মুরাদনগরে কম্বাইন হারভেস্টর মেশিনে কৃষকের ধান কর্তন
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন, ৯ই মে ২০২৩
ডিজিটাল বাংলাদেশে কৃষকের দৌড় গোঁড়ায় সেবা পৌঁছাতে প্রতিদিন চলছে মেশিনের সহায়তায় ফসলি জমির ধান কর্তন। চোখের পলকে চাষীদের সময় ও কষ্ট লাঘব করে ধান কাঁটায় আর্থিক ভাবেও লাভবান হচ্ছেন তারা। মেশিনটি ফসলি জমিতে প্রবেশ করেই দ্রুততার সাথে জমিতে পাঁকা সকল ধান কেটে মাড়াই করে নলের মাধ্যমে ফেলছে এক প্রান্তে। খড় ও অবশিষ্ট অংশগুলো ফেলছে অপর প্রান্তে। কুমিল্লার মুরাদনগরের প্রতিটি ইউনিয়নে কম-বেশি হারভেস্টরের মাধ্যমে কর্তন করা হয়েছে তবে আকবপুর, আন্দিকুট, পূর্বধৈইর, টনকী, মুরাদনগর সদর, বাবুটিপাড়া, চাপিতলা, কামাল্লা ও দারোরা উল্লেখযোগ্য।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি অর্থ বছরে বোরো মৌসুমে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় মোট বোরো ধান আবাদ হয়েছে ১৭,০৫৫ হেক্টর বা, ৪২,১৪৪ একর জমিতে।
উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের মাঝে সর্বমোট ২৭টি কম্বাইন হারভেস্টর মেশিন দিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ৩,০৩৭ হেক্টর বা, ৭,৫০৫ একর জমির ফসল কর্তন হয়েছে।
গতবছর ফসল কর্তনের পরিমাণ ছিল, ৮৪৬ হেক্টর বা, ২০৯১একর জমিতে। বছরের ব্যবধানে কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় সাড়ে তিনগুনেরও অধিক। সরাসরি উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে মেশিনগুলো।
কৃষক নাইমুর রহমান ডেল্টা টাইমসকে বলেন, ধান আইলে অতিরিক্ত শ্রমিক আনা লাগতো। তাদের থাকা খাওয়া ও দৈনিক মজুরি সহকারে অনেক টাকা গুণতে হয়। বাজারে ধান বিক্রি কইরা তেমন একটা লাভ করতে পারিনা। খরচ ও প্রাপ্ত অর্থ প্রায় সমান-সমান হইয়া যাইতো। মাথার ঘাম পায়ে ফালাইয়া দিন-রাত পরিশ্রম করার পরে যদি কিছু মুনাফা না পাই, তাইলে কীভাবে হবে? কৃষি অফিসের পরামর্শে গতবছর মেশিনে ধান কাটাইছি, বাইরের শ্রমিক আনা লাগছেনা। কম খরচে সব ধান কাঁইটা দিয়া গেছে। তাই এইবছরও মেশিনে ধান কাঁটাইছি। জমি ভেদে আগে যেখানে লাগতো সাড়ে ৫ থেইক্কা ৬হাজার টাকা, এখন সেখানে ২,৪০০ হতে ৩ হাজার টাকা কইরা লাগতাছে। আমরার অনেক টাকা বাঁচছে মেশিনে ধান কাটাইয়া। কষ্টও করা লাগছেনা আবার রেডিমেট সব পাইয়া যাইতাছি। অনেক সংগঠনরে দেখি ফেসবুকে ছবি দিছে ধান কাঁইটা দিতাছে, কৃষি অফিস ছাড়া আর কাউরে দেখলাম না ধান কাঁটতে সাহায্য করছে।
কৃষিজমিতে কম্বাইন হারভেস্টরে ধান কাঁটতে হলে জমিগুলোকে অবশ্যই শুষ্ক হতে হবে। ভেঁজা জমিগুলোতে মেশিন প্রবেশ করিয়ে ধান কর্তন সম্ভব হচ্ছেনা।ফলে প্রবল ইচ্ছে থাকলেও অনেক কৃষককে প্রচলিত পদ্ধতির অবলম্বন করে ধান কর্তন করা লাগছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যদের ধান কাঁটার ছবিতে নিউজফিড ছেয়ে গেলেও আদতে মুরাদনগরে মাঠ পর্যায়ে কৃষকের ধান কাঁটতে সহায়তা করছে কেবল কৃষি অফিসের কম্বাইন হারভেস্টর মেশিনগুলো।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ পাবেল খান পাপ্পু ডেল্টা টাইমসকে বলেন, কৃষকদের পাশে আমরা সবসময় রয়েছি। ধান লাগানো থেকে কর্তন পর্যন্ত সবসময় সরেজমিনে পরিদর্শনের পাশাপাশি পরামর্শ প্রদান করেছি। কম্বাইন হারভেস্টর দিয়ে ধান কর্তনে কৃষকদের আগ্রহ দেখে আমরা আশাবাদী। আগামীতে মেশিনের ব্যবহার কীভাবে আরো বৃদ্ধি করা যায় সেদিকে নজর রাখছি। বাকি ফসলি জমিগুলোতেও পর্যায়ক্রমে ধান কর্তন করে দেওয়া হবে।
আরএক্স/