মুন্সীগঞ্জে বর্ষার আগেই চাঁই তৈরীর হিড়িক


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:১৬ অপরাহ্ন, ২৯শে মে ২০২৩


মুন্সীগঞ্জে বর্ষার আগেই চাঁই তৈরীর হিড়িক
চাঁই তৈরী

খাল-বিল, নদী-নালায় নতুন পানির আগমে নতুন আসতে শুরু করেছে। মাছ ধরার জন্য চাঁই তৈরিতে ব্যস্ততা বাড়ছে জেলে কারিগরদের। মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নের নয়াকান্দি গ্রামে চাঁই বুননে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রায় অর্ধশত কারিগর।


একদিকে নতুন পানি অন্যদিকে দেশীয় মাছের প্রজনন মৌসুম হওয়ায় খাল, বিল, নদীতে মাছের সংখ্যা বাড়ছে। দেশি মাছের স্বাদ নিতে গ্রামের খালে এবং উন্মুক্ত জলাশয়ে চাঁই পেতে মাছ ধরছে গ্রামের মৎস্যজীবী, হতদরিদ্রসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ। তাই চাহিদার সামাল দিতে চাঁই বুননে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। শুধু ঘরের কর্তাব্যক্তি নয়, চাঁই বুনন কাজে সহযোগিতা করছে স্ত্রী, পুত্র, এমনকি পরিবারের বৃদ্ধ মা-বাবাও। তাদের সহযোগিতায় বুনন কাজে গতি পেয়েছে কারিগররা।


সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নয়াকান্দি গ্রামে অর্ধশত পরিবারের কেউ বাড়ির আঙ্গিনায় কিংবা ঘরের বারান্দায়, কেউবা আবার বাড়ির পাশে ফাঁকা জায়গায় বসে আপন মনে বাঁশ কাটছেন, আবার কেউ বাঁশের সলা তৈরি করছেন। এ কাজে বসে নেই কেউই। ধাপে ধাপে চাঁই তৈরির কাজ শেষে সেগুলো থরে থরে সাজিয়ে রাখাসহ নানা কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন তারা। শিশু কিশোর থেকে শুরু করে পরিবারের সবাই হাত লাগিয়েছেন এসব কাজে।


জানা যায়, নয়াকান্দি গ্রামের চাঁই কারিগররা বিভিন্ন এনজিও ও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বাঁশ কিনে চাঁই তৈরি করে থাকেন। এসব চাঁই বিক্রি করেই নয়াকান্দি গ্রামের অর্ধশত পরিবারের সংসার চলে।


চাঁই বুননের কারিগর উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নের নয়াকান্দি গ্রামের নবীন কুমার বলেন, প্রতি বছর মাঘ মাসে চোখের দৃষ্টিতে অনুমান করে ১৮০ থেকে ২০০ টাকার প্রতিটি বাঁশ কিনতে হয়। এরপর বাঁশ সাইজ মতো কেটে পানিতে ভিজিয়ে রেখে শলা তৈরি করতে হয়। 


প্রতি সপ্তাহের ৩দিন বাঁশ থেকে শলা তৈরি করি ওই শলা তৈরির ফাঁকে বাকি ৪ দিন দিনমজুরির কাজ করে বর্তমানে সংসার চালাইতেছি। সরকারি সহায়তায় সহজ শর্তে এবং বিনা সুদে ঋণ পেলে একটু ভালোভাবে জীবন কাটাতে পারতাম।


চাঁই বিক্রেতা কামাল হোসেন বলেন, বর্তমানে প্রতিটি চাঁই গড়াসহ (চাঁইয়ের দুপাশের বেড়াসহ) ১২০/১২৫ টাকা বিক্রি করছি। গড়া ছাড়া বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। তিনি আরও বলেন, আমি নিজে চাঁই বানাই না। কারিগরদের কাছ থেকে কিনে এনে বিক্রি করি। এ থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার ও ছেলেমেয়ের লেখা পড়ার খরচ চালানো দিন দিন কঠিন হয়ে যাচ্ছে।


কারিগররা  বলেন, চাঁই তৈরি কুটির শিল্পের আওতায় পড়ে। আর্থিক সমস্যার কারণে জেগে উঠতে পারছে না এ শিল্প। সরকারি সহায়তা পেলে তারা আরও সচ্ছল হতে পারত।


আরএক্স/