ড্রামের ভেলাই শেষ ভরসা


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:২৬ অপরাহ্ন, ২৯শে মে ২০২৩


ড্রামের ভেলাই শেষ ভরসা
ছবি: জনবাণী

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার বড়হরপাড়া ও পৌরঘোজা গ্রাম। এই গ্রাম দুটিতে প্রায় পাঁচ হাজারের মত মানুষের বসবাস। আশেপাশের প্রতিটি গ্রামের রাস্তাঘাট-ব্রীজ একের পর এক নতুন নির্মিত হলেও এখানে গত ছয়মাস পর্যন্ত নেই ব্রীজ। লতাচাপলী ইউনিয়নের এই এলাকার মানুষের দুর্ভোগ দেখার মত নেই যেন কেউ। 


বর্ষাকালে এ দুর্দশা আরও তীব্র আকার ধারণ করে। খাল পার হতে গিয়ে প্রতিনিয়ত মানুষকে দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। এমনকি রাতে আরো বেশি দুর্ভোগ নিয়ে ব্রীজ পারাপার হতে হয় গ্রামবাসীদের। স্কুলের ছোট ছোট ছাত্র-ছাত্রী এবং রোগীদের ক্ষেত্রে ভোগন্তির মাত্রা আরো বেশি।


দুইটি গ্রামের মধ্য থেকে বহমান এই খালটি। খাল হলেও দেখতে অনেকটা নদীর মত। এই গ্রামের স্কুল, কলেজ ও মাদরাসায় পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীসহ হাজারো মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, প্রতিদিন রশি টানা, চরম ঝুঁকিপূর্ণ ড্রামের উপর কাঠের তক্তা দিয়ে নির্মিত একটি নৌকায় পারাপার হয় আশপাশের প্রায় ৭ টি গ্রামের মানুষ।


আরও পড়ুন: নড়বড়ে হয়ে গেছে কলাপাড়ার ভাসমান সেই কাঠের সেতু


বিশেষ করে বৃষ্টি হলে এই খাল পার হওয়া অনেক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। গ্রামবাসীর জন্য ইউনিয়নের বাজার বা উপজেলা শহরে যাতায়েতের সহজ পথ হচ্ছে এটি। এই খালের উপরে যে রশি টানা খেয়াটি রয়েছে তাতে নেই কোন মাঝি। ফলে প্রায়ই ঝড়-বৃষ্টিতে এলাকাবাসীদের চরম কষ্ট পোহাতে হয়। গ্রামগুলোর প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন মাদরাসা ও স্কুলে যাতায়াত করে।


এছাড়া প্রতিদিন শত শত গ্রামবাসীরা স্কুল, কলেজ, হাসপাতালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ সারতে থানা এবং উপজেলা শহরে এই খাল পার হয়ে যাতায়াত করে। 


স্থানীয় রহিমা বেগম বলেন, আমরা সব সময় আতঙ্কে থাকি। প্রায় সময় এখানে ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে। স্কুলপড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীদের জন্য এটা খুবই বিপদজ্জনক। অনেক ছাত্র ছাত্রীরা সাঁতার জানে না। আমার ছেলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে তবুও প্রতিদিন আমি তাকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া আসা করি। কারণ ও এই খাল একা পার হতে পারেনা।


ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার পথে হনুফা বেগম বলেন, আমি খুব অসুস্থ মানুষ তবুও কষ্ট করে আমাকে সপ্তাহে তিনদিন ডাক্তারের কাছে যেতে হয়। কিন্তু এই খালে ব্রীজ না থাকায় আমরা চরম দুর্ভোগে আমি। এই ড্রামের উপরের তক্তায় উঠতে নামতে খুব কষ্ট হয়। 


আরও পড়ুন: কলাপাড়ায় বিনা চাষে আলু উৎপাদনে লাভবান চাষীরা


লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনসার উদ্দিন মোল্লা বলেন, পরিত্যক্ত হওয়ায় কর্তৃপক্ষ সেতুটি অপসারণ করে নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে এখন কেন হচ্ছে না তা নিয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবো।


কলাপাড়া উপজেলা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী ফয়সাল বারী পূর্ন  বলেন, নতুন সেতু নির্মাণে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা আশ্বাস দিয়েছেন খুব শিগগির কাজ শুরু হবে। নয়তো আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেবো।


জেবি/ আরএইচ/