ঈদকে সামনে রেখে পর্যটক বরণে প্রস্তুত সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন, ১৮ই এপ্রিল ২০২৩
সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের বেলাভূমি সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায় ছুঁটিতে আসা পর্যটকদের পদচারনায় মুখরিত থাকবে এমনটাই মনে করেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা ঈদের ছুটিও ঢাকা থেকে ফেরী বিহীন যাতায়াতের সুবিধায় কুয়াকাটাকে বেছে নিয়েছেন পর্যটকেরা। আর এতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন হোটেল মোটেল রেস্টুরেন্ট গুলো।
সাগরকন্যা কুয়াকাটা পর্যটক বরণে প্রস্তুত, ঈদকে সামনে রেখে প্রস্তুতি শেষের পথে। মুসলমান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবকে ঘিরে কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের বরণের প্রস্তুতি চলছে, সাগরকন্যা কুয়াকাটা এখন পর্যটকদের কাছে প্রধান আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ার পাশাপাশি পদ্মসেতু হওয়ায় এখন কুয়াকাটায় পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকে। সাজ সাজ রব কুয়াকাটার পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীদের মাঝে। বিভিন্ন হোটেল মোটেলের ঘষা মাজা ও রংয়ের কাজ সমাপ্তির পথে। অনেক হোটেল মোটেলের মালিকরা হোটেলের খাট ও আসবাব পত্রে এনেছেন নতুনত্বের ছাপ। হোটেল ও মোটেলের সামনের যায়গাগুলোতে পরিস্কার ও পরিছন্নতার কাজ চলছে জোরেশোরেই। এছাড়াও ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের মাঝেও ব্যাপক প্রস্তুতি লক্ষ্য করা গেছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, হোটেল মোটেল ও রিসোর্টগুলোতে কাজ চলছে। বিভিন্ন দোকানীদের ব্যস্ততা। দোকানে দোকানে নানাবিধ জিনিসের পশরা সাজাচ্ছেন। ট্যুরিজম বোটের মালিকরা তাদের পর্যটকবহনকারী বোটগুলোতে রংয়ের ছোঁয়ায় নৈপুণ্যতায় ভরপুর করছে। আচার ও চকলেট বিক্রেতারাও উন্নত মানের চকলেট ও আচারের সমাহার ঘটিয়েছে। শুটকি পল্লির ব্যবসায়ীরা নতুন বছরের শুটকি দোকানে সারিসারি করে রাখার ব্যস্ততায় সময় পার করছে। দম ফালানোর ফুরসত নেই পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীদের মাঝে।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ বলেন, এবারের ঈদের পাঁচ দিনের লম্বা ছুটির ফাঁদে দেশ ফলে পুরো ঈদের ছুটিতে সৈকতে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকবে। আমরা আশা করছি এ লম্বা ছুটিতে দুই লক্ষাধিক পর্যটকের আগমন ঘটবে। কয়েকবছর আগেও তেমন কোন প্রস্তুতি ছাড়াই আমরা কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের সেবা দিতে পারতাম। এখন পদ্মাসেতু হওয়ার পর থেকেই পর্যটকদের সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রস্তুতি নিয়েও।
তিনি আরও বলেন, যে পরিমাণ পর্যটকদের আগমন ঘটবে বলে মনে করছি সে পরিমানে আবাসিক ব্যবস্থা নেই কুয়াকাটায়। আমাদের কমিউনিটি ট্যুরিজমকে গুরুত্বভাবেই দেখছি যাতে আগত পর্যটকরা অন্তত রাত্রিযাপনটা করতে পারে।
কুয়াকাটা বার্মিজ আচার দোকানের পরিচালক মো. সোহাগ বলেন, দোকানে নতুন নতুন আচার আনছি। পুরনো আচার ফেলে দিয়ে নতুন আচার তাকে সাজিয়ে রাখছি। গত বছরের ঈদে আমাদের চাহিদা অনুযায়ী বিক্রি বাট্টা হয়েছিল আশা করছি এবারও হবে।
সৈকতে রাখা ছাতা বেঞ্চির মালিক মো. বেল্লাল বলেন, পর্যটকরা সমুদ্র সৈকতে এসে ছাতার নিচে বসে সমুদ্র দর্শন করে। আমরা ঈদকে সামনে রেখে রংয়ের কাজ শেষ করেছি। নতুন করে তোষক বানিয়েছি।
সমুদ্রের বুকে রাখা ফাইবার বোটের মালিক হোসাইন আমির বলেন, এবারের ঈদকে সামনে রেখে বোটগুলো রংয়ের তুলিতে নতুনত্ব আনছি। আশা করছি পর্যটকদের সেবা দিতে পারব।
কনফিডেন্স ট্যুরিজমের পরিচালক মো. সাইদুর রহমান বলেন, ঈদকে সামনে রেখে আমাদের প্রস্তুতি পুরোপুরি শেষের পথে। পাঁচ দিন টানা ছুটিতে যে সকল পর্যটকরা কুয়াকাটায় বেড়াতে আসবেন তাদেরকে সেবা দিতে পারব।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) সেক্রেটারি কে এম জহির বলেন, ঈদুল ফিতরের আগেই সকল ট্যুরিজম সেন্টার তাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। সামাল দিতে বেগ পেতে হবেনা।
খাঁন প্যালেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেল খাঁন জানান, আমরা প্রতিটি কক্ষের চাদর পরিবর্তন করছি। পুরোপুরি ফিট পর্যটক থাকার জন্য। পুরো রমজান মাসে বেশিরভাগই রুম খালি ছিল। পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে আমাদের অধিকাংশ রুম রিজার্ভেশন হয়ে গেছে। দিন যত যায় সামনে ততই ফোনের মাধ্যমে কিংবা স্ব-শরীরে এসেও রুম বুকিং করে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের উপ-পরিদর্শক হাফিজুর রহমান বলেন, ঈদ মৌসুমে প্রচুর পরিমানে পর্যটকদের আগমন ঘটবে কুয়াকাটায়। আমরা সেভাবেই নিজেদেরকে প্রস্তুত করে রেখেছি। পুরো সৈকতটি আমরা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখতে সক্ষম হব।