ধান ক্ষেতে নেক ব্লাস্টের আক্রমণে হতাশ কৃষকেরা


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১:২০ অপরাহ্ন, ১৩ই এপ্রিল ২০২৩


ধান ক্ষেতে নেক ব্লাস্টের আক্রমণে হতাশ কৃষকেরা
ছবি: জনবাণী

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বোরো ধানে আক্রান্ত হচ্ছে নেক ব্লাস্ট, এ রোগে প্রথমে ধান গাছের শীষ ভেঙে যায়, ধান সম্পূর্ণ শুকিয়ে চিটা হয়ে যায়, শুকিয়ে যায় ধান গাছের পাতাও। স্থানীয় কৃষি বিভাগ নানা পরামর্শ দিলেও তা কাজে আসছে না। ফলে হতাশায় ও দুশ্চিন্তায় ভুগছে কৃষক।


উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ১৬ হাজার ৪০৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই রোগটি সাধারনত ব্রি ধান২৮ ও চিকন জাতের ধানেই বেশি দেখা যায়।


সরেজমিনে গিয়ে কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত বছরে শুধু  ব্রি ২৮ জাতের ধানে আক্রান্ত হলেও এবছর হাইব্রিড জাতের (মাইক্রো১, মাইক্রো ৩) চিকন ধানে আক্রমণ বেশি হচ্ছে। 


পাইকেরছড়া ইউনিয়নের মাওনাপাড়া গ্রামের কৃষক লাভলু মিয়া জানান, চলতি বোরো মৌসুমে ৬৪ শতক জমিতে মাইক্রো ১ জাতের ধান রোপন করেছি কিন্তু ব্লাস্ট রোগ আক্রমন করে সব ধানের শীষ সাদা হয়ে চিটা হয়ে গেছে। বাজারে বিভিন্ন প্রকার ঔষধ দিয়েও কাজ হয়নি। এখন আমার ঘরে ধানের পরিবর্তে খড় ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই।


একই এলাকার লাল মিয়ার স্ত্রী রোকেয়া বেগম বলেন, সাত মন ধান দেওয়ার চুক্তিতে কষ্ট করে এক বিঘা জমিতে মাইক্রো ৩ জাতের হাইব্রিট জাতের  ধান আবাদ করেছেন। সেই  কষ্টের  ধান ক্ষেত সর্বনাশা নেক ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে পাকার আগেই সব শীষ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। 


সদর ইউনিয়নের নলেয়া গ্রামের হতদরিদ্র কৃষক নুরমাল জানান, অন্যের জমি বর্গা নিয়ে ৪০ শতক জমিতে ২৮ জাতের ধান রোপন করেছি। কিন্তু তা নেক ব্লাস্ট রোগে আক্রমন হয়ে সব শেষ হয়ে গেছে। বিভিন্ন ঔষধ স্প্রে করেও কোন কাজে আসেনি। ফলে এখন আমি সব হারিয়ে নিস্ব হয়ে গেছি। 


উপজেলা কৃষি অফিসার সুজন কুমার ভৌমিক বলেন, চিকন জাতের ধানে এই রোগের আক্রমণ বেশি হচ্ছে। ট্রাইসাইক্লাজোল (ট্রুপার ৭৫ ডব্লিউপি) ০.৭৫ গ্রাম/ লিটার অথবা ট্রাইসাইক্লাজোল+ প্রোপিকোনাজল (ফিলিয়া ৫২৫ এসই) ২মিঃলিঃ/ লিটার অথবা থায়োপেনেট মিথাইল  (টপসিন এম ৭০ ডব্লিউপি)  ২ গ্রাম/ লিটার/অথবা  টেবুকোনাজল+ ট্রাইফ্লক্সিস্ট্রবিন (নাটিভো) ০. ৫০ গ্রাম/ লিটার, অথবা এজোক্সিস্ট্রবিন+ ডাইফেনোকোনাজল (এজকর/এমিস্টার টপ) ১মিঃলিঃ/লিটার পানিতে মিশে ১০-১৫ দিন পর পর দুইবার স্প্রে করলে এই রোগ থেকে কিছুটা রক্ষা পাওয়া যায়। এবং জমিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি রাখতে হবে।