ট্রলারে ১০ মরদেহ: পৌর কাউন্সিলরের ১৬৪ ধারার জবানবন্দি


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬:১৭ পূর্বাহ্ন, ১০ই মে ২০২৩


ট্রলারে ১০ মরদেহ: পৌর কাউন্সিলরের ১৬৪ ধারার জবানবন্দি
পৌর কাউন্সিলর খায়ের হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের নাজিরারটেক উপকূলে ট্রলার থেকে ১০ মরদেহ উদ্ধারের মামলায় ৩ দিনের রিমান্ডে শেষে আদালতে ১৬৪ ধারার জবানবন্দি প্রদান করেছেন মহেশখালী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খায়ের হোসেন।


মঙ্গলবার (৯ মে) বেলা সাড়ে ৩ টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫ টা পর্যন্ত টানা ২ ঘন্টা এই জবানবন্দি গ্রহণ করেন কক্সবাজার সদরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্রীজ্ঞান তঞ্চজ্ঞা।


কক্সবাজার সদর থানার তদন্তকারি কর্মকর্তা পরিদর্শক দুর্জয় বিশ্বাস জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে মহেশখালী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খায়ের হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। 


শনিবার দুপুরে কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আসাদ উদ্দিন মো. আসিফের আদালতে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে হাজির করা হয়। বিচারক ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করলে তাকে রিমান্ডে নিয়ে আসা হয়েছে। ৩ দিনের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার আদালতে নেয়া হলে ওখানে কাউন্সিলর খায়ের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন।


জবানবন্দিতে কি বলেছেন ? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে কি বলেছেন আমি জানি না। ওটা আদালত ভালো জানেন।’


তবে এ মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা হিসেবে আদালত তাকে সর্তক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বলেছেন পরিদর্শক দুর্জয় বিশ্বাস। তিনি বলেছেন, এই মামলা এবং ১৬৪ ধারার জবানবন্দি সংক্রান্ত জাতীয় একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ প্রকাশ বিষয়ে আদালতের দৃষ্টি গোচর হয়েছে। যা উচিত ছিল না বলে মন্তব্য করেছে বিচারক। 


ফলে এই মামলার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও আসামী গ্রেফতারের পূর্বেই বেআইনীভাবে ১৬৪ ধারার মত গুরুত্বপূর্ণ গোপনীয় রাষ্ট্রীয় দলিল দেশের শীর্ষ স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার প্রেক্ষিতে এবং গ্রেফতার করার আগেই ১৬৪ ধারায় বর্ণিত আসামীদের নাম ঠিকানা সম্পূর্ণ প্রকাশ করার কারণে নথি সংরক্ষণে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার নিদের্শ প্রদান করেছে আদালত।’


১০ মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) আসামি গিয়াস উদ্দিন মুনির আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। যেখানে আসামি জানিয়েছেন, সাগরে নিহত ১০ জনই জেলে বেশি ডাকাত (জলদস্যু) ছিলেন। তারা পরিকল্পিত ভাবেই সাগরে জেলের বেশে নেমেছিলেন ডাকাতি (দস্যুতা) করার উদ্দেশ্যে। যার মধ্যে চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের কবির হোসাইনের ছেলে সাইফুল ইসলামকে মুনীর সামশু মাঝির ট্রলারে পাঠিয়েছিলেন। আর এ ঘটনায় কাউন্সিলর খায়েরও জড়িত। এরপরই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।


গিয়াস উদ্দিন মুনির চকরিয়ার বদরখালী এলাকার মো. নুর নবীর ছেলে। এর আগে আসামি বাঁশখালীর বাসিন্দা ফজল কাদের মাঝি ও আবু তৈয়ুব মাঝি এবং মাতারবাড়ির কামাল হোসেন প্রকাশ বাইট্টা কামাল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছেন।


প্রসঙ্গত গত ২৩ এপ্রিল গুরা মিয়া নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধিন একটি ট্রলার সাগরে ভাসমান থাকা নামবিহীন ট্রলারটিকে নাজিরারটেক উপকূলে নিয়ে আসে। আর ওই ট্রলারের হিমঘরে হাত-পা বাঁধা ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ইতিমধ্যে উদ্ধার হওয়া ৬ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করলেও মর্গে রয়ে গেছে ৪ জনের মরদেহ ও কংকালটি। ডিএনএ পরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে এ ৫ জনের পরিচয়।

জেবি/ আরএইচ/