গরমে পুকুর ডোবায় সময় কাটাচ্ছে গ্রামীণ জনপদের শিশুরা


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:২৫ অপরাহ্ন, ৪ঠা জুন ২০২৩


গরমে পুকুর ডোবায় সময় কাটাচ্ছে গ্রামীণ জনপদের শিশুরা
ছবি: জনবাণী

নেই বৃষ্টির দেখা, প্রচন্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে কলাপাড়ার প্রত্যেকটি গ্রামের জনজীবন। এখানে প্রতিদিন গড়ে ৩৮ ডিগ্রির উপরে তাপমাত্রা বিরাজ করছে। সকাল থেকেই শুরু হয় গরম হাওয়া। বেলা গড়ালে একটু একটু করে বাড়তে থাকে সূর্যের তাপ। জনশূন্য হয়ে পড়েছে গ্রামীণ জনপদ। এই আগুন ঝরা রোদ থেকে বাঁচতে মানুষ ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছে। তাতেও নেই একটু স্বস্তির বাতাস।


এই প্রচন্ড রোদের তেজে বেশিরভাগ মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না। গরমে মানুষ থেকে শুরু করে প্রাণীকুল হাহাকার করছে বৃষ্টির জন্য। গাছের ছায়ার নিচে কিংবা শীতল কোনো স্থানে একটু প্রশান্তির আশায় ছুটছেন সবাই। আবার কেউ কেউ গাছের ছায়ার নিচে বসে হাতপাখা ঘোরাচ্ছে। প্রচণ্ড গরমের তাপে গ্রামীণ জনপদ উত্তপ্ত। ফাঁকা রাস্তা ঘাট বিপর্যস্ত খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। 


তীব্র গরমের কারণে বন্ধ হয়ে পড়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষের কাজ। গরমে ক্লান্তি দূর করতে কেউ ডাবের পানি পান করছেন, কেউ কেউ খাচ্ছেন লেবুর শরবত আর ঠান্ডা পানি। 


দেখা গেছে- প্রচণ্ড গরমের কলাপাড়া  উপজেলার হাট- বাজার গুলোতে বেড়েছে লেবুর শরবত, আনারস, ঠান্ডা পানি ও ডাবের বিক্রি। হাট-বাজারে বিভিন্ন খোলা জায়গায় লেবুর শরবত, ঠান্ডা পানি ও  ডাবের বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে অনেকেই গরমের তীব্রতা  সহ্য করতে না পেরে মাথায় পানি দিচ্ছে, আবার কেউ কেউ পুকুরের পানিতে শরীর ডুবিয়ে রাখছে। শিশুরাও গরম সহ্য করতে না পারে পুকুর এবং নদী-খালের পানিতে লাফ দিয়ে নিচে পড়ছে। 


এছাড়াও গরমের তীব্রতা বেচাকেনা বেড়েছে চার্জার ফ্যান। অনেকেই ছোট শিশু জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন চার্জার ফ্যান। একটু স্বস্তির জন্য। 


আরও পড়ুন: কলাপাড়ায় এবার কোরবানিতে হাট কাঁপাবে কালু চান্দু


গত শুক্রবার- শনিবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গরমের তাপমাত্রা যে এত বেশি বাহিরে হাঁটলেই গরম বাতাস অনুভূত হচ্ছে। এই গরমের পাশাপাশি লোডশেডিংয়ের অতিষ্ঠ জনগণ। প্রতিদিন নিয়মিত ৭-৮ ঘন্টায় লোডশেডিংয়ের ভুগছেন জনগণ। এই গরমে সবচেয়ে কষ্টে রয়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষগুলো। একটুখানি বৃষ্টিপাতের জন্য হাহাকার করছেন মানুষ। বৃষ্টিপাত হলে সূর্যের তাপমাত্রা কমতে পারে বলে জানান পথচারীরা।


মহিপুরের ব্যবসায়ী শাহরিয়ার সুমন জানান, গত কয়েক দিন ধরেই সন্ধ্যার দিকে বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। আসছে প্রায় এক ঘণ্টা পর। এই ঘটনা একবার নয়। সন্ধ্যার পর কয়েকবার আধা ঘণ্টা করেও বিদ্যুৎ চলে গিয়েছে। দীর্ঘদিন এ ধরনের বিদ্যুৎ বিভ্রাট না হওয়ার কারণে ভোগান্তি বেশি হচ্ছে।


কুয়াকাটা ঘুরতে আসা পর্যটক জানান, গত কয়েক দিনে প্রায় প্রতিদিনই দুইবার করে লোডশেডিং হচ্ছে। একটু গরম পড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই সমস্যা শুরু হয়ে গেল। 


তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার থেকেই এই সমস্যা বেশি হচ্ছে। ছুটির দিন শুক্রবারও দিনের বেলায় বেশ কয়েকবার বিদ্যুৎ চলে যায়। তবে প্রতিবার এক ঘণ্টা করে নয়, কখনো কখনো আধা ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ ছিল না।


ডালবুগঞ্জ সংরক্ষিত ইউপি  সদস্য শিরিন আক্তার বলেন, বিদ্যুৎ চলে গেলে অতিরিক্ত গরমের কারণে খুব কষ্ট হয়। আবার বাচ্চাদের লেখাপড়া করাতে কষ্ট হয়, বিদ্যুৎ চলে গেলে তারা আর পড়তে চায়না।


আরও পড়ুন: নড়বড়ে হয়ে গেছে কলাপাড়ার ভাসমান সেই কাঠের সেতু


আবহাওয়া অধিদপ্তরের রবিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।


দিনভর আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে পূর্বাভাসে জানানো হয়, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।


জেবি/ আর্েইচ/