দুই বছর পূর্তিতে বিএসএমএমইউ’র ভাইস চ্যান্সেলের সাফল্য
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০:১০ অপরাহ্ন, ২রা মে ২০২৩
জাতির পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় এর ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ গত ২৯ মার্চ ২০২১ ইং তারিখে যোগদান করেন। তিনি যোগদানের পর হতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক বিভাগ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম প্রসার এবং সাফল্যের একটি সচিত্র প্রতিবেদন নিম্নে উল্লেখ করা হল:
ভাইস চ্যান্সেলর যোগদানের পর হতে পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়নের সুযোগ বৃদ্ধি করেছেন বিধায় গত জানুয়ারী ২০২২ সেশনে ২৪ জন শিক্ষার্থী পিএইচডি কোর্সে ভর্তি হয়ে স্ব-স্ব গবেষনা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমান জানুয়ারী ২০২৩ সেশনে ৪৩ জন শিক্ষার্থীর পিএইচডি কোর্সে ভর্তির জন্য কার্যক্রম চলছে। প্রধান মন্ত্রী ও দেশনেত্রীর নির্দেশে ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে উচ্চ শিক্ষা ক্ষেত্রে গবেষনা কার্যক্রম প্রসারের লক্ষ্যে পোষ্ট গ্রাজুয়েট মেডিক্যাল এডুকেশনে পিএইচডি গবেষনা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে তিনজন পিএইচডি গবেষক ডা. শামীম আরা খান চৌধুরী, ডা. জেসমিন সুলতানা, অধ্যাপক ডা. লায়লা আঞ্জুমান বানুপিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেছেন এবং তিন জন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব-জনাব সায়মা ওয়াজেদ পুতুল (অটিজম ও নিউরো ডেভেলপমেন্ট বিশেষজ্ঞ), অধ্যাপক ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলাম (সাবেক ভিসি) ও অধ্যাপক ডাঃ কাজী শহীদুল আলম’কে সম্মানসূচক পিএইচডি ডিগ্রী অর্পন করা হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষক/চিকিৎসক ডা. তাজবীর আহমেদ, ডা. শাহরিয়ার মোহাম্মদ শাম্স এবং ডাঃ ফজলে রাব্বী চৌধুরী বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় হতে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেছেন।
অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ স্যার ভিসি হিসেবে যোগদানের পূর্বে পোষ্ট গ্রাজুয়েট সকল বিষয়ে দুই সেশনে মোট আসন সংখ্যা ১২২৫+১১৪২=২৩৬৭ ছিল। অপরদিকে অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ স্যার যোগদানের পর বর্তমানে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ১৪২২+১২৯৪=২৭১৬ হয়েছে। ভিসি স্যারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার কারনে বিশ্ববিদ্যালয়সহ অধিভূক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহ সরেজমিনে পরিদর্শনের পর ৩৪৯টি আসনসংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে মোট ১০৫ টি ডিসিপ্লিনে এমডি, এমএস, এমফিল, এমএমইডি, ডিপ্লোমা, এমপিএইচ, এমএমসি নার্সিং (এমএসএন) এবং বি.এসসি নার্সিং কোর্স চালু আছে। তম্মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে জুলাই ২০২২ পর্যন্ত এমডি ৩৪৬৪জন, এমএস ২৩১৩ জন, এমফিল ১৯৩১ জন, এমএমইডি ৮৭ জন, ডিপ্লোমা ৫৬৬৪ জন, এমপিএইচ ১৯৬৪ জন এবং পিএইচডি ০৩ জন সর্বমোট ১৫৪২৬ জন পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিগ্রী অর্জন করেছেন। সর্বশেষ সেশনে পাশের হার ৬০.৮২% %।
সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য দিক হলো-কোর্স আউট শিক্ষার্থীগণ, যাদের শিক্ষা জীবন খুব দূর্বিসহ যন্ত্রনার মধ্যে ছিল- জুলাই ২০২২ সেশনে ১৪৩ জন ও জানুয়ারী ২০২৩ সেশনে ১৭৭ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন এবং তাদের অধিকাংশ পরীক্ষায় পাশ করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, এমএস ইউরোলজী ফাইনাল পার্টের একজন শিক্ষার্থী থিসিস পরীক্ষায় পাশ করেছেন, অথচ ক্লিনিক্যাল পার্টে অকৃতকার্য হয়ে কোর্স আউট হয়ে গেছেন।তিনি কর্তৃপক্ষের দেয়া সুযোগে জুলাই ২০২২ সেশনে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে এমএস ইউরোলজী ফাইনাল পর্ব উত্তীর্ন হয়েছেন। এইরূপ কোর্স আউট শিক্ষার্থীগন পরীক্ষায় অংশগ্রহনপূর্বক পাশ করে স্ব-স্ব ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সেবায় অবদান রাখছেন।
মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রবল ছোয়ার মধ্যেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম থেমে নেই। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের সার্বিক প্রচেষ্টায় জুলাই-২০২০ সেশনের পরীক্ষাসমূহ জানুয়ারী ২০২১ সেশনের পরীক্ষার সাথে একত্রে অনুষ্ঠিত হয়ে যথাসময়ে ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।
অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ একজন নিবেদিত চিকিৎসক, শিক্ষক, পরীক্ষক এবং গভীর জ্ঞানসম্পন্ন একজন প্রশাসকও বটে। তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রমের অভূতপূর্ব উন্নয়ন অর্জিত হয়েছে। পাশাপাশি কোরিয়ার সহায়তায় নির্মিত সুপার স্পেশালাইজ্ড হাসপাতাল চালু হয়েছে, যার ফলে দেশের মানুষ চিকিৎসার জন্য বিদেশে না গিয়ে কম খরচে উন্নত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে। এ ছাড়াও দেশে প্রথমবারের মত ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট সফলভাবে সম্পন্নসহ লিভার এবং অন্যান্য অর্গান ট্রান্সপ্লান্ট কার্যক্রমও এগিয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ বক্তব্য হলো-অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এর মত একজন প্রথিতযশা চিকিৎসক ও প্রশাসককে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের শিক্ষক, চিকিৎসক ও কর্মচারীগন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর হিসাবে আরো এক টার্ম অর্থাৎ পরবর্তী চার বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সুযোগ প্রদানের বিষয়টি বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রীকে সুবিবেচনার জন্য সবিনয়ে অনুরোধ করছি।