খাগড়াছড়িতে ১০টি বেইলি ব্রিজের অধিকাংশই ঝুঁকিপূর্ণ
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
খাগড়াছড়িতে ১০টি বেইলি ব্রিজ রয়েছে। তারমধ্যে অধিকাংশই ঝুঁকিপূর্ণ। ব্রিজগুলোতে ৫ টনের অধিক মালামাল নিয়ে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মানছে না ট্রাকচালকরা।
খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, খাগড়াছড়ি শহরের সঙ্গে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির কয়েকটি উপজেলাকে সংযুক্ত করেছে প্রায় ১০টি বেইলি ব্রিজ। অতিরিক্ত ওজন নিয়ে ট্রাক চলাচল করার কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। অনেক সময় বেইলি ব্রিজ ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে দুই পাড়ের বাসিন্দারা। বন্ধ হয়ে যায় যোগাযোগ ব্যবস্থা। অতিরিক্ত কাঠ বোঝাই ট্রাকের ভারে ভেঙে পড়ে ব্রিজ।
সরেজমিন দেখা যায়, খাগড়াছড়ির দীঘিনালার-সাজেক সড়কের মাইনী ব্রিজ, দীঘিনালা-লংগদু সড়কের চৌমুহনী বেইলি ব্রিজও দীঘিনালা-খাগড়াছড়ি সড়কের জামতলী বেইলী ব্রিজ এলাকায় প্রতিদিন শতাধিক কাঠবাহী ও মালবাহী ট্রাক চলাচল করে। কাঠবাহী প্রতিটি ট্রাকের ধারণক্ষমতা ২৫ টন। ধারণক্ষমতার বেশি ওজন নিয়ে মালবাহী ট্রাক চলাচল করায় দুর্ঘটনার শঙ্কা থাকে। প্রতিটি বেইলি ব্রিজের সামনে ৫ টনের বেশি মালামাল নিয়ে চলাচলে নিষেধাজ্ঞার সাইনবোর্ড লাগানো থাকলেও তার তোয়াক্কা করছে না ট্রাকচালকরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ট্রাকচালকরা জানান, ‘প্রতিটি গাড়ির ধারণক্ষমতা ২৫ টন। পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকা থেকে কাঠ নিয়ে ঢাকা, ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাই। ধারণক্ষমতার কম কাঠ বহন করলে মালিকের পোষাবে না। তাই বেশি বেশি কাঠ বা অন্যান্য মাল বহন করতে হয়। অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে।’
চালক আনোয়ার হোসেন জানান, বিকল্প কোনো সড়ক না থাকায় বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে ব্রিজের উপর দিয়ে যেতে হয়। তবে পাকা ব্রিজ নির্মাণ করা হলে ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালতে হবেনা।
স্থানীয়রা জানান, দ্রুত এ ব্রিজগুলো পাকা করা না হলে দিনদিন ঝুঁকি বাড়তেই থাকবে। এ বিষয়ে স্থানীয় সাংসদের সুদৃষ্টি কামনাও করেন অনেকে। গত দুই বছর আগে জুলাই মাসে দীঘিনালা-লংগদু সড়কের চৌমুহনী বেইলি ব্রিজে অতিরিক্ত কাঠ বোঝাই ট্রাকের কারণে ব্রিজ ধসে যায়। পরে সওজ ও স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত ব্রিজটি মেরামত করে। পার্বত্য অঞ্চলের বেশির ভাগ বেইলি ব্রিজ ৯০-এর দশকে নির্মিত। দীর্ঘদিন ব্রিজগুলোর কোনো সংস্কার কাজ না হওয়ায় কোনো রকমে তা টিকে আছে।
খাগড়াছড়ির সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সবুজ চাকমা বলেন, ‘বেইলি ব্রিজের উপর ৫ টনের অধিক মালামাল বহনে নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও তা মানছে না ট্রাকচালকরা। আমাদের খাগড়াছড়ি সওজ’র আওতাধীন ১০টি বেইলি সেতু রয়েছে। মূলত অতি লাভের আশায় চালকরা ধারণক্ষমতার বেশি কাঠ বোঝাই করে। ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। পাহাড়ি নদী কিংবা ছড়ার উপর বেইলিগুলোর স্থলে স্থায়ী ভিত্তিতে সেতু নির্মাণ করা গেলে ঝুঁকি এড়ানো যাবে।
এসএ/