উপকূলে জুড়ে তান্ডব: কক্সবাজারের ১২ হাজার ঘর বিধ্বস্ত


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭:৩৯ অপরাহ্ন, ১৪ই মে ২০২৩


উপকূলে জুড়ে তান্ডব: কক্সবাজারের ১২ হাজার ঘর বিধ্বস্ত
উপকূলে জুড়ে তান্ডব

ঘূর্ণিঝড় মোখা তার গতিপথ পরিবর্তন করে মিয়ানমারের উপক‚ল হয়ে স্থলভাগে আঘাত হানলেও শেষ রক্ষা হয়নি দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন। যেখানে এক নারী গাছ চাপায় আহত হলেও আর কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে পুরো দ্বীপটি ক্ষত-বিক্ষত করে দিয়েছে মোখার আঘাত। 


রবিবার (১৪ মে) বিকাল ৫ টার পরে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, সকাল থেকে শুরু হওয়া ঝড়ো হওয়া দুপুর ১ টার পর থেকে ক্রমাগত তীব্র হতে থাকে। বিকাল ৪ টার পর থেকে বাতাসের তীব্র কমে বৃষ্টিপাতের মাত্রা বাড়তে থাকে। এই পুরো সময়ে দ্বীপের ১২ শতাধিক আধাপাকা টিন শেড ঘর, ছোট্ট মানের কটেজ বাতাসের বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। দ্বীপের ৭৫ শতাংশ গাছ ভেঙ্গে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গেছে। সাগরের পানি স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে একটু বেশি হলেও কোথাও প্লাবিত হয়নি।


সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের সদস্য (মেম্বার) খোরশেদ আলম জানিয়েছেন, দ্বীপের পূর্ব পাশে অবস্থিত বাজারের অধিকাংশ দোকান বাতাসে উড়ে গেছে। গাছ চাপায় এক নারী আহত হলেও আর কেউ হতাহত হয়নি। চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবক সড়কের ভেঙ্গে পড়া গাছ সরিয়ে চলাচল উপযোগি করার কাজ চলছে।


দুপুর ২ টায় সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের কোনারপাড়ায় গাছ চাপায় আহত দ্বীপে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ওসি মো. আবদুল হালিম। তিনি জানান, প্রয়োজনে তাকে টেকনাফ আনা হতে পারে।


সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা ট্রলার মালিক সমিতি সাবেক নেতা আবু তালেব জানিয়েছেন, আগে থেকে আঘাতের যে তথ্য প্রচার হয়েছে তার মত আঘাত না হলেও দ্বীপকে ক্ষত-বিক্ষত করে দিয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে দ্বীপের দক্ষিণ, পূর্ব অংশে। যেখানে ব্যাপক সংখ্যক গাছ ছাড়াও আধাপাকা, টিন শেড সকল ঘর ভেঙ্গে গেছে। উড়ে গেছে ছাউনী।


বৃষ্টির সাথে সাগরের ঢেউর তীব্রতা এখন রয়েছে বলে জানিয়েছেন, দ্বীপের ব্যবসায়ী নাহিদ হোসেন। তিনি জানান, দ্বীপের মানুষের যে ক্ষতি হয়েছে তা পুঁষিয়ে নিতে অনেক সময় লাগবে।


মোখার আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি সেন্টমার্টিন দ্বীপে হয়ে বলে স্বীকার করে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানিয়েছেন, সেন্টমার্টিনের চেয়ারম্যান ও সেখান থেকে পাওয়া প্রাথমিক তথ্য মতে দ্বীপের ৭৫ শতাংশ গাছ ছাড়াও ১২ শতাধিক ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত কোন হতাহতের তথ্য পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর দ্বীপে গিয়ে ক্ষতির সার্বিক চিত্র বা পরিমাণ জানা যাবে।


তিনি জানান, দ্বীপে আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্র অবস্থান নিতে বলা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় আশ্রয় কেন্দ্র ত্যাগের অনুমতি দেয়া হবে। আশ্রয় কেন্দ্রে খাবার, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন।


আরএক্স/