শিবচরে রক্তিম সৌন্দর্য বিলাচ্ছে কৃষ্ণচূড়া


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১:১০ অপরাহ্ন, ৮ই মে ২০২৩


শিবচরে রক্তিম সৌন্দর্য বিলাচ্ছে কৃষ্ণচূড়া
কৃষ্ণচূড়া

প্রকৃতিতে এখন গ্রীষ্মকাল। বিদায় নিয়েছে শিমুল-পলাশ। তবে প্রকৃতি থেকে তাদের রঙের ছটা একেবারে মুছে যায়নি। বসন্তের সেই রক্তিম রেশ ধরে রেখেছে গ্রীষ্মের কৃষ্ণচূড়া। খররোদে তপ্ত দিনে এই ব্যতিব্যস্ত শিবচর উপজেলার পথে পথে ঘন সবুজ পত্রপুঞ্জের ভেতর উজ্জ্বল হয়ে আছে লাল কৃষ্ণচূড়ার গুচ্ছ। রং লেগেছে কৃষ্ণচূড়ার ডালে ডালে।


এরই মধ্যে মাদারীপুরের শিবচরে বিভিন্ন পথঘাটে কৃষ্ণচূড়া এনেছে ভিন্ন আমেজ। শিবচরের অনেক স্থানে দেখা মিলছে কৃষ্ণচূড়া ফুলের। গ্রাম বাংলার মেঠো পথের দুই ধারে এখন শোভা পাচ্ছে লাল এই ফুল।


সাধারণত বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ এ দুই মাস নিয়েই গ্রীষ্মকাল। আর গ্রীষ্মের ফুলের কথা বলতেই সবার চোখের সামনে ভেসে ওঠে কৃষ্ণচূড়ার কথা। সুমিষ্ট রসাল ফলের জন্য গ্রীষ্মকাল এগিয়ে রয়েছে, তবে ফুলের দিক থেকেও অন্যসব ঋতুর তুলনায় এগিয়ে রয়েছে গ্রীষ্মকাল। তাই ফুল উৎসবের ঋতু বলা যায় গ্রীষ্মকালকেই। এ মৌসুমে কৃষ্ণচূড়ার লাল রঙের যে উম্মাদনা, তা এতই আবেদনময়ী যে চোখ ফেরানো অসম্ভব।


সারা দেশের মতো শিবচরেও প্রকৃতিতেও এখন কৃষ্ণচূড়ার সুদিন বইছে। এ সুদিনের সুবাতাস ছুঁয়ে যাচ্ছে ফুল ও প্রকৃতিপ্রেমি মানুষের হৃদয়। পাখির ডানায়, হাওয়ায়-হাওয়ায় উড়ছে তার লাবণ্য। গাছে গাছে রক্তিম আভা নিয়ে জেগে থাকা কৃষ্ণচূড়া দৃষ্টি কাড়ছে সেইসব ফুলপ্রেমি মানুষদের, যারা শত ব্যস্ততার মধ্যেও ফুলের জন্য অপেক্ষা করেন। আর কৃষ্ণচূড়ার জন্য প্রহর গোনেন।


মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের বাখরের কান্দি এলাকা, পাঁচ্চর থেকে শিবচর সড়ক, মুন্সি বাজারের বিভিন্ন স্থানে দেখা মিলেছে কৃষ্ণচূড়ার। প্রকৃতির এই অপরূপ দৃশ্যের ছবি তুলছেন অনেকেই। কেউ কেউ আবার অনেক গাছ থেকে একমুঠো ফুল বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন।


শিরুয়াইল এলাকার বাসিন্দা নওরিন আক্তার আয়শা একজন ফুলপ্রেমি মানুষ। যায়যায়দিনকে তিনি জানান, যখন কৃষ্ণচূড়া ফৌটে তখন গাছ-গাছালি লাল-সবুজ রঙে যেন মুখর হয়ে উঠে। আর এ সময়টা আমার কাছে ভালো লাগে অন্যরকমভাবে। এ ভালো লাগার কথা মুখে বলে প্রকাশ করা যাবে না।


হোসেনের হাট এলকার রাবেয়া আক্তারও কৃষ্ণচূড়ার প্রেমি। তিনি বলেন, প্রতিবছর নয়, প্রতিটি দিনই যেন অপেক্ষায় গ্রীষ্মের এই দিনগুলোর জন্য। কৃষ্ণচূড়ার রঙে প্রকৃতি যেন এক অপূর্ব সুন্দরে সাজে। প্রতিদিন এ দৃশ্য না দেখলে মনে হয় জীবনটাই বৃথা।


কলেজের শিক্ষার্থী জিম আক্তার, জান্নাতুল আক্তার, আলভী, সাদিয়া বলেন, "গ্রীষ্মের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কৃষ্ণচূড়ার রঙে রঙিন হয়ে ওঠে প্রকৃতি। বাতাসে বাতাসে কৃষ্ণচূড়ার ফুলগুলো দুলতে থাকে। এ এক অন্যরকম ভালো লাগা। যা ভাষায় প্রকাশ করে আমাদের পক্ষে বোঝানো সম্ভব নয়।


শিবচরের কবি আব্দুল আজিজ বলেন, আমি কৃষ্ণচূড়া আর রাধাচূড়াকে প্রচণ্ড ভালোবাসি। আমি তাকে নিয়ে বই লিখি।গ্রীষ্মের এই খরতাপে শান্তির পরশ বুলিয়ে দেয় কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো। রক্তিম লালে প্রকৃতিকে ও যেন অনেক অপরূপ দেখায়।


স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “দেশ” এর সভাপতি ওয়াহীদুজ্জামান বলেন, বৃক্ষ নিধনের শিকার হয়ে দিন দিন কমে যাচ্ছে শিবচর থেকে রঙিন এই গাছ। একসময় এ গাছ হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কাও রয়েছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি মানুষ ও প্রকৃতির স্বার্থেই বেশি করে কৃষ্ণচূড়া গাছ লাগানোর আহ্বান জানান প্রকৃতিপ্রেমীদের।


আরএক্স/