আদালতে রাকিবের জবানবন্দি

ভুয়া তালাকের পরেও শারীরিক সম্পর্ক ছিল তামিমা ও রাকিবের


Janobani

আজাহারুল ইসলাম সুজন

প্রকাশ: ০৬:৫২ অপরাহ্ন, ২১শে মে ২০২৩


ভুয়া তালাকের পরেও শারীরিক সম্পর্ক ছিল তামিমা ও রাকিবের
ফাইল ছবি

ক্রিকেটার নাসির হোসাইন ও তামিমা সুলতানা তাম্মির বিরুদ্ধে ডিভোর্স না দিয়ে অন্যের স্ত্রীকে বিয়ে করার অভিযোগের মামলায় বাদী রাকিব হাসানের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। 


রবিবার (২১ মে) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে রাকিব হাসানের সাক্ষ্য ও সাক্ষীর বিপরীতে জেরা শেষ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।


এদিন, কাঠগড়ায় আসামি ক্রিকেটার নাসির হোসাইন উপস্থিত থাকলেও এদিন আদালতে সময় আবেদন করেন তামিমা সুলতানা। 


বাদীপক্ষের আইনজীবী ইসরাত হাসান এ তথ্য জানান।


রাকিব হাসানের জবানবন্দী ও সাক্ষীর জবানবন্দীতে মামলার বাদী রাকিব হাসান আদালতকে বলেন, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তামিমা সুলতানার সাথে আমার বিয়ে হয়। সংসার জীবনে আমাদের একটি বয়স ১০ বছরের কন্যা সন্তান রয়েছে। আসামি তামিমা সুলতানাকে বিয়ে পর তার পরিবারসহ ভাড়া বাসায় বসাবাস করতে থাকি। ২০১৫ সালে তামিমা সৌদি এয়ারলাইন্সে চাকরি লাভ করে। চাকরির জন্য তামিমাকে বেশিরভাগ সময় বাংলাদেশের বাইরে থাকতে হতো। অল্প সময়ের ছুটিতে দেশে আসলে আমরা হোটেল লা মেরিডিয়ানে থাকতাম। ২০১৭ সাল থেকে শুরু করে ২০২০ সালের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে আমরা হোটেল লা মেরিডিয়ানে থেকেছি।


এছাড়াও আমার দোকানের মালিক লুৎফর ভাই ও তার স্ত্রী রুপা ভাবীর সাথে আমাদের ভালো সম্পর্ক থাকায় তাদের বাসায় প্রায়ই বেড়াতে যেতাম। সেখানে আলাদা রুমে আমরা থাকতাম এবং আমাদের শারীরিক সম্পর্ক হতো। এরপর করোনা মহামারীর কারণে তামিমা সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরতে না পারায় সেখানে অবস্থান করতে থাকে। সৌদি আরবে যাওয়ার ২ দিন আগেও আমরা একই বাসায় ছিলাম এবং আমাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। 


এরপর, আমার স্ত্রী থাকা অবস্থায় তামিমা সুলতানা আসামী নাসির হোসেনকে বিয়ে করে। সেই বিয়ের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে আমি তামিমা ও নাসির হোসেনের অবৈধ বিয়ের খবর দেখতে পাই। আমার সাথে সম্পর্ক বজায় রেখে আকষ্মিক এরকম কাজ দেখে আমি হতবাক হয়ে যাই। ফোনে নাসির হোসেন আমাকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি সব জেনেশুনেই তামিমাকে বিয়ে করেছেন। যার কারণে, আসামিদের বিচার চেয়ে আমি এই মামলাটি দায়ের করি। ভুয়া তালাকের দাবী করা তারিখের পরেও আমাদের শারীরিক সম্পর্ক ছিল। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে ছিলাম। আমাদের কখনই ডিভোর্স হয়নি। 


উল্লেখ্য, গত বছর ৯ ফেব্রুয়ারি ক্রিকেটার নাসির হোসাইন ও তার স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মির বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন একই আদালত। তবে নাসিরের শ্বাশুড়ি সুমি আক্তারকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।


এরপর গত বছর ৬ মার্চ মহানগর দায়রা আদালতে নাসির ও তামিমার বিরুদ্ধে চার্জগঠনের আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন করেন তাদের আইনজীবী কাজী নজিব্যুল্লাহ হিরু।


এদিকে সুমি আক্তারকে অব্যাহতির আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন দায়ের করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসান।


এর আগে গত ৩১ জানুয়ারী বাদীপক্ষ ও আসামিপক্ষের আবেদনের শুনানি গ্রহণ শেষ হয়। ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ৬ষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মুর্শিদ আহাম্মেদের আদালত আসামি ও বাদীপক্ষের পৃথক দুটি রিভিশন খারিজ করে দেন। অর্থাৎ নাসির হোসাইন ও তামিমা সুলতানার বিচার চলবে, মামলার দায় থেকে অব্যাহতি পাওয়া নাসিরের শাশুড়ি সুমি আক্তার বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন হবেন না মর্মে আদেশ দেন।


২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাম্মির স্বামী রাকিব হাসান বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন।


জেবি/ আরএইচ