জিনের বাদশার প্রতারণায় সবকিছু খোয়ালেন ৩ নারী
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে কথিত জিনের বাদশার প্রতারণায় নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার খুইয়েছেন তিন নারী। স্বর্নের মূর্তি পাইয়ে দেয়ার লোভ দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে এসব মালামাল হাতিয়ে নেয় প্রতারক চক্রটি।
সিংগাইর উপজেলার সায়েস্তা ইউনিয়নের নীলটেক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীরা হলেন, ওই গ্রামের নুরজাহান(২৪), তার মামাতো বোন পায়েল আক্তার (১৪) ও খালা সুফিয়া বেগম (৫০)। এ ঘটনায় সিংগাইর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। তবে পুলিশ এখনও অভিযুক্তদের কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি।
ভুক্তভোগী নূরজাহান আক্তার জানান, গত ৩ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে হঠাৎ তার মামাতো বোন পায়েলের কাছে প্রথমে একটা ফোন আসে। ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে কেউ একজন জিনের বাদশা হিসাবে নিজেকে পরিচয় দেয়। এরপর বিভিন্ন সুরা ও ধর্মীয় উপদেশমূলক কথা-বার্তা বলে তাকে প্রভাবিত করে। নানা বিভিন্ন প্রলোভন দেখানো হয়। কথিত জিনের বাদশা জানায়, নীলটেক ব্রিজের উত্তর পাশে একটি স্বর্ণের মূর্তি আছে। সেটা সংগ্রহ করো।
জিনের বাদশার নির্দেশ মতো পায়েল মূর্তিটি সংগ্রহ করে বাড়িতে নিয়ে আসে। একই ভাবে আরও লোভ দেখিয়ে পরবর্তীতে তার কাছ থেকে ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ ৬ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন হাতিয়ে নেয় জিনের বাদশা ও তার প্রতারক চক্র। পরে জানা যায়, ওই মূর্তিটি সীসা দিয়ে তৈরি করা।
এরপর সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে একই গ্রামের নূরজাহান আক্তারকেও জিনের বাদশা পরিচয়ে ফোন করা হয়। কথিত ওই জিনের বাদশা তার সাথে সুমধুর কণ্ঠে কথা বলেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী। তিনি বলেন, জিনের বাদশা তাকে ২১ বার সুরা ফাতেহা, ৬১ টি বার দরুদ শরীফ এবং ৪১ বার সূরা ইখলাস পাঠ করায়। নানা লোভ-লালসা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে জিনের বাদশা বলে, তার সামনে অনেক বিপদ। এই বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে হলে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে হবে। বিষয়টি কাউকে জানালে তার একমাত্র সন্তানের মৃত্যু হবে। নূরজাহান ভয়ে এক আত্মীয়ের কাছ থেকে ধার করে দুই দফায় দুটি বিকাশ নম্বরে (০১৯৩৫৭২২১৮৫ ও ০১৮৯২২০৬৮১৮) ৪০ হাজার টাকা পাঠান। টাকা পাঠানোর পর ওই ফোন নম্বর দুটি বন্ধ পাওয়া যায়।
নূরজাহান আরও জানান, একইভাবে তার খালা সুফিয়া বেগমের ৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কারও হাতিয়ে নিয়েছে জিনের বাদশা পরিচয় দেয়া এ প্রতারক।
এ ব্যাপারে নূরজাহান বেগম বাদি হয়ে সিংগাইর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রেজাউল হক জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
এসএ/