সাংবাদিকদের উপর হামলার ৭২ঘন্টা পরেও গ্রেফতার হয়নি কেউ


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:০০ অপরাহ্ন, ২১শে মে ২০২৩


সাংবাদিকদের উপর হামলার ৭২ঘন্টা পরেও গ্রেফতার হয়নি কেউ
ফাইল ছবি

কুমিল্লার মুরাদনগরে কথিত সাংবাদিক কর্তৃক সন্ত্রাসী হামলায় আহত হয়েছে উপজেলায় কর্মরত তিনজন সংবাদিক। গত শুক্রবার বিকালে উপজেলা প্রেস ক্লাবের কার্যালয়ে ঢুকে সাংবাদিকদের উপর হামলা চালায় কথিত সাংবাদিক নামধারী সন্ত্রাসীরা। ঘটনার ৭২ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও হামলাকারী সন্ত্রাসীরা ধরাছোঁয়ার বাহিরে থাকায় অন্যসব সাংবাদিক ও মানুষের মনে বিরাজ করছে অজানা আতঙ্ক।


সূত্রে জানা যায়, উপজেলা প্রেস ক্লাবের কার্যালয়ে সাংবাদিক শামীম আহম্মেদ ও এম ফয়জুল ইসলাম ফয়সাল পেশাগত দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্যে সংবাদ প্রস্তুত করছিল। এলাকার প্রভাবশালী একটি মহলের সহযোগীতায় লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত কথিত সাংবাদিক মাহবুব আলম আরিফ ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর ৩০-৩৫জন সদস্য অতর্কিতে হামলা চালায়। হামলার পরে আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইমার্জেন্সি বিভাগে গেলে সেখানে পুনরায় তাদের উপর হামলা চালায় সন্ত্রাসী বাহিনী। সহকর্মীদের উপর হামলায় মর্মাহত হৃদয়ে চিকিৎসারত অবস্থায় দেখতে যান মুরাদনগর প্রেসক্লাব ও মুরাদনগর উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ফাউন্ডেশনের সভাপতি, সাংবাদিক প্রভাষক আজিজুর রহমান রনি। হাসপাতাল কমপ্লেক্সে তাকে লক্ষ্য করে সন্ত্রাসী বাহিনী টেনে হিঁচড়ে হামলা চালায়। মাথায় তীব্র আঘাতের ফলে গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকে দ্রুত কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।


কথিত সাংবাদিক মাহবুব আলম আরিফ ও তার অনুসারী মাদকসেবীদের সহযোগিতায় ‘মুরাদনগর লাইভ.টিভি’ নামের ফেসবুক পেইজ খুলে মানুষকে হয়রানি করে বেড়ায়। সাধারণ মানুষকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আর্থিক ও  মানুষিকভাবে হয়রানি করে উপজেলায় ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশ সরকার আইপি টিভি বন্ধে সোচ্চার থাকলেও সে প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় বেড়ে উঠে তার সেই ফেসবুক পেইজের নামে খুলেছে অফিস।


আহত সাংবাদিকদের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাথায় গুরুতর আঘাতের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। হামলাকারীদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও করেন তারা।


গুরুতর আহত তিনজন সাংবাদিক কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।


মুরাদনগর উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাবিবুর রহমান বলেন, সাংবাদিকদের কলম রোধ করার জন্য জঘন্যতম এই হামলা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সড়কের আসেপাশের সকল সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণ করলেই হামলাকারী সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করা যাবে। উপজেলা প্রেস ক্লাব কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে কম্পিউটার ও আসবাবপত্র ভাংচুরসহ সাংবাদিক ফয়সালের টাকা ও আজিজুর রহমান রনির স্মার্টফোন ছিনিয়ে নিয়েছে।


সচেতন মহলের লোকজন বলছেন, মানুষের পাশে থাকে সাংবাদিকরা। তাদের উপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। দোষীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ঘটনাস্থল থেকে থানা নিকটে ছিল, পুলিশ সময়মতো পৌঁছালে ঘটনা সংঘটিত হতোনা। হামলাকারী সন্ত্রাসীরা এখনো রাস্তায় বুক চিতিয়ে ঘুরছে। আমরা তাদের মুক্ত বিচরণে আতঙ্কিত। কলম সৈনিকরা যেখানে সর্বসম্মুখে নিরাপদ নয়, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?


মুরাদনগর থানার ওসি আজিজুল বারী ইবনে জলিল বলেন, মুরাদনগর উপজেলা প্রেসক্লাবে হামলার ঘটনায় অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


জেবি/ আরএইচ/