পায়ের নিচে জাতীয় পতাকা!


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


পায়ের নিচে জাতীয় পতাকা!

সিলেটের গোলাপগঞ্জে মঞ্চের নিচদিকে পায়ের নিচে টাঙানো হল জাতীয় পতাকা। ভাষা শহীদদের স্মরণের দিবসে অপমান করা হলো ৩০ লক্ষ শহিদের রক্তভেজা লাল-সবুজের এই মহান পতাকাকে। গোলাপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের রানাপিং বাজারের কালিদাসপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটানো হলো এমন কাণ্ড।

এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ এমনকি বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ। কিন্তু এমন দৃশ্য দেখেও কেউ প্রতিবাদ করেননি বা পতাকা সরিয়ে নিতে বলেননি।

২১ ফেব্রুয়ারী ছিলো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহিদ দিবস- মহান একুশে ফেব্রুয়ারি। দিবসটি পালনের লক্ষ্যে গোলাপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের রানাপিং বাজারের কালিদাসপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নানা কর্মসূচি পালিত হয়। একপর্যায়ে বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার বেদিতে ওঠে ফটোসেশন করেন অনুষ্ঠানের অতিথিরা। এসময় শহীদ মিনার বেদির নিচদিকে- পায়ের নিচে রাখা হয় দেশের জাতীয় পতাকাটি। যেটি স্পষ্টত পতাকার অবমাননা।

ফটোসেশনে ছিলেন- বিয়ানীবাজার উপজেলার ১নং আলীনগর ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আহবাবুর রহমান খান শিশু, কালীদাসপাড়া মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ, আওয়ামী লীগ নেতা অজিউর রহমান ছানা, কালীদাসপাড়া সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা আখতার মিয়া, ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুস টিপু, অলিউর রহমান ও স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা দ্বীপ।

এ ঘটনার একটি ছবি গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সিলেটজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। সচেতন ব্যক্তিদের বক্তব্য- একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যদি এমন কাণ্ড ঘটানো হয় তবে শিক্ষার্থীরা শিখবে কী? এ কাণ্ডে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন সচেতন মহল।

এ বিষয়ে জানতে কালিদাসপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা কামরুন নেহারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এ প্রসঙ্গে গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম কবির বলেন, বিষয়টি জানা ছিলো না। আমি খোঁজ নিচ্ছি।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে জাতীয় পতাকাকে অসম্মান করার বিষয়টি গণমাধ্যমে ওঠে আসার পর মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর একটি চিঠি পাঠায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সেই চিঠিতে এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করা হয়।

চিঠিতে বলা হয়- জাতীয় পতাকা বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও মর্যাদার প্রতীক। এর মর্যাদা সমুন্নত রাখা প্রত্যেক নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য। বাংলাদেশের পতাকা বিধিমালা, ১৯৭২ এ জাতীয় পতাকা সংক্রান্ত বিধিমালা সন্নিবেশিত রয়েছে, যার প্রতিপালন বাধ্যতামূলক।

বাংলাদেশের পতাকা বিধিমালার মধ্যে একটি হচ্ছে- ‘জাতীয় পতাকা নিচু করা যাবে না বা ভূমি স্পর্শ করানো যাবে না; পতাকা কখনোই মেঝেতে, ভূমিতে, পানিতে বা সমতলে স্পর্শ করানো যাবে না।’

এসএ/