নারী দিয়ে ফাঁদ পেতে অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে মুক্তিপণ দাবি, গ্রেফতার ৩


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:৩২ অপরাহ্ন, ২৯শে মে ২০২৩


নারী দিয়ে ফাঁদ পেতে অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে মুক্তিপণ দাবি, গ্রেফতার ৩
গ্রেফতারকৃত আসামিরা

মাগুরায় নারী দিয়ে ফাঁদ পেতে অশ্লীল ভিডিও ধারন ও জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবীর অভিযোগে দুই সহযোগী নারীসহ চক্রের মুলহোতা গ্রেফতার করেছে মাগুরা জেলা পুলিশ।


রবিবার (২৮ মে) মাগুরা পুলিশের অভিযোগ আসে মাগুরার ডেফুলিয়া গ্রামের শামসু বিশ্বাস(৩৬) নামের এক ব্যক্তিকে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা নতুন বাজার এলাকা থেকে অপহরণ করে নিয়ে আটক করে ভিকটিমের মোবাইল দিয়ে ফোন করে ১ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করছে, টাকা না দিলে ভিকটিমকে নারী দিয়ে ফাসিয়ে অশ্লীল ভিডিও বানিয়ে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবে এবং ভিকটিমকে মেরে গুম করে দেবার হুমকি প্রদান করছে।


এরুপ অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাগুরা পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় ভিকটিম উদ্ধারসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল,সিসিআইসি টিমকে নির্দেশ প্রদান করলে সাইবার টিম ও ডিবি পুলিশের একটি চৌকশ টিম এটা নিয়ে কাজ শুরু করে।


ইতিমধ্যে অভিযোগকারির সাথে উদ্ধার অভিযানের সদস্যরা যোগাযোগ রক্ষা করতে থাকে। অভিযোগকারীর কাছ থেকে জানা যায় দুস্কৃতিকারীরা মুক্তিপণ গ্রহণের জন্য একটা বিকাশ মোবাইল নাম্বার প্রদান করেছে। 


উক্ত বিকাশ নাম্বারে আধা ঘন্টার মধ্যে মুক্তিপনের টাকা প্রদান না করলে ভিকটিমকে মেরে ফেলবে এবং ভিকটিমের খারাপ ভিডিও করে ছেড়ে দেবে বলে ভয় দেখাচ্ছে।


পুলিশের উদ্ধারকারি টিম আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় ও স্থানীয় গোয়েন্দা তথ্যে ভিত্তিতে মাগুরার নিজ নান্দুয়ালি এলাকায় অভিযান করে চক্রের মুল হোতা সহ সহযোগি দুই নারীকে আটক করে এবং ভিকটিম শামসু বিশ্বাস(৩৬) কে উদ্ধার করে। 


গ্রেফতারকৃত আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে এইভাবে প্রতারণা করে আসছিল বলে তাদের জিজ্ঞসাবাদে জানা যায়। এই চক্রের মূলহোতা নিজনান্দুয়ালী এলাকার মৃত সালেক শেখের ছেলে শাহিনুর শেখ(৪২)আর অপর দুইজন কুদ্দুসের স্ত্রী জুলেখা (৩৫) ও জাকির ওরফে অপুর স্ত্রী নদী(৩৫) তার সহযোগি। 


চক্রের অন্যান্য সদস্যদের সহায়তায় নদীর মোবাইল নাম্বার থেকে টার্গেট ব্যক্তিদেরকে ফোন করে সম্পর্ক গড়ে তোলে, এক পর্যায়ে একসাথে দেখা করার কথা বলে টার্গেট ব্যক্তিকে মাগুরায় নতুন বাজার এলাকায় ডেকে এনে কৌশলে নিজ নান্দুয়ালি এলাকায় জুলেখার বাড়িতে নিয়ে যায়। 


সেখানে আগে থেকেই মুল হোতা শাহিন ওৎপেতে থাকে, ভিকটিমকে রুমে নিয়েই তাকে উলঙ্গ করে চক্রের নারী সদস্যরা তাদের সাথে আপত্তিকর অবস্থা তৈরি করে আর শাহিন তার নিজ মোবাইল দিয়ে তা ভিডিও করে। তারপর ভিকটিমের ফোন থেকেই তার বন্ধু/আত্মীয়দের কাছে কল করে মুক্তিপণ দাবি করে আর মারতে থাকে। আসামী শাহিনের মোবাইল ডিভাইস থেকে এরকম কয়েকজনের জোরপূর্বক অশ্লীল ভিডিও ধারনের প্রমান মিলেছে। 


এই বিষয়ে আরো তদন্ত চলমান। গ্রেফতারকৃত ১নং আসামী শাহিনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে অস্ত্রসহ অপহরণ করে ২ টি খুনের মামলাসহ একাধিক মাদক ও চুরির মামলাসহ সর্বোমোট ০৬টি মামলা রয়েছে। 


এই সংক্রান্তে মাগুরা থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। সোমবার বিকাল তিনটায় মাগুরা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তথ্য জানানো হয়।


আরএক্স/