্রাক ইঞ্জিনিয়ার শওকত আলী বলেন, ‘ট্রেন চালিয়ে দেখবো যে আমাদের প্রাথমিক কাজটা ঠিক আছে কি না। পরবর্তী সময়ে আরও পর্যায় আছে।’


পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্যানেল অব এক্সপার্ট চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ এফ এম সাইফুল আমিন বলেন, ‘রেলপথে বড় সীমাবদ্ধ ছিল দক্ষিণবঙ্গে কোনো রেলপথ নেওয়া হয়নি। এখন দক্ষিণবঙ্গে ব্রডগেজ রেললাইন যাচ্ছে।’


এরই মধ্যে মাওয়া, জাজিরা ও শিবচর স্টেশনের অবকাঠামো প্রস্তুত। এগিয়ে চলছে ভাঙ্গা জংশনের নির্মাণযজ্ঞ।