উপকূলীয় এলাকায় তাপদাহে অতিষ্ট জনজীবন, চলছে সতর্কীকরণ মাইকিং


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:৩০ অপরাহ্ন, ১২ই মে ২০২৩


উপকূলীয় এলাকায় তাপদাহে অতিষ্ট জনজীবন, চলছে সতর্কীকরণ মাইকিং
মোংলার পশুর নদী

বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকা মোংলায় এখনও ঘূর্ণিঝড় মোখা'র তেমন কোনো প্রভাব পড়তে শুরু করেনি। শুক্রবার (১২ মে) সকাল থেকে আকাশের কোথাও কোথাও মেঘ থাকলেও নেই কোনো বাতাস ও বৃষ্টি। ভ্যাপসা গরমে অস্তির হয়ে পড়েছে মানুষ। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব না থাকায় জনজীবন স্বাভাবিক রয়েছে। 


বন্দরে অবস্থানরত দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য ওঠা-নামা ও পরিবহণের কাজ স্বাভাবিক রয়েছে। এছাড়া মোংলার পশুর ও মোংলা নদী দিয়ে শুক্রবার সকালে সব ধরনের নৌযান চলাচল ও খেয়া পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে। মোখার কোনো ভীতি যেন নেই স্থানীয়দের মাঝে। তবে আকাশ হালকা মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। 


মোংলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে আজ। মোংলা সমুদ্রবন্দরসহ উপকূলীয় এলাকার আকাশে মেঘ আসবে। তবে শনিবার ও রবিবার আগে এই এলাকায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের কর্মকর্তা মো: আজাদ কবির বলেন, ‘চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকলেও ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে সুন্দরবনের নদ-নদীতে পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের তুলনায় দেড় থেকে দুই ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। 


সেই সঙ্গে সাগর ও নদী উত্তাল রয়েছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা উপকূলের দিলে ধেয়ে আসছে। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ যতই এগিয়ে আসছে ততই আতঙ্ক বাড়ছে দেশের উপকূলসহ দেশের চার বন্দর এলাকায়। এই অবস্থায় মোংলা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।

 

শুক্রবার দুপুর থেকে এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মোংলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. হারুনুর রশিদ এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, মোংলা বন্দর থেকে ঘূর্ণিঝড়টি ৯৬৫, চট্টগ্রাম থেকে ১০০৫, কক্সবাজার থেকে ৯৩৫ ও পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৯৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে। বঙ্গোপসাগরে যেসব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার রয়েছে সবগুলোকে নিরাপদে আসার জন্য বলা হয়েছে। এদিকে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত জারির পর মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব এলার্ট নম্বর-‘২’ জারি করেছে জানিয়ে হারবার মাস্টার কমান্ডার শাহিন মজিদ বলেন, এখনই তারা জরুরি বৈঠক করবেন। তবে বন্দরে অবস্থানরত বাণিজ্যিক জাহাজে পণ্য ওঠানামার কাজ এখনই বন্ধ হচ্ছে না। সতর্ক সংকেত আরও বাড়ানো হলে তখন বন্ধ করা হবে।


এ দিকে ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে মোংলা কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন। শুক্রবার সকাল থেকে উপকূলের ১৪ স্টেশন থেকে সতর্কীকরণ মাইকিং করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বঙ্গোগসাগর, সুন্দরবনের নদ-নদী ও মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলে চলাচলরত দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের নাবিক, জেলে-মাঝিমাল্লাদের নিরাপদে সরে যেতে বলা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোস্টগার্ডের এ প্রচারণা চলবে। কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের (মোংলা) অপারেশনাল অফিসার লে. কমান্ডার তারেক আহমেদ বলেন, সুন্দরবন উপকূলে সতর্কীকরণ ও সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতার জন্য কোস্টগার্ডের হাই স্পিডবোট ও জাহাজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তিনি আরও জানান, পর্যাপ্ত খাদ্য সামগ্রী ও চিকিৎসার জন্য মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।


আরএক্স/