সেন্টমর্টিনকেও হার মানিয়েছে কুয়াকাটার চর বিজয়
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২:১৩ পূর্বাহ্ন, ৫ই এপ্রিল ২০২৩
লাল কাকড়া আর অতিথি পাখিদের মিলন মেলায় মুখরিত থাকে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের মোহময় লীলাভূমি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম ও বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণের পর্যটন এলাকা সাগরকন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের বর্তমানে আলোচিত পর্যটন স্পট চর বিজয়।
কুয়াকাটার মুল পয়েন্ট থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব কোণে বঙ্গোপসাগরের বুক চিরে জেগে ওঠা দ্বীপ ‘চর বিজয়’। যা দেশের পর্যটনখাতে নতুন সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে। ঘুরতে আসা পর্যটকের আকর্ষণও এখন চর বিজয়ের দিকে।
দিন যতই যাচ্ছে বড় হচ্ছে চর বিজয় বর্তমানে আনুমান করেছি ১৫ বর্গ কিলোমিটারের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে জেগে উঠেছে দীপটি। তবে দ্বীপটিতে এখনো কোনো জনবসতি গড়ে ওঠেনি, নেই কোনো গাছপালা। বর্ষার ছয় মাস পানিতে ডুবে থাকে এ চরটি। আবার শীত মৌসুমে ধু-ধু বালুচর চরের এক মাথা দিয়ে দেখা যায় না অন্য মাথা, চোখ দিলে ভেসে আসে লাল কাকড়ার অবিরাম দৃশ্য। কুয়াকাটা থেকে ট্যুরিস্ট বোটে চর বিজয় দ্বীপে যেতে সময় লাগে প্রায় দেড় ঘন্টা। আর স্পিডবোটে সময় লাগে মাত্র ৩০ মিনিট।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক মো. খলিলুর রহমান জানান, আমি বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা ও দর্শনীয় স্থানগুলো ভ্রমণ করছি এবং দেশের বাহিরে ভ্রমণ করার সুযোগ হয়েছে। তবে কুয়াকাটা এসে যেটা দেখলাম সেটি আমার জন্ম দেখিনি, মন চাচ্ছে ব্যস্ত শহর ঢাকা ছেড়ে চর বিজয় থেকে যাই। ন্যাচারাল পরিবেশ অতিথি পাখিদের আমন্ত্রণ লাল কাকড়ার মেহমানদারী আমাদেরকে মুগ্ধ করেছে। কুয়াকাটায় ভ্রমণে আসে আমাদের এই সার্থক হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এখানে যদি অন টাইম কোন চেঞ্জিং রুম ওয়াশরুম সামান্য বিশ্রাম কেন্দ্রসহ অন টাইম খাবারের ব্যবস্থা করা হলে পর্যটকে একটু কষ্ট কম হবে।
গভীর সমুদ্রে মাছ আহরণকারী জেলেরা এটাকে পরিচিতি করে হাইরের চর নামে। ২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বর এ দ্বীপটির সন্ধান দিয়েছেন। বিজয়ের মাসে ১৩ জনের একটি স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ী, ট্যুরে প্রথমে ওই দ্বীপে যান। পরবর্তীতে স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা মিলে দ্বীপটিকে ‘চর বিজয়’ নামে নামকরণ করেন। যদিও সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত কোনো নামকরণ করা হয়নি পর্যটন ব্যবসায়ী সহ পর্যটকরা আশা করছেন সবার কাছেই চিরচেনা হয়ে থাকবে চর বিজয় নাম টি।
পর্যটন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে দেশ বিদেশি পর্যটকরা আগের চাইতে বেশি ঢুকতে শুরু করেছে এবং কুয়াকাটাতে তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবং গভীর সমুদ্রে জেগে ওঠা অবিরাম সুন্দর্যের স্থান চর বিজয় যা হার মানিয়েছে সেন্টমাটিকে। তবে তারা বলছেন চর বিজয়কে সরকারিভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করলে, বিশ্বের কাছে সম্ভাবনাময় পর্যটন স্পট হবে এই চর বিজয়। এতে দেশের অর্থনৈতিক অবদান রাখবে স্থানটি।
কুয়াকাটার পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতিবছরই শীত মৌসুমে এ চরে আসা অতিথি পাখি শীত কমে গেলে যে যার মতো অন্যত্র চলে যায়। দেশী-বিদেশী পর্যটকদের কাছে এ চরটি যোগ করেছে এক নতুন মাত্রা। ‘চর বিজয়’ পর্যটন শিল্পে ঘটাবে বৈপ¬বিক পরিবর্তন-এমন প্রত্যাশা করেছেন পর্যটকসহ ট্যুরিস্ট ব্যবসায়ীরা।