ফরিদপুর বিভাগে অন্তর্ভুক্তির বিরুদ্ধে শরীয়তপুরে বিক্ষোভ-সড়ক অবরোধ

সরকার নতুন করে ফরিদপুর বিভাগ গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে, যেখানে শরীয়তপুর জেলাকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রয়েছে। তবে এ প্রস্তাবে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে শরীয়তপুরের সাধারণ মানুষ। তাদের দাবি, শরীয়তপুরের ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও জীবনধারা ঢাকার সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত। তাই তারা ঢাকা বিভাগের অংশ হিসেবেই থাকতে চান।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শরীয়তপুর শহরের গুরুত্বপূর্ণ চৌরঙ্গী মোড়ে ঢাকা-শরীয়তপুর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রা। প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী এই অবরোধ কর্মসূচির ফলে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে মানববন্ধনে মিলিত হয়।

আরও পড়ুন: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সিগন্যালে দুর্ঘটনা, ফেনীতে নিহত ২

‘জাগো শরীয়তপুর’ ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে শরীয়তপুরের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। তারা হাতে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে স্লোগান দেন— “জাগো জাগো শরীয়তপুর, যাবোনা ফরিদপুর”।

মানববন্ধনে জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক জাকির হোসেন হাওলাদার বলেন,“প্রস্তাবিত ফরিদপুর বিভাগে শরীয়তপুরকে জুড়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। অথচ শরীয়তপুরের মানুষের আত্মমর্যাদা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ঢাকার সঙ্গেই জড়িত। ইতিহাসের দিক থেকে, ভৌগোলিক যোগাযোগের দিক থেকেও শরীয়তপুর ঢাকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। তাই আমরা ঢাকা বিভাগেই থাকতে চাই।

স্থানীয় যুবক আমিনুল ইসলাম জিতু বলেন, “ঢাকা বিভাগ থেকে শরীয়তপুরকে আলাদা করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। এটি করা হলে মানুষের আবেগ-অনুভূতিতে আঘাত করা হবে। তাই আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই- শরীতপুরকে যেন ফরিদপুর বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করা না হয়। আমরা ঢাকা বিভাগেই থাকতে চাই।”

বক্তারা মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাবি জানান, শরীয়তপুর জেলাকে ফরিদপুর বিভাগে অন্তর্ভুক্ত না করে ঢাকা বিভাগেই রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক।

মানববন্ধনে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, সাংস্কৃতিককর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজারো মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন: শরীয়তপুরে যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক জেলা সমন্বয়ক ইমরান আল নাজির বলেন, “আমরা ঢাকার সঙ্গে যাতায়াত করি, চিকিৎসা থেকে শুরু করে পড়াশোনা সবকিছুই ঢাকাকে কেন্দ্র করে। হঠাৎ করে আমাদের ফরিদপুর বিভাগে নেওয়ার সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া যাবে না। ঢাকা বিভাগের সঙ্গে শরীয়তপুরের ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি ও সামাজিক বন্ধন ঢাকার সঙ্গে অটুট। এই সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করা হলে আমরা কঠোর কর্মসুচি দিতে বাধ্য হব।”

একজন তরুণ আল আমিন হোসেন বলেন, “ঢাকা বিভাগের অংশ হিসেবে আমরা নিজেদের পরিচয় দিতে গর্ব বোধ করি। তাই আমরা চাই, শরীয়তপুর যেন ঢাকার সঙ্গেই থাকে।”

মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। 

আরএক্স/