মুন্সীগঞ্জে পদ্মা নদীর তীরে ভাঙন আতঙ্ক


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:২৪ অপরাহ্ন, ২০শে মে ২০২৩


মুন্সীগঞ্জে পদ্মা নদীর তীরে ভাঙন আতঙ্ক
পদ্মা নদীর তীরে ভাঙন আতঙ্ক

বর্ষা মেীসুমের আগেই  মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় পদ্মা নদীর তীরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ ভাঙনে গত কয়েক দিনের ব্যবধানে উপজেলার গাঁওদিয়া, বড় নওগাঁও, সুন্দিসার, বেজগাঁও, লৌহজং-তেওটিয়াসহ বিভিন্ন গ্রামে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ভিটেমাটি-কৃষি জমি, গাছপালাসহ নানা স্থাপনা। ঢেউয়ের সঙ্গে ভাঙন অব্যাহত থাকায় আতঙ্কে রয়েছেন নদী তীরের লাখো মানুষ। অনেকেই সরিয়ে নিচ্ছেন ঘরবাড়ি ও স্থাপনা।


স্থানীয়দের অভিযোগ, নদীতে শত শত ড্রেজার দিয়ে অবৈধ ও অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের প্রভাবের কারনেএ অসময়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে।


সরেজমিনে ভাঙন কবলিত এলাকা ঘুরে দেখা যায়, একদিকে নদীর ঢেউয়ের সঙ্গে ভেঙে পড়ছে তীরের জমি, অন্যদিকে শেষ সম্বলটুকু বাঁচাতে ঘর-বাড়ি স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার কাজ করছেন স্থানীয়রা। গত ৫ দিনে হঠাৎ নদী ভাঙ্গন আগ্রাসী রূপে আতঙ্কে রয়েছে নদী তীরবর্তিবাসি।


বেজগাঁও এলাকাবাসিরা জানান,  আমাদের ১ তৃতীয়াংশ জমি নদীগর্ভে  বিলীন হয়ে গেছে । গত ক’দিন ধরে আবারো ভাঙন শুরু হয়েছে, এখন বাকি জায়গাটুকু অবশিষ্ট থাকবে কিনা তাও জানিনা । টিনের ঘর ভেঙে সরিয়ে নিচ্ছি। শত শত মানুষ এখন একই সমস্যায়।


একবৃদ্ধা ( জমিলা খাতুন) বলেন, ৪/৫ দিন ধরে নদী ভাঙছে। আমরা অনেক দিনধরে শুনছি এখানে নদী রক্ষা বাঁধ দেবে, কিন্ত বাঁধ আর হয় না। রাতে বড় বড় ঢেউ আসে, আতংকে ঘুম আসে না। আমাগো বাপ-দাদার ভিটা চোখের সামনে শেষ হইতাছে। বাচ্চাদের নিয়ে কই থাকুম সেই চিন্তায় এখন দিশেহারা।’


ভাঙ্গন কবলিত এলাকাবাসিরা বলেন,   বর্ষা আসার আগেই ভাঙনের একটাই কারন মাঝ নদীতে শত শত ড্রেজার দিয়ে বালু কাটার জন্য। বালু কাইটা নিতাছে বালুদস্যুরা আর ভাঙতাছে আমাগো জমি। এই ড্রেজারগুলো বন্ধ করা লাগবো।’


কয়েক দশকে নদী ভাঙনে এ উপজেলার কয়েক ডজন গ্রাম পুরোপুরি বিলীন নদীগর্ভে। বর্ষা আসার আগেই ভাঙন পরিস্থিতি রোধ করা না গেলে  বর্ষায় নদী ভাঙ্গনে আরো ভয়াবহ রুপ নিবে।


এ বিষয়ে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল আউয়াল জনবানীকে বলেন, এখন যে ভাঙন দেখা দিয়েছে সেটি নদীর ঢেউয়ের কারণে। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, উপরের অংশটুকুতেই শুধু ভেঙেছে। আমাদের উদ্যোগ রয়েছে, ভাঙ্গন রোধে সেখানে জিও ব্যাগ ফেলা হবে।


তিনি আরো বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে লৌহজংয়ে গত  ৫ মাসে অভিযান চালিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলনের দায়ে সর্বমোট ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। 


এখন লৌহজং অংশের নদীতে কোথাও অবৈধ বালু উত্তোলন নেই। শরীয়তপুর, শিবচর অংশে থাকতে পারে। সেগুলোও নজরদারিতে রাখা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের মাধ্যমে বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে।


আরএক্স/